বিশেষ প্রতিবেদক:
মেজর সিনহা হত্যা মামলায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেনকে আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য বাদী শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌসের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বৃহস্পতিবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আবেদনটি খারিজ করে দেন।
এর আগে দুপুর ১২ টার দিকে কক্সবাজারের জেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহর আদালতে আবেদনটি দায়ের করেন মামলার বাদি ও মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। শুনানি শেষে বিচারক আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবলিক প্রসিকিউটর ফরিদুল আলম।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ও রাষ্ট্রের পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, এ মামলার নির্ধারিত র্ধায্য দিন ছিল না বৃহস্পতিবার। এরপরও একটি আবেদন করলে আদালতে তার শুনানী হয়েছে। বাদীর গৃহিত পদক্ষেপ তদন্তাধীন
মামলার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ না হওয়ায় আদালত বাদীর আবেদনটি খারিজ করে দিয়েছেন। এ নিয়ে আদালত বলেছেন, তদন্তাধীন মামলার বিষয়ে কেউ প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপ করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা তদন্তকারি কর্মকর্তার হাতে রয়েছে।
এদিকে দুপুরে বাদীপক্ষের আইনজীবী সিনিয়র এডভোকেট মোহাম্মদ মোস্তফা সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে জানান, 'কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন মেজর সিনহা হত্যা মামলার তদন্ত কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করেই চলেছেন। তিনি সিনহা হত্যা মামলার আসামি বরখাস্তকৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও পরিদর্শক লিয়াকতকে কারাগারে ডিভিশন দেওয়ার জন্য চিঠি দিয়েছেন।আসামিদের বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। অর্থাৎ এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন তার দাপ্তরিক কার্যক্ষমতা আসামিদের পক্ষে কাজে লাগাচ্ছেন। তাই তাকে মেজর সিনহা হত্যা মামলার আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য একটি ফৌজদারি আবেদন করেছি। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে শুনানি শেষে আদেশের অপেক্ষায় রেখেছেন।
দুপুর সোযা ১২ টার দিকে আদালত চত্বরে সাংবাদিকদের সাথে কথা বলেন মামলার বাদী সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস। তিনি বলেন, আমার ভাইকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়েরের পর পুলিশ সুপার এবিএম মাসুদ হোসেন ঘটনাটিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে ভিকটিমের সিনহার বিরুদ্ধে অশ্রদ্ধা, অবমাননাকর ও মানহানিকর প্রতিক্রিয়া করে চলেছেন। আসামিদের মামলার দায় হতে অব্যাহতি প্রদানের জন্য কুপরামর্শ দিয়ে চলেছন।
শারমীন শাহরিয়া ফেরদৌস জানান, এসপি এবিএম মাসুদ হোসেন ঘটনার শুরু থেকেই আসামিদের পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষ ভাবে সহযোগিতা করে যাচ্ছে। ওনি ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন। মেজ সিনহার মানহানি করেছেন। ওই সময় তিনি গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন মেজর সিনহার গাড়িতে তিনি ইয়াবা ও মাদকদ্রব্য পেয়েছিলেন। একজন পুলিশ সুপার হিসেবে তিনি এটি বলতে পারেন না। তিনি তদন্তকাজে প্রতিনিয়ত বাধা সৃষ্টি করে চলেছেন। তিনি আরো বলেন, আদালতের কাছে আমার প্রত্যাশা এসব অভিযোগে প্রেক্ষিতে এসপি মাসুদকে উক্ত মামলায় আসামি হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করব।
গত ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন অবসরপ্রাপ্ত সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান। এরপর ৫ আগস্ট এ ঘটনায় ৯ জনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার আদালতে মামলা করেন সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস। মামলাটি র্যাবকে তদন্তভার দেয়া হয়। ৬ আগস্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন পুলিশের ৭ সদস্য। গত এক মাসে র্যাব এপিবিএন’র ৩ সদস্য, পুলিশের মামলার ৩ সাক্ষীকে আটক করে মোট ১৩ জনকে নানা মেয়াদে রিমান্ডে নিয়েছে। ১২ জন আসামী এ পর্যন্ত আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এরমধ্যেই আজ আদালতে নতুন আবেদনটি করল মামলার বাদী।
ভয়েস/আআ
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.