রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৮ অপরাহ্ন
এইচ এম মনিরুজ্জামান:
সন্তান দয়াময় আল্লাহ প্রদত্ত অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেয়ামত। প্রত্যেক মানুষই চায় পৃথিবীতে যোগ্য, সৎ ও ধর্মভীরু সন্তান রেখে যেতে। যারা তাদের ইন্তেকালের পর মহান আল্লাহর দরবারে মাগফিরাতের জন্য দোয়া করবে। তবে এ কথা ঠিক সন্তানকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে না পারলে মা-বাবার সেই স্বপ্ন সফল হয় না। তাই সন্তানের সাফল্যের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাবা-মায়ের সাফল্য। সন্তানের সাফল্যে বাবা-মা আনন্দিত হন। তবে সাফল্য এমনি এমনি আসে না। এজন্য বাবা-মায়ের রয়েছে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা। সমাজবিজ্ঞানীরা মনে করেন, সন্তানের সাফল্যের জন্য মা-বাবার এ কাজগুলো অবশ্যই করা দরকার সেগুলো হলো
ধর্মীয় ও মূল্যবোধের শিক্ষা : টাকাপয়সা, নাম, যশ, খ্যাতিকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আমরা জীবনের সফলতা ভাবি। এগুলো জীবনের সফলতা ঠিক, কিন্তু জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা হচ্ছে ভালো মানুষ হয়ে ওঠা। একজন মুসলিম বাবা-মায়ের বড় সাফল্য সন্তানকে ধর্মীয় ও নৈতিক জ্ঞান শিক্ষা দিয়ে সত্যিকারের মুমিন হিসেবে গড়ে তোলা। কুসংস্কারমুক্ত উদার ধর্মীয় জ্ঞান শিক্ষা দিয়ে দুনিয়ার জন্য দক্ষ, যোগ্য ও সৎ এবং আখিরাতে মুক্তির পথ দেখানোর দায়িত্ব বাবা-মায়ের। ভুলে গেলে চলবে না, পরিবারই একটি শিশুর সবচেয়ে বড় শিক্ষক। সন্তানের সাফল্যের জন্য এ কাজগুলো অবশ্যই করুন।
সন্তানের আদর্শ হওয়া : জীবনে যারা সফল হয়েছে, তারা কোনো না কোনো সময় কারও না কারও দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সেসব মানুষই আমাদের কাছে আদর্শ। সন্তানের জন্য সবচেয়ে বড় আদর্শ তার বাবা-মা। সন্তানের সামনে নিজেদের আদর্শ হিসেবে তৈরি করে উপস্থাপন করতে হবে।
সন্তানের সঙ্গে সুসম্পর্ক : সন্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখুন। তাদের সঙ্গে মন খুলে মেলামেশা করুন। সন্তানের সুষ্ঠু-সুন্দর বিকাশের জন্য মা-বাবার সঙ্গে বন্ধনটা থাকতে হবে মজবুত। বলতেই হয়, সন্তানের জন্য তার মা-বাবার সাপোর্টটাই সবচেয়ে বড় বিষয়। সন্তানকে তার নিজের ইচ্ছায় চলতে দিন, কিন্তু নজরে রাখুন যেন বিপথগামী না হয়। কখনই নিজের মতো চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করবেন না।
সামাজিকতা শিক্ষা : সন্তানকে ছোট থেকেই সামাজিক হওয়ার সুযোগ করে দিতে হবে। তার সমবয়সী বাচ্চার সঙ্গে খেলতে দেওয়া, কোনো সমস্যা হলে মা-বাবা সাহায্য না করে, তার বন্ধুদের নিয়ে তার সমস্যা সমাধানের জন্য উৎসাহ দেওয়া। তবে সন্তান কার সঙ্গে মেলামেশা করছে, সে অসামাজিক হয়ে উঠছে কি না, তা নজরে রাখতে হবে।
বাড়ির ছোট ছোট কাজ করতে দেওয়া : সন্তানকে পাঁচ বছরের পর থেকেই বাড়ির ছোট ছোট দায়িত্ব দিতে হবে। এর মাধ্যমে তার দায়িত্ববোধ গড়ে উঠবে। এ দায়িত্ববোধের জ্ঞান তাকে জীবনের নানা ক্ষেত্রে সফল হতে সাহায্য করবে। খেলনা গুছিয়ে রাখা, পড়ার টেবিল পরিষ্কার রাখা, জুতার ফিতা বাঁধতে শেখা, এসব ছোট ছোট কাজ সন্তানকে একাই করতে দিন।
কম মানসিক চাপ : কোনো কিছুই যেন সন্তানের মানসিক চাপের কারণ না হয়। পড়াশোনা নিয়ে কখনই সন্তানকে চাপ দেবেন না। আপনাদের মধ্যে দাম্পত্য কলহ থাকলে তার প্রভাব যেন কোনোভাবেই সন্তানের ওপর না পড়ে। সন্তানকে ভারমুক্ত রাখুন, সব সময়ই তার সঙ্গে ইতিবাচক কথা বলুন।
সাফল্যের জন্য সাধনা এবং বড় হওয়ার সুপ্ত ইচ্ছা জাগ্রত করা : জীবনে সফল হতে হলে লক্ষ্য থাকতে হয়, সেই সঙ্গে থাকতে হয় সাধনা বড় হওয়ার সুপ্ত ইচ্ছা জাগ্রত করা। সন্তানকে তার লক্ষ্য স্থির করতে সাহায্য করুন। কিন্তু কখনই নিজের ইচ্ছা তার ওপর চাপিয়ে দেবেন না। ছোট থেকেই লক্ষ্য স্থির করে সাফল্যকে ছোঁয়ার চেষ্টা করতে হবে।
পুষ্টিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা : সন্তানের সুন্দর জীবন ও সাফল্য এর জন্য ছোট থেকেই তার শরীর ও মস্তিষ্কের বিকাশের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানকে সুষম খাবার দিন।
ভয়েস/আআ