শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:১৩ অপরাহ্ন
শরীফ উদ্দিন পেশোয়ার:
ইসলাম শান্তির ধর্ম, ইসলাম হচ্ছে জীবন বিধান। এটা মানুষের জীবনের প্রতিটি অংশ ছুঁয়ে গেছে। এমন কোনো দিক নেই, যা ছুঁয়ে যায়নি ইসলাম। কিন্তু সাধারণ মানুষ না বুঝে, জ্ঞানের স্বল্পতার কারণে ইসলামকে সীমিত একটা গন্ডির ভেতর নিয়ে এসেছে। মানুষ কীভাবে ঘুমাবে, কীভাবে খানা খাবে এমন বিষয়েরও বিশদ বর্ণনা রয়েছে পবিত্র কোরআন-হাদিসে। আপনি কীভাবে বা কোন তরিকায় রাস্তায় হাঁটবেন তাও বলা আছে। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘বলুন, আমাকে তো এ আদেশই দেওয়া (অহি) হয়েছে যে, তোমাদের উপাস্য (আল্লাহ) একমাত্র উপাস্য। সুতরাং তোমরা কি আজ্ঞাবহ (মুসলিম) হবে?’ সুরা আম্বিয়া : ১০৮
আয়াতে অত্যন্ত স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, প্রকৃত রহমত অর্জন হলো- তাওহিদকে (একত্ববাদ) বরণ এবং শিরক বর্জন করা। এর পরও অনেকে তার জ্ঞানের স্বল্পতা থেকে মনে করে, রাষ্ট্র পরিচালনায় যেন কোনো বিধানের কথা ইসলামে বলা নেই। এটা ভুল ধারণা। নবী কারিম (সা.) ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ও পরিচালনা করেছেন, খোলাফায়ে রাশেদিন সেই রাষ্ট্র পরিচালনার পাশাপাশি রা সম্প্রসারণেও মনোযোগী ছিলেন। আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর শাসন ছিল ন্যায়ভিত্তিক শাসন ব্যবস্থা। এখানে যার যার অধিকার ছিল রক্ষিত। দুর্বলের প্রতি কোনো অত্যাচার ছিল না সবলের পক্ষ থেকে। তদ্রুপ সাহাবাদের শাসন ব্যবস্থাও ছিল ন্যায়ভিত্তিক। ধনি গরিবে, ধর্মে ধর্মে কোনো বিরোধ ছিল না। নারী-পুরুষ, কালা-সাদা সবার অধিকার ছিল ন্যায় ও সমতাভিত্তিক। কোরআন-হাদিসের আলোকে সমাজ চলত। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এখন অনেকেই ইসলাম বলতে নামাজ, অজু, গোসল, দোয়া, মিলাদ, কিয়ামকে বোঝেন। যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কোরআন মাজিদে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘পূর্ব ও পশ্চিম দিকে তোমাদের মুখ ফেরানোই সৎকর্ম নয়, কিন্তু সৎকর্ম হলো- যে ব্যক্তি আল্লাহ, শেষ দিবস, ফেরেশতাগণ, কিতসমূহ ও নবীগণের প্রতি ইমান আনবে আর সম্পদ দান করবে তার ভালোবাসায়, আত্মীয়-স্বজন, এতিম, অভাবগ্রস্ত, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্তির জন্য এবং নামাজ প্রতিষ্ঠা করবে, জাকাত দেবে, প্রতিশ্রুতি দিয়ে তা পূর্ণ করবে, অর্থ-সংকটে, দুঃখ-কষ্টে ও সংগ্রাম-সংকটে ধৈর্য ধারণ করবে। তারাই সত্যাশ্রয়ী এবং তারাই মুত্তাকি। সুরা বাকারা : ১৭৭
খলিফা হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজিজের শাসনামলে তিনি দুপুরে নফল নামাজ না পড়ে জনগণের সমস্যার কথা শুনতেন। হজরত ওমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) রাতের বেলায় মানুষের সমস্যা খোঁজতেন এবং সমাধান দিতেন। খলিফা থাকা অবস্থায় একটা কাপড় পড়তেন। তিনি বলতেন, ফোরাত নদীর তীরে যদি একটা ছাগল ছানাও হারিয়ে যায়, তাহলে আমার ভয় হয় কেয়ামতের দিন কি জবাব দেব আল্লাহর কাছে।
ভয়েস/আআ