সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
মাওলানা আবদুল জাব্বার:
সাহাবি হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, মানুষ সকালে ঘুম থেকে উঠলে সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ জিহ্বাকে অনুনয় বিনয় করে বলে, তুমি আমাদের ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। তুমি যদি সঠিক পথে থাকো আমরাও সঠিক পথে থাকতে পারি। আর তুমি যদি বাঁকা পথে চলো- তাহলে আমরাও বাঁকা পথে যেতে বাধ্য।’ জামে তিরমিজি
জিহ্বা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার শাস্তি প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- একবার হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) আল্লাহর রাসুলকে প্রশ্ন করলেন, হে আল্লাহর রাসুল! আমরা যা কিছু বলি তা নিয়ে কি আমাদের পাকড়াও করা হবে। তখন আল্লাহর রাসুল বলেন, ‘হে মুয়াজ! জবান হেফাজত না করার কারণে মানুষকে উপুড় করে জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।’ -জামে তিরমিজি
হজরত উমর (রা.) বলেন, হজরত রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি জিহ্বাকে নিয়ন্ত্রণ রাখেন আল্লাহতায়ালা তার দোষ ঢেকে দেন। ইসলামের নির্দেশনা হলো- জবানের হেফাজতে অপ্রয়োজনীয় ও অনর্থক কথা বর্জন করতে হবে। সেই সঙ্গে কাউকে গালি দেওয়া যাবে না, অশ্লীল কথাবার্তা বলা যাবে না, মিথ্যা কথা ত্যাগ করতে হবে, কখনো মিথ্যা সাক্ষ্য দেওয়া যাবে না, কাউকে কোনো কথা বিশ্বাস করানোর জন্য অথবা নিজের কথার গুরুত্ব বুঝানোর জন্য মিথ্যা কসম করা যাবে না, গিবত না করা, চোগলখুরি না করা, অন্যের দোষ চর্চা না করা, অন্যকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য ও মন্দ নামে না ডাকা।
আমাদের সমাজে প্রায়ই দেখা যায়, হাসি-তামাশার ছলে অথবা ইচ্ছা করে কাউকে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য কিংবা মন্দ নামে ডাকা হয়। কিন্তু অত্যন্ত গর্হিত কাজ। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘হে মুমিনরা! কোনো পুরুষ যেন অপর কোনো পুরুষকে উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হচ্ছে, সে উপহাসকারী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। কোনো নারী অপর কোনো নারীকে যেন উপহাস না করে। কেননা যাকে উপহাস করা হয়, সে উপহাসকারিণী অপেক্ষা উত্তম হতে পারে। তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না এবং একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ইমানের পর মন্দ নাম অতি মন্দ। যারা এসব থেকে বিরত না হবে তারা জালেম (অত্যাচারী)।’ -সুরা হুজুরাত : ১১
মাওলানা তাকী উসমানি তাফসিরে তাওযিহুল কোরআনে উল্লেখ করেন, কাউকে খারাপ নাম দিয়ে দিলে তা তার জন্য পীড়াদায়ক হয়। কাউকে অপমান করা বা তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করা মুমিনের স্বভাব হতে পারে না। হজরত রাসুলে কারিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা পরস্পর ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই। একে অপরের প্রতি জুলুম করো না এবং তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করো না।’ -সহিহ মুসলিম
ভয়েস/আআ