রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বন্যার্তদের পাশে দাঁড়ানোর সওয়াব

ধর্ম ডেস্ক:
অতি বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রামের বহু এলাকা প্লাবিত হয়ে আছে। লাখ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। অনেক জায়গায় পানিবাহিত রোগব্যাধি ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। পরিস্থিতি এতটাই বিপদসংকুল যে, চোখে না দেখলে মানুষের দুর্বিষহ অবস্থা বোঝা মুশকিল হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এ ধরনের পরিস্থিতিতে মুসলিম হিসেবে আমাদের ওপর অনেক দায়িত্ব বর্তায়। কোনো পরিবারে কেউ অসুস্থ বা উপার্জনহীন হয়ে পড়লে যেমন অন্যদের ওপর সেবা-শুশ্রুষা ও দুস্থের প্রয়োজন পূরণের দায়িত্ব বর্তায় তেমনি গোটা মানবজাতি, বিশেষত গোটা মুসলিমসমাজ এক পরিবারের মতো। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয়ই মুমিনরা একে অন্যের ভাই।’ সুরা হুজরাত : ১০

বন্যার্ত বিপদগ্রস্তরাও আমাদেরই ভাই। তাদের কথা ভাবলে কষ্টে বুক ফেটে যায়। তাই আমরা যারা সামর্থ্যবান আছি, আমাদের জন্য একান্ত কর্তব্য হলো বন্যার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। মহান আল্লাহ বলেন, ‘হে ইমানদাররা, যে অর্থ তোমরা উপার্জন করেছ এবং যা কিছু আমি জমিন থেকে তোমাদের জন্য বের করে দিয়েছি, তা থেকে উৎকৃষ্ট অংশ আল্লাহর পথে ব্যয় করো। তার পথে ব্যয় করার জন্য তোমরা সবচেয়ে খারাপ জিনিস বাছাই করার চেষ্টা করো না…।’ সুরা বাকারা : ২৬৭

সমাজের বন্যাকবলিত বা দুঃখ-দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের নানাবিধ সাহায্য-সহযোগিতায় এগিয়ে আসা শুধু সামাজিক দায়িত্বই নয়, এটা একজন মুসলিমের ধর্মীয় দায়িত্বও বটে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর তাদের ধন-সম্পদে আছে অভাবগ্রস্ত ও বঞ্চিতদের অধিকার।’ সুরা জারিয়াত : ১৯

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তির অতিরিক্ত বাহনজন্তু বা বাহনের খালি জায়গা আছে, সে যেন বাহনহীন ব্যক্তিকে তা দিয়ে সাহায্য করে। কোনো ব্যক্তির যদি অতিরিক্ত পাথেয় থাকে, সে যেন পাথেয়হীন ব্যক্তিকে তা দিয়ে সাহায্য করে। বর্ণনাকারী বলেন, নবীজি এভাবে আরও বহু সম্পদের কথা বলেছেন, তাতে আমাদের মনে হতে লাগল যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদে আমাদের কোনো অধিকার নেই।’ সহিহ মুসলিম : ৪৪০৯

এটিই ফিতরাত, এটিই ইসলামের শিক্ষা। ইসলাম বলে সর্বাবস্থায়, দুঃখী মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা, বিপদগ্রস্ত লোকদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। সেই প্রকৃত মানুষ, যে অন্য মানুষের দুঃখে দুঃখী হয়। বিপদগ্রস্তের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে আসে।

তাই দুঃখী-দরদি মানুষের সেবায় সহযোগিতায় এগিয়ে আসা মানুষের ফিতরাত তথা স্বভাবজাত বিষয়। ইসলাম যেহেতু ‘দ্বীনে ফিতরত’ তথা স্বভাবজাত ধর্ম, তাই মানবতার সর্বোচ্চ শিক্ষা রয়েছে ইসলামে। ইসলামের নবী হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ছিলেন মানবতার মুক্তির দূত ও রহমাতুল লিল আলামিন। তিনি নিজে যেমন পরোপকারে সর্বাগ্রে থাকতেন, তেমনি মুসলমানদের জন্য রেখে গেছেন কল্যাণকামিতা ও সহমর্মিতায় উদ্বুদ্ধকারী অনেক অমীয় বাণী। যেমন এক হাদিসে তিনি ইরশাদ করেছেন ‘দয়া, মায়া ও হৃদ্যতায় মুমিনদের দেখবে এক দেহের মতো। কোনো এক অঙ্গ আক্রান্ত হলে তার সারা শরীর নির্ঘুম ও জ¦রাক্রান্ত হয়ে পড়ে।’ সহিহ বোখারি : ৬০১১

বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধ্যানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি আমাদের আল্লাহর দিকে রুজু হওয়াও জরুরি। গোনাহ ও পাপাচার থেকে তওবা করে আল্লাহতায়ালার কাছে বিনীত সমর্পিত হওয়া ইমানের দাবি। অন্যের দুঃখ-কষ্ট থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া, নিজের ও পরিবার-পরিজনের জন্য আল্লাহতায়ালার অনুগ্রহ প্রার্থনা করাও আমাদের আশু কর্তব্য।

কতভাবেই তো মানুষের জীবনে বিপদ আসতে থাকে। যেকোনো বিপদই কষ্টের। কাজেই আসুন আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাই, নিরাপত্তা প্রার্থনা করি আর সাধ্যানুযায়ী বিপদগ্রস্ত ভাইবোনের পাশে দাঁড়াই।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION