রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:১৭ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

যেভাবে সুরক্ষা পাওয়া যাবে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস থেকে

স্বাস্থ্য ডেস্ক:

দেশে করোনাভাইরাসের উচ্চসংক্রামক ভারতীয় ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতির পর দু’জন রোগীর শরীরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস দেখা গেছে। এই খবর অনেকের মাঝে উদ্বেগ তৈরি করেছে।

করোনাভাইরাসের মতো ব্ল্যাক ফাঙ্গাসও মৃত্যু ঘটাতে পারে। যদিও ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নতুন কোনো বিষয় নয় এবং এটি ছোঁয়াচে নয়। তারপরও যথেষ্ট সচেতন হতে হবে। কেননা ভারত সরকার ইতোমধ্যে ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের সংক্রমণকে ‘মহামারি’ ঘোষণা করেছে। অর্থাৎ বলতে দ্বিধা নেই করোনাসৃষ্ট মহামারির এই সংকটকালে এটি মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হয়ে দেখা দিয়েছে। যে কারণে অনেকেই জানতে আগ্রহী ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমণের ধরন, রোগের লক্ষণ এবং সুরক্ষা সম্পর্কে।

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশন কী?

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস ইনফেকশনকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় মিউকোরমাইকোসিস বলে। মিউকোর নামক ছত্রাকের সংস্পর্শে এলে এটি সংক্রমণ ঘটায়। এই ছত্রাক সাধারণত মাটি, গাছপালা, সার এবং পচন ধরা ফল ও শাকসবজিতে পাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ছত্রাক সর্বত্র বিদ্যমান; এমনকি সুস্থ মানুষের নাক ও শ্লেষ্মার মধ্যেও থাকে।

কারা এতে আক্রান্ত হয়?

শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম হলে এই ফাঙ্গাসের সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ে। এটি সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুস আক্রান্ত করে। ডায়াবেটিস, ক্যানসার, এইচআইভি/এইডস-এর মতো কোনো রোগের কারণে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের জন্য এটি প্রাণঘাতী হতে পারে।

করোনা রোগীরা কেন ঝুঁকিতে রয়েছেন?

চিকিৎসকদের মতে, করোনা মহামারির আগে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণ খুব বিরল ছিল এবং মূলত দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার অধিকারীদের মধ্যে দেখা যেত। তবে মহামারি শুরু হওয়ার পর ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্তের গতি বাড়ছে ৩ কারণে- কোভিড নিজে, ডায়াবেটিস এবং স্টেরয়েডের ব্যবহার। এই তিনটিই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়।

যেসব করোনা রোগী অতিরিক্ত স্টেরয়েড ওষুধ নিয়ে রোধ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলেন তাদের এই ছত্রাকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি। করোনায় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গে যে ক্ষতি হয়, সেই ক্ষতি থামানোর জন্য স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। কিন্তু স্টেরয়েডের অতি ব্যবহার স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণেই করোনা রোগীদের ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।

কী ধরনের উপসর্গ দেখা দেয়?

ব্ল্যাক ফাঙ্গাস সাধারণত নাক, উপরের চোয়ালের মধ্যে বাড়তে শুরু করে এবং মস্তিষ্কে পৌঁছাতে পারে। সংক্রমিত রোগীদের উপসর্গের মধ্যে রয়েছে: নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং নাক থেকে রক্ত পড়া, চোখের নিচে ব্যথা, চোখ ফুলে যাওয়া, মুখের একপাশ ফুলে যাওয়া, মাথাব্যথা, জ্বর, চোখের দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া, নাকের চামড়ার চারপাশে কালো ছোপ ছোপ দাগ।

কীভাবে সুরক্ষা মিলবে?

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ফাঙ্গাস সংক্রমণ এড়াতে সঠিক পরিমাণ স্টেরয়েড ডোজ সঠিক সময়ে নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়াও-

* হাইপারগ্লাইসেমিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।

* ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে গ্লুকোজের স্তর পর্যবেক্ষণ করতে হবে।

* অক্সিজেন থেরাপির সময় হিউমিডাইফায়ার পরিষ্কার ও জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে।

* সব সময় পরিষ্কার মাস্ক পরতে হবে, একই মাস্ক বারবার ব্যবহার করা যাবে না।

* শরীর দুর্বল রাখা যাবে না। ব্যায়াম করতে হবে। পর্যাপ্ত ঘুমাতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে। ভিটামিন সি, ডি, ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে হবে।

* অ্যান্টিবায়োটিক/ অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

* নির্মাণ বা খননকাজের জায়গা যেখান থেকে ধুলাবালি ছড়িয়ে পড়ছে, এমন জায়গায় মাস্ক অবশ্যই ব্যবহার করতে হবে।

* খালি পায়ে ঘোরাফেরা করা যাবে না।

* ভেজা বা স্যাঁতসেঁতে দেওয়ালের স্পর্শ এড়াতে হবে।

* ত্বকে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা কমাতে পঁচা মাটি বা ধূলিকণার সংস্পর্শে গেলে সাবান ও পানির সাহায্যে ত্বক পরিষ্কার করে নিতে হবে।

* কোথাও কেটে গেলে কিংবা চামড়া উঠে গেলে জায়গাটি যেন ধুলো-ময়লার সংস্পর্শে না আসে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

* মাটি (বাগান), শ্যাওলা বা সার ব্যবহারের সময় অবশ্যই গ্লাভস ব্যবহার করতে হবে।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION