রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৪০ পূর্বাহ্ন
সাহাব উদ্দিন সিকদার, মহেশখালী
মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রচার—প্রচারণা তুঙ্গে উঠেছে। এরি মাঝে অনেকটা ঘর ঘুছিয়ে নিওয়ার শেষ পর্যায়ে প্রার্থী এবং তাদের কর্মীরা! ভোট ভিক্ষা করতে দিনরাত যাচ্ছেন ভোটারের দুয়ারে দুয়ারে। ইভিএমে ভোট গ্রহণে প্রশাসনের প্রস্তুতিও চলছে বেশ জোরেশোরে।
নির্বাচনে দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনাই পরিষ্কার হচ্ছে প্রতিদিন এবং তা টুপি মার্কা নিয়ে হ্যাভিওয়েট প্রার্থী হাবিব উল্লাহ এবং দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে মোহাম্মদ জয়নাল আবেদিনের মধ্যে হবে তা অনেকটা পরিষ্কার। তবে কেউ কেউ হাবিব—জয়নাল— উত্তরের প্রার্থী মোটর৷ সাইকেল মার্কা নিয়ে গোলাম কুদ্দুস চৌধুরী সাখেত্রিমুখী লড়াইয়ের কথাও বলছেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী জয়নাল আবেদীন জনসমর্থনে এগিয়ে রয়েছেন। ব্যবসার মাঠ থেকে আচমকা নির্বাচনের মাঠে এসে তিনি শিক্ষত যুবকদের মধ্যে জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। উচ্চশিক্ষিত, ধর্মভিরু পরহেজগার ও মার্জিত আচরণের অধিকারী জয়নাল মাঠে নেমেই ব্যাপক সাড়া ফেলেছেন। মানুষ যে তাকে গ্রহণ করেছে সেটি বোঝা যাচ্ছে প্রতিদিন তার প্রচারণায় হাজার হাজার মানুষের স্বতঃস্ফূর্তভাবে যুক্ত হওয়ার মাধ্যমে। অল্প সময়ে তিনি এখন সবখানে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন।
অপরদিকে টুপি মার্কা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন জনপ্রীয় শ্রমিক বান্ধব নেতা হাবিবুল্লাহ হাবিব। তিনি এর আগে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে ৩৩ হাজারের মত ভোট পেয়ে ব্যাপক সাড়া ফেলে দেন।
তিনি মহেশখালী কুতুবদিয়ার সাবেক সাংসদ আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের ভাতিজা এবং বর্তমান এম পি আশেক উল্লাহ রফিকে নিকট আত্মীয় হিসেবে এই দুই নেতার ভোট ব্যাংক তার ব্যক্তিগত শ্রমিক বান্ধব ইমেজ সহ ভোট ব্যাংকে পুঁজি করে অনেকে তার জেতার সম্ভাবনার হিসেব কষতে শুরু করেছেন।
মহেশখালীরউত্তর প্রান্তের প্রার্থী কালামারছড়া ইউনিয়নের সাবেক জনপ্রিয় চেয়ারম্যান ন্যায় পরায়ণ, ক্লিন ইমেজের গোলাম কুদ্দুস চৌধুরী ভোটের পুর্বে ভোটারদের মাঝে উত্তর দক্ষিণের বিভাজনের সমিকরন কাজে লাগিয়ে জেতার সম্ভাবনা তৈরি করতে পারে বলে বিভিন্ন তথ্য সুত্রে উঠে আসছে।
সারা দেশে ৮ মে প্রথম ধাপের ভোটগ্রহণের মধ্য দিয়ে দেশব্যাপী শুরু হবে উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। এ দিন ১৫০ উপজেলায় ভোটগ্রহণের তালিকায় কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের কার্যসূচিও রয়েছে। মহেশখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন।
তারা হলেন— হাবিবউল্লাহ হাবিব (টুপি), গোলাম কুদ্দুস চৌধুরী (মোটরসাইকেল), জয়নাল আবেদীন (দোয়াত কলম), মোহাম্মদ শরীফ বাদশা (আনারস) এবং আব্দুল্লাহ আল নিশান (চিংড়ি মাছ)।
সূত্র মতে, শরীফ বাদশা সরে দাঁড়ায় এখন মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে জয়নাল আবেদীন এবং হাবিবউল্লাহ হাবিব এর মধ্যে। তবে সরকারি দল সমর্থিত প্রার্থী গোলাম কুদ্দুস চৌধুরীও রয়েছেন বিভিন্ন জনের আলোচনায়।
মূলত দলীয় প্রতীক নৌকা না থাকা এবং বিএনপি অংশ না নেয়ায় মহেশখালীতে প্রথমদিকে প্রচারণা ও নির্বাচনী আমেজ তেমন সৃষ্টি হয়নি।
তবে এখন বেশ জমে উঠেছে। ভোটারদের অভিমত, মহেশখালীর একেবারেই উত্তর প্রান্তে মাতারবাড়ী, ধলঘাটা, কালামারছড়া, শাপলাপুর এবং হোয়ানকসহ মোট পাঁচটি ইউনিয়নের ভোট যে প্রার্থী বেশি টানতে পারবেন তিনিই বিজয়ী হবেন। কারণ অন্য চারজন প্রার্থীই দক্ষিণ মহেশখালী এলাকায়। বর্তমানে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শরীফ বাদশা সরে দাঁড়ানো এবং দির্ঘ বহু বছর ধরে সুপ্ত অবস্থায় থাকা জামাতে ইসলামির পুরো অংশ ভোটের মাঠে সক্রিয় ভূমিকা রাখায় সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থায় আছেন জয়নাল আবেদীন, এমনটিই জানা গেছে বিভিন্ন তথ্য সুত্রে!
ইতিমধ্যে নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু নিরপেক্ষ করার জন্য মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন শুরু হয়েছে!
সহকারি রিটার্নিং অফিসার বিমলেন্দু কিশোর পাল জানান, মহেশখালী পৌরসভা ছাড়াও উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের মোট ৮৬টি কেন্দ্র পরে ৪ টি সংযোজন করে মোট ৯০ টি কেন্দ্রে এবার ইভিএমে ভোট গ্রহণ হবে। ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলো নতুনভাবে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানান তিনি । ভোটগ্রহণ শতভাগ সুষ্ঠু হওয়ার বিষয়ে তিনি দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
ভয়েস/জেইউ।