মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৮:২৯ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
চীনের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। একই প্রকল্পে বেইজিংয়ের আগ্রহ থাকায় এই বছরের শেষের দিকে চীনের একটি কারিগরি বিশেষজ্ঞ দল ঢাকায় আসবে। এই বিশেষজ্ঞ দল তিস্তা প্রকল্পের সম্ভাবনা যাচাই করবে।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন ও পররাষ্ট্র সচিব আসাদ আল সিয়ামের বৈঠক সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক করেন চীনের রাষ্ট্রদূত। বৈঠকে তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নে চীনের কাছে প্রায় ৫৫ কোটি ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে চীন এই প্রকল্পের বিষয়ে আরও আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এ ছাড়া বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরের পর নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর হালনাগাদ তথ্য নিয়ে আলোচনা হয়েছে। পাশাপাশি চীনের অর্থায়নে বাংলাদেশে হাসপাতাল নির্মাণসহ অন্যান্য প্রকল্পের বিষয়গুলোও ছিল আলোচনায়।
চীন থেকে জুলাই আন্দোলনের পর বাংলাদেশে চীনের বিনিয়োগ প্রায় ৮০ কোটি ডলারের ওপর এসেছে, যা সবচেয়ে বেশি বলেও জানিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।
গত মার্চে প্রধান উপদেষ্টার চীন সফরের পর তিস্তা প্রকল্প এগিয়ে নিতে কাজ শুরু করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় পরিকল্পনা কমিশনে মে মাসে একটি চিঠি দেয়। তাতে তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়নে চীনের ঋণ নেওয়ার বিষয়টি জানায়। পরে গত জুলাইয়ে চীনা দূতাবাসে চিঠি পাঠায় ইআরডি। চিঠিতে ‘কম্প্রিহেনসিভ ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড রেস্টোরেশন অব তিস্তা রিভার প্রজেক্ট’ বাস্তবায়নে চীনের কাছে ৫৫ কোটি ডলার চেয়েছে বাংলাদেশ। ঢাকা চলতি বছরের মধ্যেই এ প্রকল্পের আর্থিক চুক্তি সই করতে চায়। এ লক্ষ্যে কাজ এগিয়ে নিচ্ছে।
তিস্তা প্রকল্পের প্রথম পর্যায় বাস্তবায়নে ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ডলার। এর মধ্যে চীন থেকে ঋণ চাওয়া হয়েছে ৫৫ কোটি ডলার। বাকিটা করা হবে সরকারি অর্থায়নে। ২০২৬ সালে এ প্রকল্পের কাজ শুরু করে ২০২৯ সালে শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
এদিকে চীন দূতাবাস আজ মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জানিয়েছে, বৈঠকে উভয় পক্ষের মধ্যে চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক, বাস্তব সহযোগিতা, গ্লোবাল গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভ এবং অভিন্ন উদ্বেগের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে গভীর মতবিনিময় হয়েছে।
বৈঠকে রাষ্ট্রদূত ইয়াও বলেন, ‘চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক মসৃণ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা ও গভীর বন্ধুত্বের মাধ্যমে উন্নয়নের একটি শক্তিশালী গতি বজায় রেখেছে। দুই দেশের নেতারা যে গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে পৌঁছেছে তা ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়নে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে প্রস্তুত রয়েছে। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং প্রবর্তিত গ্লোবাল গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভ (জিজিআই) বিশ্বব্যাপী প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি ‘চীনা সমাধান’ সরবরাহ করে। আরও ন্যায়সঙ্গত ও ন্যায়সঙ্গত বৈশ্বিক সুশাসন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে অন্যান্য দেশের সঙ্গে জিজিআই কাঠামোর আওতায় সহযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে বাংলাদেশকে স্বাগত জানাই।
পররাষ্ট্র সচিব সিয়াম বলেন, ‘বাংলাদেশের পক্ষ প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের উদ্যোগে নেওয়া গ্লোবাল গভর্ন্যান্স ইনিশিয়েটিভকে স্বাগত ও প্রশংসা করে। বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ইতিবাচক অগ্রগতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে ব্যবহারিক সহযোগিতা জোরদার করার আগ্রহ পুনর্ব্যক্ত করেছে, যাতে দুই দেশের জনগণের জন্য আরও সুবিধা হয়।’
ভয়েস/জেইউ।