বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৭ অপরাহ্ন
জিয়াদ হাসান:
অভাব ও কষ্টে নিপতিত হয়ে কান্না করা মুসলমানদের জন্য শোভনীয় নয়। মুসলমানদের জন্য শোভনীয় হলো, তারা কাঁদবে আল্লাহর ভয়ে, পরকালে শাস্তির ভয়ে। এটিই নবী-রাসুল এবং আল্লাহর বিশিষ্ট বান্দাদের বৈশিষ্ট্য। আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারী মুসলমানের জন্য রয়েছে আল্লাহর সন্তুষ্টি, হাসরে মর্যাদাপূর্ণ অবস্থান এবং সুখময় জান্নাতের প্রতিশ্রুতি।
অশ্রুসিক্ত চোখকে জাহান্নাম স্পর্শ করবে না। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, আমি রাসুল (স.)-কে বলতে শুনেছি, জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না। এক. মহান আল্লাহর ভয়ে যে চোখ কাঁদে। দুই. মহান আল্লাহর রাস্তায় যে চোখ (নিরাপত্তার জন্য) পাহারা দিয়ে নির্ঘুম রাত পার করে। (জামে তিরমিজি)
হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, দুটি ফোঁটা ও দুটি চিহ্নের চেয়ে বেশি প্রিয় মহান আল্লাহর কাছে আর কিছু নেই। মহান আল্লাহর ভয়ে যে অশ্রুর ফোঁটা পড়ে, আল্লাহর পথে (জিহাদে) যে রক্তের ফোঁটা নির্গত হয়, আল্লাহ রাস্তায় (জিহাদে) যে চিহ্ন (ক্ষত) সৃষ্টি হয় এবং আল্লাহর নির্ধারিত কোনো ফরজ আদায় করতে গিয়ে যে চিহ্ন সৃষ্টি হয় (যেমন কপালে সেজদার চিহ্ন)। (জামে তিরমিজি)
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, সাত ধরনের মানুষকে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার আরশের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন, যেদিন তার ছায়া ছাড়া অন্য কোনো ছায়া থাকবে না। তাদের অন্যতম হলো এমন ব্যক্তি, যে আল্লাহকে নির্জনে স্মরণ করে আর তার চোখ দুটি অশ্রুসিক্ত হয়। (সহিহ বুখারি)
তাই মুমিনদের উচিত নিজের মধ্যে আল্লাহভীতি জাগ্রত করা। আল্লাহর দরবারে কান্নাকাটি করে তওবা-ইসতেগফার করা। আমরা অনেকে মনে করি, আমরা পাপের সাগরে ডুবে গেছি, আল্লাহ আমাদের হয়তো ক্ষমা করবেন না, এসব ভুল ধারণা। তিনি দয়ার সাগর। বান্দার একটু অনুশোচনার অশ্রু তিনি সহ্য করতে পারেন না। এক ফোঁটা অশ্রুর বিনিময়েই তিনি বান্দার গুনাহ ধুয়ে সাফ করে দিতে পারেন। জাহান্নামকে চিরতরে হারাম করে দিতে পারেন। তাই তো রাসুল (সা.) বলেছেন, মহান আল্লাহর ভয়ে যে লোক কাঁদে, তার জাহান্নামে যাওয়া এরূপ অসম্ভব যেমন অসম্ভব দোহন করা দুধ আবার ওলানের মধ্যে ফিরে যাওয়া। (জামে তিরমিজি)
ভয়েস/আআ