বেলায়েত লিটন:
নবীজি (সা.)-এর আদর্শ ছিল মহাগ্রন্থ আল কোরআন। তিনি কোরআনের বৈধকে হালাল আর কোরআনের নিষিদ্ধকে হারাম হিসেবে জানতেন এবং কোরআনে নির্দেশিত আয়াতগুলোর ওপর আমল করতেন। নবীজি (সা.)-এর সাহাবিরাও পবিত্র কোরআনের পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছেন। শেষ নবীর উম্মত হিসেবে মুসলমানরা কোরআনের অনুসারী জাতি। এটা মুমিন-মুসলমানদের ওপর আল্লাহতায়ালার বিশেষ অনুগ্রহ। মহাগ্রন্থ আল কোরআন তাদের সরল, সহজ ও সঠিক পথের নির্দেশ করে। কোরআন তাদের অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে যায়, ফেতনার সময় কোরআনই মুমিনের আশ্রয়স্থল এবং তাদের বিপদে উদ্ধারকারী।
এই ঐশীগ্রন্থ কোরআনে কারিমে রয়েছে পূর্ববর্তীদের ইতিহাস এবং সব ধরনের সিদ্ধান্তের বিধান, সত্য ও মিথ্যার মধ্যে পার্থক্যকারী, আল কোরআন কোনো অহেতুক বিষয় নয়। যে ব্যক্তি অহংকারবশত কোরআন মাজিদকে ছেড়ে দেয়, আল্লাহতায়ালা তার দাম্ভিকতাকে চূর্ণ করে দেন, আর যে ব্যক্তি কোরআনে কারিমকে বাদ দিয়ে সঠিক পথ খুঁজে, আল্লাহ তাকে পথভ্রষ্ট করে দেন। আল কোরআন ছেড়ে দিয়ে যে সম্মান অন্বেষণ করে আল্লাহ তাকে অপদস্থ করেন। আর যে আল কোরআনের দ্বারস্থ না হয়ে সাহায্য ও বিজয় কামনা করে সে আল্লাহতায়ালার রোষানলে পতিত হয়।
কোরআনে কারিম হচ্ছে আল্লাহতায়ালার মজবুত রজ্জু, এটিই হচ্ছে সহজ ও সঠিক পথের দিশারী। আল কোরআনের অনুসারী হলে কেউ বিপথগামী ও পথভ্রষ্ট হবে না। আলেমরা কোরআন থেকে কখনোই তৃপ্ত হন না। অর্থাৎ আল কোরআন যতই তারা কোরআন অধ্যয়ন করেন ততই তাদের কাছে ভালো লাগে। কোরআনের রহস্য ও নিগূঢ় তত্ত্বের কোনো শেষ নেই।
যে আল কোরআনের কথা বলে সে তো সত্যই বলে, আর যিনি আল কোরআন মোতাবেক ফায়সালা করেন তিনি তো ইনসাফ করেন, আর যে আল কোরআন অনুযায়ী আমল করে সে তো সওয়াব ও প্রতিদান লাভ করে, যে আল কোরআনের দিকে আহ্বান করে সে অবশ্যই সরল ও হেদায়েতের পথে আহ্বান করে। যারা আল কোরআন পাঠ করে এবং সেই অনুযায়ী চলে তাদের দায়িত্ব আল্লাহতায়ালা নিয়েছেন যে, তারা দুনিয়াতে পথভ্রষ্ট হবে না এবং পরকালেও বিপদগ্রস্ত হবে না। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর বর্ণনায় এসেছে, তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর কিতাব মহাগ্রন্থ আল কোরআন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে, ইহকাল ও পরকালে সে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ (সহিহ মুসলিম)
হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বিদায় হজের ভাষণে বলেছেন, ‘আমি তোমাদের কাছে এমন জিনিস রেখে যাচ্ছি যা তোমরা আঁকড়ে ধরলে কখনোই পদচ্যুত হবে না, আর তা হচ্ছে আল্লাহর কিতাব মহাগ্রন্থ আল কোরআন।’ (সহিহ মুসলিম) মহাগ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করে আল্লাহ তার বান্দাদের অনুগ্রহ করেছেন। আল্লাহ বলেন, ‘আপনার ওপর যে কিতাব অবতীর্ণ করেছি, তা মুসলিমদের জন্য প্রত্যেক বিষয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা স্বরূপ, পথনির্দেশ, দয়া ও সুসংবাদ স্বরূপ।’ (সুরা নাহল ৮৯) আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হে আহলে কিতাব! তোমাদের কাছে রাসুল এসেছে, যে তোমাদের স্পষ্টভাবে (আল্লাহর হুকুম) বলে দিচ্ছে, যাতে তোমরা বলতে না পারো যে, তোমাদের কাছে কোনো সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী আগমন করেনি। (এখন তো) তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শনকারী এসে গেছে, আর আল্লাহ সব বস্তুর ওপর পূর্ণ ক্ষমতাবান।’ (সুরা মায়েদা ১৯)
আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হে লোক সকল! তোমাদের রবের পক্ষ থেকে তোমাদের কাছে প্রত্যক্ষ প্রমাণ এসেছে এবং তোমাদের প্রতি সমুজ্জ্বল জ্যোতি অবতীর্ণ করেছি। অতঃপর যারা আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং তাকে সুদৃঢ়রূপে ধারণ করেছে, ফলত তিনি তাদের স্বীয় করুণা ও কল্যাণের দিকে প্রবিষ্ট করাবেন এবং স্বীয় সরল পথ প্রদর্শন করবেন।’ (সুরা নিসা ১৭৪-১৭৫) তিনি আরও বলেন, ‘এই কোরআন সর্বশ্রেষ্ঠ পথনির্দেশ করে এবং সৎকর্মপরায়ণ বিশ্বাসীদের সুসংবাদ দেয় যে, তাদের জন্য রয়েছে মহাপুরস্কার। আর যারা পরকাল বিশ্বাস করে না তাদের জন্য আমি প্রস্তুত করে রেখেছি মর্মন্তুদ শাস্তি।’ (সুরা বনি ইসরাইল ৯-১০)
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.