বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:১৩ অপরাহ্ন
শফিক নোমানীম:
অন্যের হক নষ্ট করা বা কাউকে কষ্ট দেওয়া ভয়াবহ জুলুম। এটি হয়ে থাকে সাধারণত শক্তিশালী কর্র্তৃক দুর্বলের প্রতি, ধনী কর্র্তৃক গরিবের প্রতি, মালিক কর্র্তৃক কর্মচারীর প্রতি এবং শাসক কর্র্তৃক জনগণের প্রতি। অথচ একটুও চিন্তা করা হয় না যে, যদিও আজ সে দুর্বল হওয়ার কারণে তার প্রতি জুলুম করা হচ্ছে, কাল আল্লাহ তাকে সবল করে দিতে পারেন। দুনিয়াতে যদিও কোনোভাবে পার পাওয়া যায়, কিন্তু আখেরাতে উপায় কী হবে?
পবিত্র কোরআনে এর জন্য কঠিন শাস্তির ঘোষণা এসেছে। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, ‘যারা নিজেদের ওপর জুলুম হওয়ার পর (সমপরিমাণে) বদলা নেয়, তাদের বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ নেই। অভিযোগ তো তাদের বিরুদ্ধে, যারা মানুষের ওপর জুলুম করে এবং পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে বিদ্রোহ করে বেড়ায়। এরূপ লোকদের জন্য আছে যন্ত্রণাময় শাস্তি।’ (সুরা শুরা ৪১-৪২)
জুলুম হয় কখনো শারীরিকভাবে, কখনো মানসিকভাবে, কখনো সম্পদ লুট করে, কখনো সম্ভ্রমহানি করে। তা যেভাবেই করুক কেয়ামতের দিন সেটার মূল্য দিতেই হবে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের সম্মানহানির মাধ্যমে বা অন্য কোনো প্রকারে তার ওপর জুলুম করেছে, সে যেন তার সঙ্গে মীমাংসা করে নেয় সেই দিন আসার পূর্বেই, যেদিন তার কাছে কোনো দিনার-দিরহাম (টাকা-পয়সা) থাকবে না। সেদিন যদি তার কাছে কোনো নেক আমল থাকে তবে তার জুলুম পরিমাণ সেখান থেকে নিয়ে নেওয়া হবে (এবং পাওনাদারকে দিয়ে দেওয়া হবে।) আর যদি কোনো নেক আমল না থাকে তাহলে যার ওপর জুলুম করেছে তার পাপের বোঝা জুলুম অনুযায়ী জালেমের ঘাড়ে চাপানো হবে। (সহিহ বুখারি ২৪৪৯) অপর হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমরা জুলুম থেকে বেঁচে থাকো। কেননা জুলুম কেয়ামতের দিন বহু অন্ধকার হয়ে দেখা দেবে।’ (সহিহ বুখারি ২৪৪৭)
হাদিসে কুদসিতে মহান আল্লাহ ইরশাদ করেছেন, ‘হে আমার বান্দাগণ! আমি জুলুম করাকে নিজের প্রতি হারাম করেছি এবং তোমাদের জন্যও তা হারাম করে দিয়েছি। সুতরাং একে অন্যের প্রতি জুলুম করো না।’ (সহিহ মুসলিম ২৫৭৭) মহান আল্লাহ আমাদেরকে সব প্রকার জুলুম করা থেকে বিরত রাখুন। আমিন।
ভয়েস/আআ