বশির আলমামুন, চট্টগ্রাম:
চট্টগ্রাম নগরের উন্নয়নে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) গ্রহণ করা ১০টি চলমান মেগা প্রকল্পের আশানুরুপ কোন অগ্রগতি নেই। শুধু খোড়া খুড়ির মধ্যে কেবল সময় পার করছে সিডিএ কতৃপক্ষ। প্রকল্পগুলো তৎকালীন সিডিএ চেয়ারম্যান আবদুস সালামের দায়িত্ব কালিন সময়ে নেয়া হয়েছিল। তৎসময়ে যতটুকু কাজের অগ্রগতি হয়েছিল বর্তমান এই চেয়ারম্যানের সময়ে তেমন কোন কাজের অগ্রগতি চোখে পড়ছেনা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিডিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী জানায় নগরীর পতেঙ্গা থেকে ফৌজদারহাট পর্যন্ত সাগর পাড় দিয়ে সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্পের আওতায় সড়কটির সে সময়ে ও এক তৃতীয়ংশ কাজের অগ্রগতি হয়েছিলো। সে ধারাবাহিকতায় সড়কটি কার্পেটিং করে টোল রোড দিয়ে গাড়ি চলাচলের উপযোগী করা হয়েছে । কিন্তু দীর্ঘ সময় পার হলেও এখনো পর্যন্ত ৮০ শতাংশ কাজ শেষ হয়নি এই প্রকল্পের।
সূত্র জানায় কর্ণফুলী নদীর তীর বরাবর কালুরঘাট সেতু থেকে চাক্তাই খাল পর্যন্ত সড়ক কাম বাঁধ নির্মাণের প্রকল্পটিও বাস্তবায়িত হচ্ছে শম্বুক গতিতে । এই প্রকল্পের মাত্র ১০/ ১২ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে মাত্র।
লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরির প্রকল্প নেওয়া হয় তৎকালীন চেয়ারম্যান এর আমলে। এই প্রকল্পের প্রায় কাজ তাঁর আমলে শেষ পর্যায়ে ছিল। কিন্তু এই প্রকল্পের কাজ ও কচ্ছপ গতিতে এগুচ্ছে।
চট্টগ্রাম শহরের জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুন: খনন, সম্প্রসারণ, সংস্কার ও উন্নয়নের কাজ চলছে মন্থর গতিতে। এই মেগা প্রকল্পের উন্নয়ন কাজ নিয়েও নগরবাসীর মধ্যে হতাশা দেখা দিয়েছে। সিডিএ’র উপর দিন দিন আস্থা হারাচ্ছে মানুষ। তাছাড়া এই সড়কের মাঝখানে ১০ তালা বিল্ডিং এর ক্ষতিপূরণের টাকা প্রদান নিয়ে চউক প্রশাসনে রীতিমতো সাপলুডু খেলা চলছে। এই প্রকল্পের কাজ কবে নাগাদ শেষ করতে পারবে তার ও কোন নিশ্চয়তা নেই।
অপরদিকে নগরীর নাসিরাবাদে একটি সিডিএ স্কয়ার ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। লটারির ভিত্তিতে এখানে ফ্ল্যাট দেওয়া হবে। এখনো পর্যন্ত এই প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ২৭ শতাংশ। আর ভৌত অগ্রগতি ৪৫ শতাংশ। এছাড়াও দেওয়ান হাট পোস্তার পাড় এলাকায় একটি ১০ তলা বিশিষ্ট ফ্ল্যাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি ৮৩ শতাংশ। আর ভৌত অগ্রগতি ৮৪ শতাংশ।
সিডিএ চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ বলেন বর্তমানে অনন্যা উপশহর এলাকা তৈরি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। সেটা আমাদেরকেই বাস্তবায়ন করতে হবে। আমরা ব্যাংকের সঙ্গে কথা বলব। যদি টাকা পাওয়া যায়, জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ভূমি অধিগ্রহণ করবো। এখন জায়গা অধিগ্রহণ করার জন্য যৌথ জরিপ চলছে।
সুত্র জানায় চউকের প্রকৌশল বিভাগের যে কয়জন প্রকৌশলী রয়েছে তাদের মধ্যে প্রায় সবাই দুদকের মামলাভুক্ত আসামী। তাদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা বিচারাধীন। আবার পদোন্নতি হলে ও তার বাস্তবায়ন নেই। খোড়া প্রশাসন নিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে সিডিএ।
সম্প্রপ্রতি সচিব তাহেরা ফেরদৌস বদলী হওয়ার পর বিচার বিভাগে জনৈক বিচারককে ভারপ্রাপ্ত সচিব হিসাবে দায়িত্ব দেয়া হয়। তাঁকে সলিমপুর আবাসিক থেকে প্লট দেওয়ার বিষয় নিয়ে ঘটেছে চউকে তুগলোগি কান্ড। এই ঘটনায় স্থানীয় একটি পত্রিকায় সংবাদ ও ছাপা হয়।
অন্যদিকে অথরাইজড বিভাগ দুটিতে চলছে লুঠপাটের মহোৎসব। অযোগ্য ও অদক্ষ লোক দিয়ে চলছে এই দুই বিভাগ। বিধি অনুযায়ী নিবাহী প্রকৌশলী অথবা সরাসরি নিয়োগকৃত সহকারী অথরাইজড অফিসারগন এই পদে পদায়ন হওয়ার যোগ্য। কিন্তু চউক প্রশাসন তা না করে দুইজন সহকারী প্রকৌশলীকে দিয়ে চালাচ্ছে সে দায়িত্ব।
এসব মেগা প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি জানাতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান এম জহিরুল আলম দোভাষ। শনিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সিডিএ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের কাছে সংস্থাটির চলমান প্রকল্পগুলোর অগ্রগতি নিয়ে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন। প্রকল্পগুলো তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুস সালামের নেয়া প্রকল্প।
বর্তমান চেয়ারম্যান বলেন রাতের বেলায় আমরা হরেক রকমের স্বপ্ন দেখি। কিন্তু দিনের বেলায় তা বাস্তবায়ন করতে পারিনা। জনগনকেও অনেক স্বপ্ন দেখাই কিন্তু বাস্তবে সবই অলীক। তবে অনেকের মতে এই মূলাঝোলা প্রকল্প কবে নাগাদ শুর করতে পারবে তার কোন গ্যারান্টি নেই।
ভয়েস/জেইউ।
উপদেষ্টা সম্পাদক : আবু তাহের
প্রকাশক ও প্রধান সম্পাদক : আবদুল আজিজ
সম্পাদক: বিশ্বজিত সেন
অফিস: কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবন (৩য় তলা), শহীদ সরণি (সার্কিট হাউজ রোড), কক্সবাজার।
ফোন: ০১৮১৮-৭৬৬৮৫৫, ০১৫৫৮-৫৭৮৫২৩ ইমেইল : news.coxsbazarvoice@gmail.com
Copyright © 2025 Coxsbazar Voice. All rights reserved.