রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:০০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

তৃতীয় দফা লকডাউনে ১০সুপারিশ

লকডাইন।ফাইল ছবি

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

গত মার্চ থেকে দেশে করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়। এবারের সংক্রমণ এতো তীব্র ছিল যে, চিকিৎসকরা একে ঢেউ না বলে সুনামি বলেও অভিহিত করেছেন। সংক্রমণ এবং মৃত্যু ঠেকাতে গত ৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন ঘোষণা করে সরকার। যদিও সেটা ততোটা কঠোর ছিল না। এরপর গত ১৪ এপ্রিল থেকে সর্বাত্মক লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়, এটি চলবে ৫ মে পর্যন্ত। তবে চলমান বিধি-নিষেধের (লকডাউন) সময়সীমা ৫ মে’র পরে আরও বাড়ানোর চিন্তা রয়েচে। তবে কৌশল পরিবর্তন হতে পারে। এদিকে লকডাউন থেকে থেকে বেরিয়ে আসতে এক্সিট প্ল্যানের পরামর্শ দিয়েছে কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।

কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, ইতোমধ্যে সরকারের কাছে লকডাউন পরবর্তী এক্সিট প্ল্যানের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে, যা বাস্তবায়ন অতি জরুরি।

কমিটির সেই এক্সিট প্ল্যানে বলা হয়েছে-

১. অবশ্যই মুখে মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে হবে। ঘর থেকে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন মুখে মাস্ক থাকে। যেখানে ভাইরাসের ঘনত্ব বেশি যেমন: গণপরিবহন, সুপার মার্কেট, বাজার, ব্যাংক, হাসপাতাল এসব জায়গায় কেউ মাস্ক ছাড়া যেতে পারবেন না। মাস্ক না পরলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা থাকতে হবে।

২. অফিসে উপস্থিতি অর্ধেক করার প্রস্তাব করেছে জাতীয় পরামর্শক কমিটি। তবে উপস্থিতি এক-তৃতীয়াংশ হলে ভালো হয়। অফিসগুলোতে ভার্চ্যুয়াল কর্মকাণ্ড পরিচালনাকে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছে কমিটি। অফিসগুলোতে যেন দলবেঁধে খাওয়া-দাওয়া না চলে। সবাই যেন আলাদাভাবে তাদের খাওয়া সম্পন্ন করে।

৩. গণপরিবহন যেন তাদের সক্ষমতার ৫০ ভাগ যাত্রী বহন করে। এই নিয়ম দীর্ঘদিনের জন্য চালু থাকতে হবে। এছাড়া প্রাইভেটকার এবং তিন চাকার যান্ত্রিক বাহন (সিএনজি অটোরিকশা) একজন করে যাত্রী বহন করবে। তবে পরিবারের সদস্য হলে দুই জন বহন করতে পারে। অবশ্য রিকশা, মোটরসাইকেল এবং বাইসাইকেলে কোনও সমস্যা নেই।

৪. খাবারের দোকান, মুদি দোকান, মার্কেট এবং শপিংমল দিনের লম্বা সময়ের জন্য খোলা রাখা। স্বল্প সময়ের জন্য খোলা রাখলে মানুষের চাপ বাড়ে এবং সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। বেশি সময় ধরে খোলা থাকলে মানুষের ভিড় কম হবে। কাঁচা বাজারগুলো উন্মুক্ত জায়গায় পরিচালনা করতে হবে। রেস্টুরেন্টে বসে খাওয়া যাবে না। হোম ডেলিভারি সার্ভিসকে উৎসাহ দেওয়ার কথা বলেছে কমিটি।

৫. জনসমাবেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। মসজিদ, মন্দির এবং চার্চে যাতে ভিড় না হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রার্থনায় সীমিত সংখ্যক মানুষ যেতে পারবে। এছাড়া রাজনৈতিক সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। যদি করাও হয় তাতে ১০ জনের বেশি মানুষ না রাখার পরামর্শ দিয়ে জাতীয় কমিটি।

৬. যারা দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে জীবিকা নির্বাহ করে তাদের কাজ চালিয়ে নেওয়া যাবে। নিয়োগকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান শ্রমিকদের শারীরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি নিশ্চিত করবে।

৭. কলকারখানার প্রবেশমুখে শ্রমিকদের জন্য স্যানিটাইজেশন ব্যবস্থা রাখতে রাখবে, যাতে করে তারা জীবাণুমুক্ত হয়ে কারখানায় প্রবেশ করতে পারে। কারখানার ভেতরে মাস্ক পরে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রেখে কাজ করতে হবে।

৮. যতদিন পর্যন্ত পরিস্থিতির উন্নতি না হয় ততদিন পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখতে হবে। অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে উৎসাহ দিতে হবে।

৯. বিনোদন এবং পর্যটনকেন্দ্রগুলো সম্পূর্ণ বন্ধ রাখতে হবে। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত পর্যটনকেন্দ্র খোলা যাবে না।

১০. এছাড়া আইসোলেশন, কন্টাক্ট ট্রেসিং এবং কোয়ারেন্টিন নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম চলমান রাখতে হবে। সংক্রমণ রোধ করার জন্য এটা ভীষণ প্রয়োজন। বিদেশ থেকে আসা যাত্রীদের ক্ষেত্রে কোয়ারেন্টিন ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে যারা আসবেন তাদের দ্রুত খুঁজে বের করে আইসোলেশন নিশ্চিত করতে বলেছে জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। টেস্ট করার সুবিধা বাড়াতে হবে। টেস্টিং সেন্টারগুলোতে যাতে ভিড় না হয়, সেজন্য সেন্টারের সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা বলেন, এসব সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে এবং মনিটরিং জোরদার করতে হবে। না হলে আবারও সংক্রমণ বেড়ে যেতে পারে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION