রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৭ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মালদ্বীপে ১২০০ বছরের পুরনো মসজিদ

মুফতি মুহাম্মদ তাসনীম:
নেই কোনো নিরাপত্তা রক্ষী। পাওয়া গেল না রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যক্তিকেও। মসজিদের সব দরজা খোলা। তবে ভেতরের মতো বাইরের অংশ পরিষ্কার। নেই কোনো পরিত্যক্ত জিনিস। এটি মালদ্বীপের রাজধানী মালেতে অবিস্থিত হুকুরু মিসক বা হুকুরু মসজিদ। ভারত মহাসাগরে অবস্থিত ১১৯২ সালে দ্বীপের এ দেশে এটিই সবচেয়ে পুরনো মসজিদ।

১২শ বছরের পুরনো এই মসজিদের ঐতিহ্য এবং পুরনো নির্মাণশৈলী ধরে রাখা হয়েছে। মালের প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনের এই মসজিদে নিয়মিত নামাজ হয়। এই হুকুরু মিসক মালদ্বীপের ঐতিহ্যের অংশ। ফ্রাইডে মস্ক বা শুক্রবারের মসজিদ নামে এটি পরিচিত হলেও এখন সেখানে ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন মুসল্লিরা।

এক তলা এই মসজিদটি নির্মিত হয়েছিল ১১৫৩ সালে। মালদ্বীপের তখনকার শাসক মুহাম্মদ ইবনে আবদুল্লাহ এটি নির্মাণ করেন। পরে এটিতে আধুনিকতার ছাপ লাগানো হয় ১৬৫৮ সালে। সুলতান ইব্রাহিম ইস্কান্দার এটি সংস্কার করেন। তিনি মালদ্বীপ শাসন করেন ১৬৪৮ থেকে ১৬৮৭ সাল পর্যন্ত। কাঠ আর কোরাল দিয়ে নির্মিত এই মসজিদে সাদা টিন জাতীয় জিনিস দিয়েই দেওয়া হয়েছে চালা। এই চালা আবার তিন স্তরের। এতে কোনো সিমেন্টের অস্তিত্ব নেই। সাগর থেকে কোরাল কেটে কেটে এনে এরপর তা বসিয়ে এই মসজিদ নির্মিত হয়েছে।

সব মিলিয়ে মসজিদটিতে শখানেক মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ পড়তে পারেন। মাঝে এই মসজিদে শুধু জুমার নামাজই পড়া হতো। এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ হয়।

মসজিদ চত্বরে রয়েছে বড় একটা কুয়া। সেখান থেকে লম্বা কাঠের সঙ্গে লাগানো স্টিলের পাত্র দিয়ে পানি তোলা হয় অজু করার জন্য। কাঠের হাতলওয়ালা সেই পানি উঠানোর পাত্র সাজিয়ে রাখা হয়েছে রড দিয়ে নির্মিত দুটি খুঁটিতে। এই আদি পানির উৎসের পাশেই আছে আধুনিক অজুখানা। যেখানে ট্যাপ ছেড়ে অজুর ব্যবস্থা আছে। মালদ্বীপে প্রচুর বাংলাদেশির উপস্থিতি। তাই এই অজুখানায় অন্য ভাষার পাশাপাশি বাংলায় লেখা আছেÑ ‘পানির অপচয় রোধ করুন।’ দুটি কুয়া থাকলেও একটির ব্যবহার নেই। তিনটি দরজা দিয়ে এই মসজিদের ভেতরে প্রবেশ করা যায়। ভূমি থেকে ৩-৪ ফুট উঁচু এই মসজিদ।

মসজিদের পরিসর ছোট হওয়ায় ভেতরটা অন্ধকার। তাই সব সময়ই লাইট জ¦ালিয়ে রাখতে হয়। ভেতরে কাঠের খুঁটি দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা হয়েছে নির্মিত ছাদ বা চালাকে। এখন সিমেন্টের খুঁটি লাগানো হয়েছে। কোনায় কোনায় ওয়াল ফ্যান লাগানো। মসজিদের পাশেই কবরস্থান। সেখানে বিভিন্ন সময় ইন্তেকাল করা মুসলিমরা চিরনিন্দ্রায় শুয়ে আছেন। ফলক দিয়ে চিহ্নিত করা শখানেক কবর। তবে কোনোটিতেই কোনো নাম নেই। দুটি ছোট ঘরের মতো আছে। আসলে এ দুটিও কবর। একটি সুলতান ইব্রাহিম ইস্কান্দারের। অপরটি তার পরিবারের। তাতে অবশ্য লেখা আছে সুলতানের নাম।

অন্যান্য মসজিদের মতোই হুকুরু মসজিদের ভেতরেও তাকে সাজানো কোরআন শরিফ ও বিভিন্ন ধর্মীয় বই। মসজিদের বাইরের অংশে মূল প্রবেশপথেই অবস্থিত বিশাল মিনার। সেখানে কালেমা লেখা। মিনারটি তিন তলা উঁচু হবে। এর উঁচু স্থানে লাগানো তিনটি মাইক। যা মুসল্লিদের নামাজে আসার আহ্বান শোনার জন্য। মসজিদের পেছনের অংশে খেজুর গাছসহ কয়েকটি গাছ ও একটি কবর আছে। আর মসজিদের সাদা বালির চত্বরে কয়েকটি সুগন্ধি জেসমিন ফুলের গাছ গ্রিল দিয়ে ঘেরা। বিদেশি ভিন্নধর্মী পর্যটকরা পরিদর্শনে আসতে পারেন এই মসজিদে।

ভযেস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION