শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০৬ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মৃত প্রাণীর গোশত হারাম হওয়ার কারণ

মুফতি শরিফুল আজম:
ক্ষুধা নিবারণের জন্য শাক-সবজি, ফলমূল এবং বিভিন্ন ধরনের পশু-পাখির গোশত ভক্ষণ করে থাকি। কিন্তু আমরা কীভাবে জানব যে, কোন ধরনের খাদ্য শরীরের জন্য উপযোগী এবং কোন ধরনের খাদ্য শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। একজন সাধারণ মানুষের পক্ষে গবেষণা করে বের করা সম্ভব নয় যে, কোন ধরনের খাদ্য গ্রহণ করা উচিত। কোরআন-সুন্নাহর সুস্পষ্ট বর্ণনার মাধ্যমে সে কাজটি সহজ করে দিয়েছে। আল্লাহতায়ালা যতগুলো বস্তু হারাম করেছেন, প্রত্যেকটি বস্তুতে ক্ষতিকারক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। যা গ্রহণে শারীরিক ও মানসিক জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। অর্থাৎ হালাল ও হারামকৃত প্রতিটি বস্তুর পেছনে দুনিয়ার কল্যাণ নিহিত। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনি আল্লাহ তো কেবল তোমাদের ওপর হারাম করেছেন মৃত জন্তু, রক্ত, শূকরের গোশ্ত এবং যার ওপর আল্লাহর নাম ছাড়া অন্যের নাম উচ্চারিত হয়েছে, কিন্তু যে নিরুপায় অথচ নাফরমান এবং সীমালঙ্ঘনকারী নয় তার কোনো পাপ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’-সুরা বাকারা : ১৭৩

এখানে তিনটি হারামের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে- ১. মৃত জন্তু, ২. রক্ত এবং ৩. শূকরের গোশত। এখানে আমরা দেখব মৃত জন্তুর মধ্যে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিতে কী কী ক্ষতি রয়েছে।

কোনো কারণে পশু মারা গেলে আর তা থেকে রক্ত বের না হলে সে পশুর দেহের রক্ত দ্রুত নষ্ট হয়ে যায় বা জমাট বেঁধে যায়। দেহের সক্রিয়তা বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে দূষিত পদার্থ এসে রক্তে মিশ্রিত হতে থাকে। দূষিত পদার্থ যেমন- কার্বন ডাই অক্সাইড, ল্যাকটিক এসিডসহ অন্যান্য বস্তু। জীবিত অবস্থায় এগুলো কিডনি ও ফুসফুসের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত হয়। রক্তে ক্ষারের মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থা থেকে পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং রক্ত জমাট বেঁধে যায়। ফলে মৃতদেহ থেকে দূষিত রক্ত বের হয় না।

গবেষণায় দেখা গেছে পশু যে কারণে মারা যায় পশুর মৃত্যুর পরও তার কারণ ওই পশুর শরীরে বর্তমান থাকে। যেমন-

বিষক্রিয়ায় মৃত্যু : যখন একটি পশু সাপের কামড়ে, কুকুরের কামড়ে, বিষাক্ত ফল খেয়ে বা রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় মৃত্যুবরণ করে তখন ওই পশুর শরীরে সেই বিষের প্রভাব ছড়িয়ে পড়ে।

রোগ-বালাই : পশুরা বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। যেমন- জলাতঙ্ক, ফাংগাল ইনফেকশন ও ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ ইত্যাদি। কোনো পশু যখন একটি রোগে মারা যায়, তখন ওই রোগ পশুর শরীরে ছেয়ে যায়।

সীসার গুলি : গবেষকরা জানিয়েছেন, যখন সীসার বুলেট দ্বারা একটি পশু হত্যা করা হয় এবং গোশত ভক্ষণ করা হয় তখন মানুষের শরীরে সীসার প্রভাব চলে আসে। সীসা হলো- একটি বিষাক্ত ধাতু যা খাদ্য হিসেবে গ্রহণ করলে মস্তিষ্কের বিকাশ ব্যাহত হয় এবং কিডনি নষ্ট হয়ে যায়।

ব্যাকটেরিয়া : লিস্টেরিওসিস হলো একটি খাদ্যবাহিত ব্যাকটেরিয়া যা মৃত পশুর শরীরে তৈরি হয়। যখন একটি প্রাণী মৃত পাওয়া যায়, তখন কেউ নিশ্চিত হতে পারে না যে পশুর শরীরের টিস্যু কতক্ষণ ধরে ক্ষয় হচ্ছে। এটি প্রধানত ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতিতে হয়, যা গোশতকে মানুষের খাওয়ার জন্য অনুপযোগী করে তোলে।

পরজীবী : মৃত পশুর গোশত অনেক সময় পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে যেমন- কৃমি। এই ধরনের গোশত দূষিত হয়। পরজীবীগুলো বিশেষভাবে অল্পরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য যেমন খুব অল্পবয়স্ক ও বয়স্ক ব্যক্তিদের জন্য ক্ষতিকারক। কারণ এটি লিভারকে প্রভাবিত করতে পারে এবং গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে। এমন বিভিন্ন কারণে পশু মারা যাতে পারে এবং মৃত পশুর শরীরে উপরোক্ত সমস্যা থাকতে পারে। তাই একজন মানুষ মৃত পশুর গোশত ভক্ষণ করলে বিভিন্ন ধরনের রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION