রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবিতে ৩৪ জনের মৃত্যু: চলতি বছরেই রায়ের প্রত্যাশা

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

২০২০ সালে ২৯ জুন সদরঘাটের শ্যামবাজার এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদীতে অর্ধশতাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ ‘মর্নিং বার্ড’ ডুবে যায়। ডুবে যাওয়ার ঘটনায় লঞ্চটির ৩৪ যাত্রী মারা যান। এ ঘটনায় ময়ূর-২ লঞ্চের মালিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা করে নৌ-পুলিশ। মামলা দায়েরের ৪ বছর পার হলেও এখনও শেষ হয়নি বিচার। তবে রাষ্ট্রপক্ষের প্রত্যাশা, এই বছরই মামলাটির বিচার শেষ হবে।

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ শেখ হেলাল উদ্দিনের আদালতে বিচারাধীন। মামলাটি আসামিদের সাফাই সাক্ষ্যের জন্য রয়েছে। আগামী ৪ জুলাই মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য রয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বিমল সমাদ্দার জানান, মামলাটির শুরু থেকে রাষ্ট্রপক্ষ খুব গুরুত্বের সঙ্গে দেখছেন। মামলাটি যেন দ্রুত শেষ করা যায়, রাষ্ট্রপক্ষ সেই চেষ্টাটাই করছে। ইতিমধ্যে ৪২ জন সাক্ষীর মধ্যে ৩৬ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এরপর আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানি শেষ হয়। আসামিরা এখন নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিচ্ছেন। এরপর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হবে। তারপর আদালত এই মামলার রায় ঘোষণা করবেন। আশা করছি, এই বছরের মধ্যে মামলার রায় ঘোষণার তারিখ দেবেন আদালত।

মামলাটিতে রাষ্ট্রপক্ষের কাজ অনেকটাই শেষ পর্যায়ে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘আসামিদের জেরা আর যুক্তিতর্ক বাকি আছে রাষ্ট্রপক্ষের। সাক্ষ্যে একটা বিষয় মোটামুটি উঠে এসেছে ময়ূর-২ লঞ্চটি দ্রুত গতিতে ঘাটে যাওয়ার সময় মর্নি বার্ডকে ইচ্ছাকৃতভাবে ধাক্কা দিয়েছে। এ কারণে এতগুলো প্রাণ গেছে। রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছি। আশা করছি, তাদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে।’

এদিকে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ ছোয়াদসহ অন্যান্য আসামিপক্ষের আইনজীবী সুলতান নাসের জানান, মোসাদ্দেক হানিফ তো লঞ্চের মালিক। ওনার টাকা আছে, ব্যবসা করছেন। যাত্রীদের সেবা করেন। মালিক তো আর ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। মালিকের অপরাধ, উনি লঞ্চের মালিক। উনার সনদ আছে, তারপরও মামলায় জড়ানো হয়েছে। ট্রায়াল ফেস করছি। আশা করি সাক্ষ্য-প্রমাণের মাধ্যমে তাকে নির্দোষ প্রমাণ করতে সক্ষম হবো।

মামলাটিতে সাক্ষ্য শেষে আসামিদের আত্মপক্ষ শুনানিও হয়েছে বলে জানান এই আইনজীবী। তিনি বলেন, এখন আসামিদের সাফাই সাক্ষ্য চলছে। যুক্তিতর্ক শেষে রায় ঘোষণা করবেন আদালত। মামলায় ৩৬ জন সাক্ষী সাক্ষ্য দিয়েছে। কোনও চাক্ষুষ সাক্ষী নেই। বড় লঞ্চ ছোট লঞ্চকে ধাক্কা দিয়েছে কেউ বলেনি। আর আসামিরা এখন নিজেদের পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দিচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, লঞ্চের স্টাফ না। আবার কেউ বলছেন লঞ্চে ছিলেন না। কেউ নারায়ণগঞ্জ ছিলেন। আবার কেউ ছুটিতে ছিল। আশা করছি, আসামিদের নির্দোষ প্রমাণ করতে সক্ষম হবো।

২০২০ সালের ২৯ জুন মুন্সীগঞ্জ থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসে মর্নিং বার্ড নামের একটি লঞ্চ সদরঘাটে পৌঁছানোর আগে চাঁদপুরগামী ময়ূর-২ লঞ্চের ধাক্কায় ডুবে যায়। দুর্ঘটনায় মর্নিং বার্ডের ৩৪ যাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

ঘটনার পরের দিন ৩০ জুন রাতে নৌ-পুলিশের সদরঘাট থানার এসআই মোহাম্মদ শামসুল বাদী হয়ে অবহেলাজনিত হত্যার অভিযোগ এনে ময়ূর-২ লঞ্চের মালিকসহ সাতজনের বিরুদ্ধে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত করে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি সদরঘাট নৌ-থানা পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর শহিদুল আলম ১১ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০২২ সালের ১৮ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন আদালত।

আসামিরা হলেন, ময়ূর-২ লঞ্চের মালিক মোসাদ্দেক হানিফ ছোয়াদ, মাস্টার আবুল বাশার মোল্লা, সহকারী মাস্টার জাকির হোসেন, চালক শিপন হাওলাদার, শাকিল হোসেন, সুকানি নাসির হোসেন মৃধা, গিজার হৃদয় হাওলাদার, সুপারভাইজার আব্দুস সালাম, সেলিম হোসেন হিরা, আবু সাঈদ ও দেলোয়ার হোসেন সরকার। আসামিরা সকলেই উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। বর্তমানে সকলেই জামিনে মুক্ত রয়েছেন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION