বুধবার, ৩০ Jul ২০২৫, ০৫:১৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
কোনো ধরনের নিরাপত্তার সমস্যা নেই ৫ আগস্ট : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ডাকসু নির্বাচন: নির্বাচন ঘিরে আন্দোলনপ্রসূত ছাত্রনেতাদের নাম আলোচনায় মহেশখালীতে বিশ্ব মানব পাচার প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে র‍্যালি ও আলোচনা সভা কক্সবাজারের র‌্যাবের অভিযান: দেশি-বিদেশি অস্ত্র গ্রেনেড মাইন সহ রোহিঙ্গা শীর্ষ সন্ত্রাসী শফি ডাকাত গ্রেফতার পর্যটকদের স্বাস্থ্যঝুঁকি নিরসনে সমুদ্রসৈকতে ৪ দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা চকরিয়ায় বৃদ্ধ গরু ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা জুলাই মাসের ২৭ দিনে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্যান্স এলো ৫ আগস্টের মধ্যে জুলাই সনদ ও ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে: নাহিদ ইসলাম নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ করতে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশ বিএনপি নেতা ছৈয়দ নুর স্মরণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

নবীজির আদর্শ অনুসরণের গুরুত্ব

মো. আবদুর রহমান:

যুগে যুগে যেসব মহামানব দুনিয়াতে আবির্ভূত হয়ে অকাতরে নিজের জীবন উৎসর্গ করে মানবজাতিকে ইহকালের কল্যাণ ও পরকালের মুক্তির পথ দেখিয়ে পৃথিবীকে ধন্য করেছেন, হজরত মুহাম্মদ (সা.) ছিলেন তাদের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। তিনি মানবজাতিকে সত্য পথের সন্ধান দেওয়ার জন্য ইসলামের আদর্শ ও সত্যবাণী প্রচার করে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ও সর্বশেষ নবী ও রাসুল। তিনি মানুষের আলোর দিশারী। মানুষের মুক্তি, শান্তি, শিক্ষা ও কল্যাণের জন্য তিনি আজীবন সাধনা করেছেন। তিনি সর্বগুণে গুণান্বিত একজন শ্রেষ্ঠ মহাপুরুষ।

বিশ্বের সব মানুষের আদর্শ হিসেবে তিনি পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন। মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শ ছিল সবার জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। শিক্ষিত ও উন্নত জাতির জন্য এমন আদর্শের প্রয়োজন। সুতরাং মুসলিম নারী-পুরুষ সবাইকে হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শের অনুসারী হতে হবে। পৃথিবীর সব মানুষ ও সব কিছুর ওপর তার আদর্শকে স্থান দিয়ে সেই অনুযায়ী জীবন চালাতে হবে। আল্লাহতায়ালার ভালোবাসা অর্জনও মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসরণ ও অনুকরণ ছাড়া সম্ভব নয়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে নবী, আপনি লোকদের বলে দিন, যদি তোমরা প্রকৃতই আল্লাহকে ভালোবাস, তাহলে তোমরা আমাকে অনুসরণ করো। তবেই আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহসমূহ মাফ করে দেবেন। আল্লাহতায়ালা অত্যন্ত ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।’ (সুরা আলে ইমরান ৩১)

তাই যে ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা.)-কে অনুসরণ করে সে মূলত মহান আল্লাহকেই অনুসরণ করে। বস্তুত একমাত্র মুহাম্মদ (সা.)-এর আনুগত্য ও অনুকরণের মাধ্যমেই কেবল আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টি, মুক্তি ও হেদায়েত পাওয়া সম্ভব। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আল্লাহ ও তার রাসুলের আনুগত্য করো, যদি তোমরা ইমানদার হয়ে থাকো।’ (সুরা আনফাল ১) এতেই রয়েছে ইহকালীন শান্তি ও পরকালীন মুক্তি।

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘যারা আল্লাহ ও রাসুলের অনুগত হবে জান্নাতেও তারা রাসুলের সঙ্গে থাকবে। তাদের ওপর আল্লাহ বিশেষ অনুগ্রহ করেছেন। আর তারা হলেন নবী, সিদ্দিক, শহীদ ও সৎকর্মশীল বান্দারা। সঙ্গী হিসেবে তারা কতই না চমৎকার।’ (সুরা নিসা ৬৯)

কাজেই আল্লাহর নির্দেশ পালন করার সঙ্গে মুহাম্মদ (সা.)-এর আদেশও পালন করতে হবে এবং তার নিষেধাজ্ঞা মেনে চলতে হবে। বিশেষ করে মুহাম্মদ (সা.)-এর সুন্নত পালনের ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগী হতে হবে।

সুন্নতের আভিধানিক অর্থ হলো পথ ও আদর্শ। পরিভাষায় হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সব নির্দেশ, কথা, কাজ ও সমর্থনকে সুন্নত বলা হয়। আর এই সুন্নতসমূহকে নিজেদের জীবনে ধারণ ও পালন করার অর্থই হলো নবীর সুন্নতের অনুসারী হওয়া বা এক কথায় মুহাম্মদ (সা.)-এর অনুসারী হওয়া। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নত এবং আমার হেদায়েতপ্রাপ্ত খলিফাদের সুন্নত অনুসরণ করবে। তোমরা তা কঠিনভাবে আঁকড়ে ধরবে এবং মাড়ির দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরবে। আর তোমরা ধর্মের নামে নতুন নতুন বিষয় সৃষ্টি করা থেকে সাবধান থাকবে। কেননা প্রত্যেক নতুন সৃষ্টিই বিদয়াত এবং প্রত্যেক বিদয়াতই ভ্রষ্টতা।’ (সুনানে আবু দাউদ) জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আর প্রত্যেক ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম।’ (নাসায়ি)

হজরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তি ফেতনা-ফ্যাসাদের জামানায় সুন্নতের ওপর অবিচল থাকবে, সে শত শহীদের সওয়াব পাবে।’ তিনি আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার সুন্নতের হেফাজত (পালন) করবে, আল্লাহতায়ালা তাকে হেফাজত করবেন এবং চারটি জিনিস দ্বারা তাকে সম্মানিত করবেন। এক. সব নেককার লোকের অন্তরের মধ্যে তার মহব্বত সৃষ্টি করে দেবেন। দুই. গুনাহগারদের অন্তরের মধ্যে তার ভয় ঢুকিয়ে দেবেন। তিন. রিজিকের প্রশস্ততা দান করবেন। চার. দ্বীনের ওপর অবিচল থাকার তওফিক দান করবেন।

মুহাম্মদ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নতকে অনুসরণ করে, তারাই মূলত আমাকে ভালোবাসে। আর যে আমাকে ভালোবাসবে সে অবশ্যই আমার সঙ্গে জান্নাতে প্রতিবেশী হবে।’ (তিরমিজি) সুতরাং মুহাম্মদ (সা.)-কে নিজের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতে হবে। তাহলে আমরা তার সুপারিশ লাভ করে জান্নাতের বাসিন্দা হতে পারব। যার ভেতর মুহাম্মদ (সা.)-এর ভালোবাসা থাকবে না, সে কোনো দিন প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না। আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ পর্যন্ত আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা, সন্তানসন্ততি ও সব মানুষের চেয়ে বেশি প্রিয় না হব।’ (সহিহ বুখারি)

পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নবী মুমিনদের কাছে তাদের জীবনের চেয়েও বেশি প্রিয়।’ (সুরা আহজাব ৬) এক বর্ণনায় এসেছে, রাসুল (সা.) ওমর (রা.)-কে বললেন, ‘হে ওমর! তুমি কি আমাকে তোমার জীবনের চেয়ে বেশি ভালোবাস? জবাবে ওমর (রা.) বললেন, হে নবী! আমি আমার সম্পদ, সন্তান, বাবা-মা সবার চেয়ে আপনাকে বেশি ভালোবাসি। তবে আমার জীবনের চেয়ে বেশি এখনো আপনাকে ভালোবাসতে পারিনি। রাসুল (সা.) বললেন, তাহলে মুমিন হতে তোমার এখনো অনেক দেরি আছে। এ কথা শুনে ওমর (রা.) বললেন, হে আল্লাহর রাসুল! এ মুহূর্ত থেকে জীবনের চেয়েও আপনাকে বেশি ভালোবাসি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, এখন তুমি মুমিন হতে পেরেছ। (সহিহ বুখারি)

প্রকৃতপক্ষে সৃষ্টির মধ্যে রাসুল (সা.)-ই সর্বাধিক ভালোবাসা পাওয়ার হকদার। কাজেই সবার চেয়ে তাকেই অধিক ভালোবাসা কর্তব্য। এ ভালোবাসা হবে হৃদয় নিংড়ানো। রাসুল (সা.)-এর অনুসরণ ও অনুকরণের মধ্য দিয়ে এর বাস্তবায়ন ঘটবে। বস্তুত যাবতীয় আমল তথা পোশাক, পানাহার, আচার-অনুষ্ঠান, এক কথায় জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে রাসুল (সা.)-কে অনুকরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে তার ভালোবাসা ও মহব্বতের প্রকৃষ্ট নিদর্শন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION