শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মসজিদের চাকচিক্য নয় দরকার আবাদ

ধর্ম ডেস্ক:

ক. বাহ্যিক আবাদ তথা নির্মাণ করা। প্রতিটি গ্রামে বা মহল্লায় একটি মসজিদ থাকা আবশ্যক। যেন গ্রামের পুরুষরা একসঙ্গে জামাতের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে পারে। গ্রামে মসজিদ না থাকলে সম্মিলিত উদ্যোগে মসজিদ নির্মাণ করা যেতে পারে।

খ. নামাজ-জিকির, তাসবিহ-তাহলিল, কোরআন তেলাওয়াত এবং অন্যান্য ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে মসজিদ আবাদ রাখা। মসজিদের আয়ত্তাধীন প্রতিটি মুসলিম পরিবারের সদস্যদের কর্তব্য মসজিদ আবাদ রাখার সর্বাত্মক চেষ্টা করা।

আল্লাহর মেহমান : মসজিদে গমনকারী আল্লাহর মেহমান হিসেবে গণ্য হয়। মহান আল্লাহ প্রতি ওয়াক্তে মসজিদে আসা মুসল্লিদের জন্য জান্নাতে মেহমানদারির ব্যবস্থা করেন। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি সকাল-বিকেল মসজিদে গমনাগমন করবে, প্রত্যেকবার যাতায়াতের বিনিময়ে আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে মেহমানদারির ব্যবস্থা করবেন।’ (সহিহ বোখারি : ৬৬২)

আল্লাহর প্রতিবেশী : নিয়মিত মসজিদে যাওয়া-আসার ফলে আল্লাহ তাদের প্রতিবেশী অভিধায় ভূষিত করবেন। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘কেয়ামতের দিন আল্লাহতায়ালা বান্দাদের ডেকে ডেকে বলবেন, আমার প্রতিবেশীরা কোথায়? আমার প্রতিবেশীরা কোথায়? তখন ফেরেশতারা জিজ্ঞেস করবেন, আপনার প্রতিবেশী কারা? তখন আল্লাহ বলবেন, যারা দুনিয়াতে আমার ঘরের (মসজিদের) সঙ্গে সম্পর্ক রেখেছে এবং মসজিদ আবাদ করেছে।’ (হিলয়াতুল আউলিয়া : ১০/২১৩)

আরশের ছায়ায় আশ্রয় : কেয়ামতের দিন হাশরের ময়দানে আল্লাহর আরশের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। সেদিন সাত শ্রেণির মানুষ আল্লাহর আরশের ছায়ার নিচে আশ্রয় পাবে। তাদের অন্যতম হলেন ওই ব্যক্তি, যার অন্তর মসজিদের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে (মসজিদের প্রতি তার মন সদা আকৃষ্ট থাকে)। (সহিহ বোখারি : ৬৬০)

মসজিদের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অর্থ, সে নামাজের সময়ের ব্যাপারে সতর্ক থাকে। সময়মতো মসজিদে গমন করে নামাজ আদায় করে। নামাজের পর যখন মসজিদ থেকে বের হয় পরবর্তী নামাজের প্রতীক্ষায় থাকে। ফলে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজই সে স্বচ্ছন্দে মসজিদে গিয়ে জামাতের সঙ্গে আদায় করতে সক্ষম হয়।

শুধুই চাকচিক্যবর্ধন নয় : শহর-গ্রাম সর্বত্র এখন মসজিদ সৌন্দর্যকরণের প্রতিযোগিতা চলছে। শুধুই সৌন্দর্যবর্ধন ও চাকচিক্যকরণ মসজিদের মুখ্য উদ্দেশ্য নয়। মসজিদ এমন অতিরিক্ত কারুকার্যমণ্ডিত না করা, যা নামাজে মনোযোগে ব্যাঘাত ঘটায়। মানুষের সঙ্গে গর্ব করার নিমিত্তে মসজিদ নির্মাণ করা অনুচিত। হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস ইবন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যতক্ষণ পর্যন্ত লোকেরা মসজিদের সৌন্দর্য ও সুসজ্জিতকরণ নিয়ে পরস্পর গর্ব না করবে, ততক্ষণ কেয়ামত সংঘটিত হবে না।’ (সুনানে আবু দাউদ : ৪৪৯)

অন্য বর্ণনায় আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবন আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন কোনো জাতির অপরাধ বেড়ে যায়, তখন তাদের মসজিদগুলো অত্যন্ত সুন্দর সুন্দর করে বানানো হয়। আর মসজিদগুলোকে একমাত্র দাজ্জাল আত্মপ্রকাশের সময়ই সৌন্দর্যমণ্ডিত করে বানানো হবে। (আসসুনানুল ওয়ারিদা ফিলফিতান লিদদানি : ৪১৬)

মসজিদ অত্যধিক চাকচিক্য করা মুসলমানদের অধঃপতনের আলামত। আগের দিনের মসজিগুলো ছিল জীর্ণশীর্ণ, তবে মানুষের ইমান ছিল পাকাপোক্ত।

বংশীয় বিবাদে মসজিদ নির্মাণ নয় : ইদানীং অনেক এলাকায় দেখা যাচ্ছে, অন্য কোনো মসজিদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কারুকার্যখচিত মসজিদ। এক ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে উদ্যোগ গ্রহণ করে এসব মসজিদ বানানো হচ্ছে। যেখানে মসজিদের প্রয়োজন আছে সেটা তো ঠিক আছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, রাস্তার এপারে এক মসজিদ, ওপারে আরেক মসজিদ। বংশীয় বিবাদকে কেন্দ্র করে বা মসজিদ কমিটিতে কে থাকবে তা নিয়ে ঝগড়া করে নতুন মসজিদ তৈরি হচ্ছে।

ইসলামি শরিয়তে সুনাম-সুখ্যাতির উদ্দেশ্যে মসজিদ নির্মাণ করা নিন্দনীয়। দিন দিন মসজিদ বাড়ছে কিন্তু মুসল্লির সংখ্যা অপ্রতুল। যোগ্য ইমাম, মুয়াজ্জিন রাখার নেই সামর্থ্য। থাকলেও প্রতি মাসের বেতন-ভাতা ঠিক সময়ে দিতে পারছে না। মাসের পর মাস ইমাম, মুয়াজ্জিনের বেতন বাকি থেকে যায়। এ বিষয়গুলোর প্রতি সবার লক্ষ রাখা উচিত।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION