শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:৩৩ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

জান্নাতে নবীজির সঙ্গলাভের উপায়

মাওলানা আবদুল জাব্বার:
মুমিন-মুসলমান হিসেবে কে না চায়- জান্নাতে নবীজীর সঙ্গলাভ করতে? এর চেয়ে বড় চাওয়া আর কী হতে পারে? এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কী থাকতে পারে? সাহাবি হজরত রবিয়া আসলামি রাযিয়াল্লাহু আনহুরও একটিই চাওয়া- জান্নাতে নবীজীর সঙ্গলাভ। আর কী চাই হে রবিয়া! নবীজীর জিজ্ঞাসা। উত্তর আগেরটাই- জান্নাতে আপনার সঙ্গ।

বিশেষ সুযোগে বড় কারও কাছে মানুষ বিশেষ কিছুই চায়। আর তিনি নিজেই যদি চাইতে বলেন, তাহলে তো কথাই নেই। তবে চাইতে তো জানতে হয়। আসুন রবিয়া আসলামি (রা.)-এর কাছ থেকে শিখি- কী চাইতে হয়।

তিনি বলেন- আমি (কখনো কখনো) রাতে নবীজীর সঙ্গে থাকতাম। এক রাতে (রাতের ঘটনা) আমি তার জন্য অজু-ইস্তেঞ্জার পানির ব্যবস্থা করলাম। তিনি (খুশি হলেন।) বললেন, রবিয়া! তুমি যা খুশি চাইতে পারো। রবিয়া বলেন, তখন আমি বললাম, ‘জান্নাতে আপনার সঙ্গে থাকতে চাই।’ নবীজী বললেন, আর কী চাও? (এবারও রবিয়ার একই উত্তর। তিনি বলেন,) আমি তখন বললাম, আমার ওই একটাই চাওয়া। একথা শুনে নবীজী বললেন- তাহলে ‘কাসরাতুস সুজুদ’ তথা বেশি বেশি নফল নামাজের মাধ্যমে আমাকে এ বিষয়ে সাহায্য করো।’ -সহিহ মুসলিম : ৪৮৯

মুমিনের চাওয়াও ওই একটাই। সাহাবিদের চাওয়াও ছিল এটি। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) একদিন (নফল) নামাজ পড়ছিলেন। নবীজী এলেন। সেখানে হজরত আবু বকর (রা.) ও হজরত ওমর (রা.)-ও ছিলেন। একপর্যায়ে হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) দোয়া করতে আরম্ভ করলেন। তখন নবীজী দূর থেকেই বললেন, ইবনে মাসউদ! চাও, তুমি যা চাইবে তোমাকে দেওয়া হবে। তখন তিনি যে দোয়াগুলো করছিলেন তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল- হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে এমন ইমান চাই, যার পর কুফরের দিকে প্রত্যাবর্তন নেই। এমন নেয়ামত চাই, যা ফুরোবার নয়। আর চাই- জান্নাতে তোমার নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গ।

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) তো নিজে থেকেই এ দোয়া করেছেন। ‘ইবনে মাসউদ! চাও, তুমি যা চাইবে তোমাকে দেওয়া হবে’- নবীজীর এ বাক্য তো তিনি শোনেননি। ফলে হজরত ওমর (রা.) এ সুসংবাদ দেওয়ার জন্য তার কাছে গেলেন। গিয়ে দেখলেন হজরত আবু বকর (রা.) আগেই সেখানে পৌঁছে গেছেন। বললেন, আপনি তো ভালো কাজেই আগে থাকেন! -মুসনাদে আহমাদ : ২৫৫

কোনো কোনো বর্ণনায় আছে, হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, আমার অধিকাংশ দোয়াতেই আমি এ বাক্যগুলো দ্বারা দোয়া করি। -মুসনাদে আহমাদ : ৩৬৬২

হ্যাঁ, এ চাওয়া তখনই বাস্তবে রূপ নেবে- যখন মুমিন বেশি বেশি সিজদা তথা নফল নামাজ আদায় করবে। কারণ, হাদিস শরিফে এসেছে, বান্দা যখন সিজদা করে তখন বান্দা আল্লাহর সবচেয়ে নিকটবর্তী হয়। তো বান্দা বেশি বেশি আল্লাহর নিকটবর্তী হলে তার মর্যাদা তো বৃদ্ধি পাবেই। আর আল্লাহ যে বান্দার মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন তার গোনাহ কি বাকি রাখবেন? না, আল্লাহ তার গোনাহগুলো বাকি রাখবেন না। হাদিস শরিফে এসেছে, যে বান্দা বেশি বেশি নফল নামাজ আদায় করবে আল্লাহ তার গোনাহগুলো মিটিয়ে দেবেন।

হজরত মাদান ইবনে আবি তালহা (রহ.) বলেন, আমি নবীজীর আজাদকৃত গোলাম ছাওবান (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে জিজ্ঞেস করলাম, আমাকে এমন আমলের কথা বলে দিন, যা আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবে! তিনি বলেন, অথবা আমি বলেছি, আল্লাহর কাছে সবচেয়ে প্রিয় আমলের কথা বলে দিন। এভাবে তিন বার জিজ্ঞাসা করার পর তিনি বললেন, আমিও নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছিলাম। তখন তিনি বলেছিলেন- তুমি বেশি বেশি সেজদা করো (নফল নামাজ পড়ো)। কেননা তোমার প্রতিটি সেজদার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং একটি গোনাহ মিটিয়ে দেবেন।

হজরত মাদান বলেন, পরবর্তী সময়ে আমি হজরত আবু দারদা (রা.)-এর সঙ্গে সাক্ষাৎ হলে তাকেও এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করেছি, তিনিও একই উত্তর দিয়েছেন। -সহিহ মুসলিম : ৪৮৮

হজরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত, একবার নবীজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে বললেন, জেনে রাখো, তোমার প্রতিটি সেজদার বিনিময়ে আল্লাহ তোমার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করবেন এবং একটি গোনাহ মিটিয়ে দেবেন। -মুসনাদে আহমাদ : ২২২০

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION