সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মাতারবাড়িতে গৃহবধূর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা রুজু

ভয়েস প্রতিবেদক

মহেশখালীর মাতারবাড়িতে জান্নাতুল বকেয়া (১৯) নামের এক গৃহবধূর রহস্যজনক ২৫ মার্চ মৃত্যুর ঘটনায় মহেশখালী থানায় অপমৃত্যু মামলা হিসেবে রুজু করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী।মামলা নং ৪/২৪।

জানাযায়, মৃত জান্নাতুল বকেয়ার পিতা আক্তার হোসাইনের থানায় দেওয়া আবেদনে তার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে কারো প্রতি অভিযোগ নাই মর্মে লিখেন, আমার মেয়ে জান্নাতুল বকেয়া বিগত অনুমান ৮ মাস পূর্বে আমাদের মাতারবাড়ি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের মগডেইল গ্রামের বাদশা মিয়ার ছেলে মোশাররফ হোসাইন বাপ্পী এর সাথে মুসলিম শরীয়ত মতে বিবাহ দিই। এবং তাহাদের দাম্পত্য জীবন সুখের ছিল। গত ২৫ মার্চ সকাল অনুমান ১১ টার সময় আমার মেয়ে শ্বশুর বাদশা মিয়া তাহার স্ত্রী ও তাহাদের বড় ছেলের বউ ডাক্তার দেখানোর জন্য চকরিয়া এলাকায় যায়। ঐদিন বিকাল অনুমান ৪ টার সময় আমার মেয়ের শশুর শ্বাশুরী ও জা চকরিয়া হতে বাড়িতে এসে দেখে যে, বাড়ির ২য়তলায় ঘরের দরজা বন্ধ। পরে তারা আমার মেয়েকে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পাওয়ায় ঘরের জানালা দিয়ে উঁকি মেরে দেখে যে, আমার মেয়ে জান্নাতুল বকেয়া ২য় তলায় তার শয়নকক্ষের সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না পেচিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এবং আমার মেয়ের মৃত দেহ ফ্যানের সাথে ঝুলছে। পরে তারা আমাকে ও মহেশখালী থানায় সংবাদ দিলে মহেশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আমার মেয়ের মৃত দেহ ঝুলন্ত অবস্থায় মাটিতে নামিয়ে আমার মেয়ের মৃত দেহের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করেন। এসব ঘটনা দেখে আমার মনে হয়েছে ২৫ মার্চ সকাল অনুমান ১১ টা হতে বিকাল ৪ টার মধ্যে যেকোনো সময় আমার মেয়ে অজ্ঞাত কারণে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। পরে ময়না তদন্ত শেষে লাশ বুঝে নিয়ে মেয়ের দাফন করেন। আর তার মেয়ের অজ্ঞাত কারণে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যার করেছে।

তিনি আরো লিখেন , আবেদনের ভাষায় “আমার মেয়ের মৃত্যুর বিষয়ে কারো প্রতি আমি বা আমার পরিবারের লোকজনের কোনো অভিযোগ নাই।”

এবিষয়ে পিতা আক্তার হোসাইনের মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি ইতস্ততবোধ করে বলেন, আমি থানায় গিয়েছিলাম কিছু কাগজ জমা দিয়েছিলাম। আমাদের মাঝে একটা কথা চলছে কিন্তু কি কথা কার সাথে বিস্তারিত কোনো কিছু বলেননি। পরে বলেন, এসব বিষয়ে আমার ছেলেই সব জানেন। আপনাকে পরে জানাব।

মাতারবাড়িতে এখনো পর্যন্ত জান্নাতুল বকেয়ার মৃত্যুর রহস্য নিয়ে কানাঘুষা চলছে কারণ মৃত্যুর প্রথম দিকেই নিহতের ভাই ফয়সাল ওইদিন দাবী করে তার বোনকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি ওই সময় বলেছিলেন ‘গত ৮ মাস আগে মাতারবাড়ির মগডেইল এলাকার বাদশা মিয়ার পুত্র মোহাম্মদ বাপ্পির সাথে নিহত বকেয়ার বিয়ে হয়। তারা উভয়ই একে—অপরকে ভালোবেসে উভয়ের পরিবারের অসম্মতিতে বিয়ে করায় যৌতুক নিয়ে নানা ঝামেলা চলে আসছিলো। বকেয়ার পরিবার থেকে ৪ লক্ষ টাকার যৌতুক দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয়া হয়েছে ইতিমধ্যে। কিন্তু এরপরেও তার বোনকে মারধর করতো শ্বশুরবাড়ির লোকজন। গত কয়েকদিন আগেও ইফতারের জন্য মারধর করা হলে বকেয়ার বাবার বাড়ি থেকে ইফতার পাঠানো হয়। কিন্তু আজকে বকেয়াকে শ্বশুর বাড়ির লোকজন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে লাশ ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে দিয়েছে বলে অভিযোগ ছিল তার।

জানতে চাইলে মহেশখালী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী বলেন, ২৫ মার্চের মাতারবাড়ির জান্নাতুল বকেয়ার মৃত্যুর বিষয়ে তার পিতা একটা আবেদন দিয়েছেন। তার আবেদনের প্রেক্ষিতেই অপমৃত্যু ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। তবে লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মাতারাড়িতে আলোচিত এই ঘটনার পরপরই মিডিয়াতে বেশ হইচই পড়ে যায় জান্নাতুল বকেয়ার মৃত্যু হত্যা না আত্মহত্যা।

উল্লেখ্য, সোমবার (২৫ মার্চ) বিকাল ৪ টায় উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মগডেইল এলাকার নিজ শ্বশুর বাড়িতে ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় জান্নাতুল বকেয়ার (১৯) লাশ উদ্ধার করে শ্বশুর বাড়ির লোকজন। মহেশখালী থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে। ঘটনার পর থেকে নিহতের স্বামী মো. বাপ্পী পলাতক রয়েছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানাযায়।

ভয়েস/জেইউ।

 

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION