রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

পাঁচদিনের দুর্গোৎসব আজ শুরু

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

ষষ্ঠী পূজার মধ্যদিয়ে আজ শুরু হয়েছে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। আগামি ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমিতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপি এ উৎসবের।

দুর্গা শব্দের অর্থ হলো ব্যূহ। বাধাবিঘ্ন, ভয়, দুঃখ, শোক, জ্বালা, যন্ত্রণা এসব থেকে তিনি ভক্তকে রক্ষা করেন। শাস্ত্রকাররা বলছেন, দুঃখের দ্বারা যাকে লাভ করা যায় তিনিই দুর্গা। দেবী দুঃখ দিয়ে মানুষের সহ্যক্ষমতা পরীক্ষা করেন। তাকে ডাকলেই তিনি তার কষ্ট দূর করেন।

বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে, দেবী দুর্গা এবার ঘোড়ায় চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে আসবেন। এতে প্রাকৃতিক বিপর্যয়, রোগ শোক হানাহানি মারামারি বাড়বে। অন্যদিকে তিনি বিদায়ও নেবেন ঘোড়ায় চড়ে। যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানির মত ঘটনা বাড়বে।

পাঁচ দিনব্যাপী শারদীয় দুর্গাপূর্জা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশের হিন্দু ধর্মাবলম্বী সকল নাগরিককে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।

এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, শারদীয় দুর্গোৎসব সত্য-সুন্দরের আলোকে ভাস্বর হয়ে উঠুক; ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার মধ্যে সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যর বন্ধন আরো সুসংহত হোক- এ কামনা করি।

এ উপলক্ষে দেওয়া বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আবহমান কাল ধরে বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’- এ মন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশে আমরা সব ধর্মীয় উৎসব একসঙ্গে পালন করি। আমাদের সংবিধানে সকল ধর্ম ও বর্ণের মানুষের সমান অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। সকলে মিলে মুক্তিযুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি। এই দেশ আমাদের সকলের। বাংলাদেশ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের নিরাপদ আবাসভূমি। যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করছে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জাতি-ধর্ম-বর্ণ-গোষ্ঠী নির্বিশেষে সবার উন্নয়ন করে যাচ্ছে। সব ধর্মের মানুষ সমভাবে উন্নয়নের সুফল উপভোগ করছে।

পূজাকে আনন্দমুখর করে তুলতে দেশজুড়ে বর্ণাঢ্য প্রস্তুতি ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে। সারাদেশে এখন বইছে উৎসবের আমেজ। ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের আওয়াজে মুখরিত হয়ে উঠেছে বিভিন্ন মণ্ডপ। ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশনে আজ (শুক্রবার) সকাল ৬টা ১০ মিনিটে কল্পারম্ভ এবং বোধন আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন শুরু হয়েছে। ষষ্ঠী পূজায় এদিন সকাল থেকে চণ্ডিপাঠে মুখরিত সকল মণ্ডপ এলাকা।

উৎসবের দ্বিতীয় দিন আগামিকাল শনিবার মহাসপ্তমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে। রোববার মহাঅষ্টমীর পূজা অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৬টা ১০ মিনিটে এবং বেলা ১১টায় অনুষ্ঠিত হবে কুমারী পূজা। সন্ধিপূজা শুরু হবে রাত ৮ টা ৬ মিনিটে। সোমবার সকাল ৬টা ১০ মিনিটে শুরু হবে নবমী পূজা। পরদিন মঙ্গলবার দশমী পুজা শুরু সকাল ৬টা ৩০মিনিট। পূজা সমাপন ও দর্পণ বিসর্জন হবে সকাল ৯টা ৪৯ মিনিটের মধ্যে। সন্ধ্যায় আরাত্রিকের পর প্রতিমা বিসর্জন ও শান্তিজল গ্রহণের মধ্যদিয়ে শেষ হবে পাঁচদিনব্যাপি এ উৎসবের।

রাজধানীতে মহানগর সার্বজনীন পূজা কমিটির নেতৃত্বে দশমীর দিন বিকালে পলাশীর মোড় থেকে প্রতিবছরের ন্যায় বিজয়া শোভাযাত্রা শ্রীশ্রী ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির হয়ে পলাশী বাজার, জগন্নাথ হল, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, দোয়েল চত্বর, হাইকোর্ট, বঙ্গবাজার, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন ভবন, গোলাপ শাহ্ মাজার, গুলিস্থান মোড়, নবাবপুর রোড, রায় সাহেব বাজার, বাহাদুর শাহ্ পার্ক হয়ে বুড়িগঙ্গার ওয়াইজ ঘাটে বিভিন্ন পূজা মণ্ডপের প্রতিমা বিসর্জন শেষ হবে।

বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক চন্দ্রনাথ পোদ্দার জানিয়েছেন, এবার সারা দেশে ৩২ হাজার ৪শ ৮ টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আর রাজধানী ঢাকাতে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হচ্ছে ২৪৬টি মন্ডপে। গতবছর সারা দেশে ৩২ হাজার ১শ ৬৮টি মন্দিরে এবং রাজধানীতে ২৪১টি মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশের প্রতিটি পূজামন্ডপের নিরাপত্তা রক্ষায় পুলিশ, আনসার, বিজিবি, র‌্যাবসহ অন্যান্য আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজধানীতে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির মণ্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতা, স্বেচ্ছা রক্তদান ও বিজয়া শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়াও ঢাকায় রামকৃষ্ণ মিশন ও মঠ পূজামন্ডপ, গুলশান বনানী সার্বজনীন পূজা পরিষদ মণ্ডপ’ রমনা কালীমন্দির ও আনন্দময়ী আশ্রম, বরোদেশ্বরী কালীমাতা মন্দির ও শ্মশান, সিদ্ধেশ্বরী কালিমাতা, ভোলানাথ মন্দির আশ্রম, জগন্নাথ হল, ঋষিপাড়া গৌতম মন্দির, শাখারী বাজারের পানিটোলা মন্দিরসহ অন্যান্য মণ্ডপে এখন দুর্গোৎসবের তরঙ্গ বইছে।

ভযেস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION