রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৫ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে মানুষকে বৃষ্টি-বর্ষার দিনেও রাস্তায় বের হতে হয়। বৃষ্টির দিন যেহেতু রাস্তাঘাটে চলাচলে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়, তাই বৃষ্টির দিন রাস্তায় চলাচলে মুমিনের দায়িত্ব বেড়ে যায়। নিম্নে তার কয়েকটি তুলে ধরা হলো
রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু সরানো : বৃষ্টির দিন রাস্তার পাশের পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে গেলে মুমিনের দায়িত্ব সওয়াবের আশায় তা সরিয়ে ফেলার চেষ্টা করা। যদি তা সম্ভব না হয়, তবে সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে জনদুর্ভোগ কমানোর চেষ্টা করা।
সাহাবি হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ইমানের সত্তরটির অধিক শাখা রয়েছে। অথবা ষাটটিরও অধিক। এর সর্বোচ্চ শাখা হচ্ছে এ সাক্ষ্য প্রদান করা যে আল্লাহ ছাড়া কোনো প্রকৃত ইলাহ নেই। আর এর সর্বনিম্ন শাখা হচ্ছে, রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু অপসারণ করা। আর লজ্জা ইমানের একটি অন্যতম শাখা। সহিহ মুসলিম : ৫৯
অনেক সময় ঝড়-বৃষ্টির কারণে রাস্তার গাছ বা গাছের ডাল পড়ে রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। কেউ যদি সওয়াবের আশায় সেই বস্তু সরিয়ে দেয়, তাহলে সে অফুরন্ত সওয়াব অর্জন করতে পারে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, এক ব্যক্তি রাস্তা দিয়ে চলার সময় রাস্তায় একটি কাঁটাযুক্ত ডাল দেখতে পেয়ে তা সরিয়ে ফেলল। আল্লাহতায়ালা তার এ কাজ সাদরে কবুল করে তার গোনাহ মাফ করে দিলেন। সহিহ বোখারি : ২৪৭২
রাস্তায় গর্ত ইত্যাদি থাকলে চিহ্ন দেওয়া : অনেক সময় ফুটপাতে ড্রেনের ঢাকনা চুরি হয়ে যায়, অথবা রাস্তায় বড় গর্ত থাকে, যা বৃষ্টির পানির কারণে দেখা যায় না। তখন মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে সেখানে চিহ্ন দিয়ে দেওয়া মুমিনের দায়িত্ব। হাদিস শরিফে এসেছে, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি এক ব্যক্তিকে দেখলাম জান্নাতে একটি গাছের নিচে স্বাচ্ছন্দ্যে হাঁটছে। সে এমন একটি গাছ রাস্তার মধ্য থেকে কেটে ফেলে দিয়েছিল, যা মানুষকে কষ্ট দিত।’ মিশকাত শরিফ : ১৯০৫
রাস্তার পাশে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া না দেওয়া : অনেক সময় অনেককে দেখা যায়, রাস্তার পাশে প্রাকৃতিক ডাকে সাড়া দিতে, যা শিষ্টাচারবহির্ভূত। এই কাজে কখনই জায়েজ নয়। বিশেষ করে বৃষ্টির দিন যদি এমন করা হয়, তাহলে বহু মানুষ তার কারণে নাপাক হয়ে যেতে পারে। মানুষের আমল নষ্ট হতে পারে। যার কুফল অপবিত্রকারী ভোগ করতে হবে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তোমরা দুটি অভিশপ্ত কাজ থেকে দূরে থাকবে। সাহাবিরা জিজ্ঞাসা করলেন, অভিশপ্ত কাজ দুটি কী? হে আল্লাহর রাসুল, তিনি বলেন, মানুষের যাতায়াতের পথে বা ছায়াবিশিষ্ট (যেখানে তারা বিশ্রাম নেয়) জায়গায় প্রস্রাব করা। সুনানে আবু দাউদ : ২৫
বিপদগ্রস্ত ব্যক্তিকে সহযোগিতা করা : যদিও তা বৃষ্টি ছাড়াও অন্য সময়ের জন্য হতে পারে; কিন্তু বৃষ্টির সময় এটি আরও বেশি আবশ্যক। অন্ধ ও পথহারা ব্যক্তিকে পথ এগিয়ে দেওয়া, নির্যাতিত ব্যক্তিকে সাহায্য করা এবং কারও বোঝা উঠিয়ে দেওয়া ফজিলত ও সওয়ারের কাজ। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) বর্ণিত হাদিসে রয়েছে এবং তোমরা নির্যাতিত ব্যক্তিকে সাহায্য করবে এবং পথ-সন্ধানীকে পথের সন্ধান দেবে। সুনানে আবু দাউদ : ৪৮১৭
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে বাহনে ওঠানো বা তার মালপত্র তুলে দেওয়াও সদকা।’ সহিহ বোখারি : ২৯৮৯
ভয়েস/আআ