রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

অবৈধ সম্পদ দানে পাপ বাড়ে

আতিক আবদুর রাফি:
দান-সদকা করা ইবাদত। আর ইবাদত কবুল হওয়া না হওয়ার বিষয়টি নির্ভর করে উপার্জন প্রক্রিয়ার ওপর। উপার্জন হালাল হলে দান-সদকাসহ যে কোনো ইবাদত গৃহীত হয়। আর উপার্জন হারাম হলে কোনো ইবাদতই গৃহীত হয় না। কেউ যদি অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদ সওয়াবের নিয়তে দান করে তাহলে তা আল্লহার নিকট কবুল তো হবেই না, বরং এতে আরো বেশি গুনাহ হবে।

হজরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কোনো বান্দা হারাম পদ্ধতিতে উপার্জিত অর্থ দান-সদকা করলে তা কবুল হবে না এবং তা নিজ কাজে ব্যয় করলে বরকত হবে না। আর ওই ধন তার উত্তরাধিকারীদের জন্য রেখে গেলে তা তার দোজখের পুঁজি হবে।’ (মিশকাত)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) বলেন, ‘বান্দা হারাম পথে উপার্জন করবে, এরপর তা থেকে আল্লাহর পথে খরচ করবে এবং তাতে বরকত দেওয়া হবে, এমন ধারণা অমূলক। বরং ওই ব্যক্তি মৃত্যুর পর সেই সম্পদ রেখে গেলে তা তাকে আরও বেশি জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাবে।’ (মুসনাদে আহমাদ ৩৬৭২)

হাসরের মাঠে আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক বান্দাকে পাঁচটি প্রশ্ন করবেন। হজরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘সেই দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে কোনো আদম সন্তান তার পা এক কদমও নাড়াতে পারবে না। প্রশ্নগুলো হলো- ১. তুমি সারা জীবন কোন পথে কাটিয়েছ? ২. যৌবনকালে কোনো আমল করেছ? ৩. ধন-সম্পদ কোন পথে উপার্জন করেছ? ৪. কোন পথে ধন-সম্পদ ব্যয় করেছ? ৫. দ্বীন ইসলাম সম্পর্কে যতটুকু জেনেছ, সে অনুযায়ী কতটুকু আমল করেছ?’ (তিরমিজি)

কাসেম বিন মুখায়মিরাহ (রহ.) বর্ণনা করেন, হজরত রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো পাপের পথে সম্পদ উপার্জন করল, অতঃপর তা আত্মীয়তা রক্ষায় খরচ করল বা সদকা করল অথবা তা আল্লাহর রাস্তায় খরচ করল; তাহলে (কিয়ামতের মাঠে) এর সবকিছুই একত্রিত করা হবে। অতঃপর তা জাহান্নামের আগুনে নিক্ষেপ করা হবে।’ (আবু দাউদ ১৩১)

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-কে একবার জিজ্ঞাসা করা হলো, যে ব্যক্তি এখন নেক আমল করছে, তবে আগে জুলুম-অত্যাচার করত এবং হারাম উপার্জন করত। এখন সে নেক দিলে তওবা করে আগের সেই সম্পদ দিয়ে হজ করল, গোলাম আজাদ করল এবং আল্লাহর রাস্তায় দান-সদকা করল (তার ব্যাপারে আপনি কী বলেন?)। জবাবে তিনি বললেন, ‘নিশ্চয়ই অপবিত্রতা আরেকটি অপবিত্রতা দূর করতে পারে না।’ (মুসনাদে বাজ্জার ৩৯৩২) ‘অপবিত্রতা আরেকটি অপবিত্রতা দূর করতে পারে না’ এর অর্থ হলো, আলোচনায় উল্লিখিত ব্যক্তি আগে হারাম পন্থায় উপার্জন করেছে, এটা হচ্ছে এক অপবিত্রতা। অতঃপর তওবা করে সেই অপবিত্র সম্পদ দান করেছে পূর্বের পাপ মুক্তির জন্য, এটা আরেক অপবিত্রতা।

যারা হারাম পথে সম্পদ উপার্জন করে আর মনে মনে ভাবে, বৃদ্ধ বয়সে এখান থেকে কিছু সম্পদ আল্লাহর রাস্তায় দান করে দেব। ব্যস, সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে! তাদের উচিত, হজরত রাসুল (সা.)-এর উল্লিখিত হাদিসগুলো ভালোভাবে স্মরণ রাখা।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION