শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:২৫ অপরাহ্ন
এইচ এম মনিরুজ্জামান:
হজযাত্রার প্রাচীন পথ সুরক্ষার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সৌদি আরব, বাহরাইন ও ইরাক। আরব উপদ্বীপে হাজার বছর ধরে ব্যবহৃত পথটি সুরক্ষার এই উদ্যোগ নেয় মধ্যপ্রাচ্যের তিন দেশ। এরই মধ্যে পরিকল্পনাটি নিয়ে যৌথভাবে কাজ করছে সৌদি আরবের হেরিটেজ কমিশন, বাহরাইনের আরব রিজিওনাল সেন্টার ফর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ও ইরাকের স্টেট বোর্ড অব অ্যান্টিকুইটিজ অ্যান্ড হেরিটেজ। সৌদি বার্তা সংস্থার সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সম্প্রতি হাইল অঞ্চলে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় প্রাচীন হজযাত্রা সুরক্ষার পরিকল্পনাটি উত্থাপন করা হয়। এতে ইরাকের বিখ্যাত জুবাইদা রুট থেকে মক্কা নগরী পর্যন্ত বিস্তৃত পথটি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। হাইল এলাকাটি হজযাত্রার ইতিহাসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ তা প্রাচীন হজ রুটের প্রধান স্টেশন হিসেবে ব্যবহৃত হতো, বিশেষত এখানকার ‘ফাইদ আল-আসারি’ নামক স্থানটি ইসলামের প্রাথমিক যুগে হজ ও বাণিজ্য কাফেলার গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন ছিল।
কর্মশালায় তিন দেশের ঐতিহ্যবিষয়ে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তিরা অংশ নেন এবং তারা পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। এরই মধ্যে প্রতিনিধিদলটি রানী জুবাইদা রুটের প্রতœতাত্ত্বিক স্থানের জন্য পরিচিত প্রাচীন ফাইদ শহর পরিদর্শন করে। দর্শনার্থীদের জন্য এসব স্থানের উন্নয়ন, সুরক্ষা ও যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানানো হয়। সৌদি ভিশন ২০৩০ বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আন্তর্জাতিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের অংশ হিসেবে তা বাস্তবায়িত হচ্ছে।
উল্লেখ্য যে, রানী জুবাইদা ছিলেন খলিফা হারুনুর রশীদের স্ত্রী। ১৬৫ হিজরিতে খলিফা হারুনুর রশীদের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তার আসল নাম আমাতুল আজিজ। তিনি ১৪৯ হিজরিতে ইরাকের মসুলে জন্মগ্রহণ করেন। বেড়ে উঠেন দাদা খলিফা আবু জাফর মানসুরের প্রাসাদে। রানী জুবাইদা মক্কা-মদিনা অঞ্চলের হাজী ও সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষকদের পানির কষ্ট লাঘবে দীর্ঘ একটি খাল খনন করেন। যা ‘নহরে জুবাইদা’ নামে প্রসিদ্ধ। আরাফাতের ময়দান, মুজদালিফা ও মিনার পাশ দিয়ে প্রবাহিত সেই নহরের স্মৃতিচিহ্ন আজও দেখা যায়। এ ছাড়া কুফা থেকে মক্কা ও মদিনা পর্যন্ত মরুভূমির ওপর ১৪০০ কিলোমিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করেন। এই মহীয়সী সম্রাজ্ঞী ২৬ জমাদিউল উলা ২১৬ হিজরি মোতাবেক ১০ জুলাই ৮৩১ সালে ইন্তেকাল করেন।
ভয়েস/আআ