রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

যেসব আমলে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মেলে

ইসমাঈল সিদ্দিকী:
মুমিনের জীবনের একান্ত কামনা, তার শেষ আবাসস্থল যেন জান্নাত হয়। জান্নাতই সুখ ও সফলতার চাবিকাঠি। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ আস্বাদন করবে এবং তোমাদের সকলকে কেয়ামতের দিন (তোমাদের কর্মের) পূর্ণ প্রতিদান দেওয়া হবে। তখন যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই প্রকৃত অর্থে সফলকাম। আর এই পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছু নয়।’ সুরা আলে ইমরান : ১৮৫

আয়াতে বর্ণিত প্রকৃত সফলকাম সম্পর্কে স্পষ্টভাবে আল্লাহ বলেছেন, ‘যাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করানো হয়েছে সেই সফলকাম।’ হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘জান্নাতে এক বেত পরিমাণ জায়গা দুনিয়া ও তাতে যা আছে তার থেকে উত্তম।’ তারপর তিনি উপরোক্ত আয়াত তেলাওয়াত করলেন। জামে তিরমিজি : ৩০১৩

ইসলামি স্কলাররা বলেন, প্রকৃত অর্থে সফল হতে হলে, জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে চাইলে নিম্নোক্ত আমলগুলোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে।

গিবত না করা : গিবত এটি জঘন্যতম এক মহামারী। বাজারঘাট, দোকানপাট সর্বত্রই এর ছড়াছড়ি। গিবতমুক্ত জীবন গড়তে পারলে জাহান্নাম থেকে মুক্তি মিলবে। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তার (মুসলিম) ভাইয়ের সম্ভ্রম রক্ষা করে, কেয়ামতের দিবসে আল্লাহতায়ালা তাকে জাহান্নাম থেকে রক্ষা করবেন।’ সুনানে তিরমিজি : ১৯৩১

দান-সদকা করা : ইসলাম সর্বদা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে বলে দায়িত্বানুভূতি নিয়ে মানবিকতার সঙ্গে। দান করা গরিবের প্রতি অনুগ্রহ নয়, বরং দায়িত্ব এই মনোভাব নিয়ে দান করতে হবে। দানের অসিলায় আল্লাহতায়ালা জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। নবী করিম (সা.) বলেন, ‘তোমরা জাহান্নাম থেকে বাঁচো যদিও এক টুকরো খেজুর সদকা করে হয়।’ সহিহ বোখারি : ১৪১৭

সদাচার : সদাচরণের অভাবে মানবসমাজ থেকে সুখ-শান্তি বিদায় নিচ্ছে, দিন দিন অশান্তি বেড়েই চলছে। ইসলাম সদাচারের প্রতি অনেক গুরুত্ব দিয়েছে এবং সদাচারকে প্রকৃত মুসলমান হওয়ার মাপকাঠি বানিয়েছে। সদাচারীর জন্য প্রিয় নবী করিম (সা.) সুসংবাদ দিয়ে গেছেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘আমি কি তোমাদের জানিয়ে দেব না যে, কোনো ব্যক্তির জন্য জাহান্নাম হারাম এবং জাহান্নামের জন্য কোনো ব্যক্তি হারাম? যে ব্যক্তি মানুষের কাছাকাছি (জনপ্রিয়) সহজ-সরল, নম্রভাষী ও সদাচারী। সুনানে তিরমিজি : ২৪৮৮

কান্নার অভ্যাস : প্রকৃত মুমিনের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, তার দুচোখ বেয়ে অশ্রু প্রবাহিত হবে। আল্লাহর স্মরণে তার হৃদয় বিগলিত হবে। আল্লাহর আজাবের ভয়ে তার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠবে। কারণ, আল্লাহর ভয়ে ক্রন্দনকারীর জন্য উচ্চ মর্যাদা রয়েছে। পরকালে মর্যাদাপূর্ণ স্থান ও সুখময় জান্নাত রয়েছে। হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, জাহান্নামের আগুন দুটি চোখকে স্পর্শ করবে না ১. আল্লাহতায়ালার ভয়ে যে চোখ ক্রন্দন করে। ২. আল্লাহর রাস্তায় যে চোখ পাহারা দিয়ে রাত পার করে। সুনানে তিরমিজি : ১৬৩৯

জোহরের পূর্বাপরের সুন্নত আদায় : সুন্নতের আমল, তা যদি নিয়মিত করা হয় এবং অভ্যাসে পরিণত করা হয়, তখন তার সওয়াব, তার পুরস্কারটা অনেক বড় হয়ে যায়। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি জোহরের আগে চার রাকাত এবং পরে চার রাকাত নামাজ আদায় করবে, মহান আল্লাহ তার জন্য জাহান্নাম হারাম করে দেবেন।’ ইবনে মাজাহ : ১১৬০

তাকবিরে উলার অনুসরণ : জামাতে নামাজের সময় ইমামের প্রথম তাকবিরের সঙ্গে মুক্তাদিও যদি তাকবির বলে একাধারে চল্লিশ দিন নামাজ পড়তে পারেন, তার জন্য নবী করিম (সা.) দুটি সুসংবাদ দিয়ে গেছেন। বর্ণিত হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের উদ্দেশ্যে একাধারে চল্লিশ দিন তাকবিরে উলার সঙ্গে জামাতে নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তাকে দুটি জিনিস থেকে মুক্তি দেবেন। ১. জাহান্নাম হতে মুক্তি ও ২. মুনাফিকি হতে মুক্তি।’ সুনানে তিরমিজি : ২৪১

আয়াতুল কুরসি পাঠ : সুরা বাকারার ২৫৫ নম্বর আয়াত আয়াতুল কুরসি নামে পরিচিত। এই আয়াতে আল্লাহর একত্ববাদ, মর্যাদা ও গুণের বর্ণনা থাকার কারণে আল্লাহ এ আয়াতের মধ্যে অনেক ফজিলত রেখেছেন। রাসুল বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর আয়াতুল কুরসি পাঠ করবে, মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে সে জান্নাতবাসী হবে। সুনানে নাসাঈ : ৫/৩৩৯

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION