শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ০২:১২ অপরাহ্ন
ধর্ম ডেস্ক:
সৃষ্টিকর্তা দয়াময় আল্লাহতায়ালার সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে আসে পবিত্র মাহে রমজান। রমজান মাস মালিকের সঙ্গে বান্দার সম্পর্ক বৃদ্ধির রাস্তা দেখিয়ে দেয়। মহান আল্লাহর কাছে প্রিয় হওয়া ও গোনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ রমজান মাস। তাই দিনে রোজা ও রাতে নামাজের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী! আপনি রাতের কিছু অংশে তাহাজ্জুদ আদায় করুন এটা আপনার জন্য অতিরিক্ত। রাত জাগরণ হলো আল্লাহর সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি ও ঘনিষ্ঠ করার অন্যতম উপায়। আধ্যাত্মিক, মানসিক মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে রাত্রিকালীন ইবাদত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। রাত্রিকালীন ইবাদতের গুরুত্ব বিবেচনা করেই মহান আল্লাহ নবী কারিম (সা.) কে এই আদেশ দিয়েছেন।
রমজান মাসে রাত্রি জাগরণ করা অধিক গুরুত্বপূর্ণ ও সওয়াবের কাজ। এ জন্য রাসুল (সা.) উম্মতকে ব্যাপকভাবে তাগাদা দিয়েছেন। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইমান (বিশ্বাস) ও ইহতেসাবের (প্রত্যাশ) সঙ্গে রাত্রিকালীন ইবাদত করে তার পূর্ববর্তী গোনাগুলোকে ক্ষমা করে দেওয়া হয়। রাতে বেশি জাগরণের জন্য দিনে ঘুমিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.)। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, নবী কারিম (সা.) বলেন, তোমরা সাহরি খেয়ে দিনের রোজার ওপর এবং দিনে ঘুমিয়ে রাত্রি জাগরণের ওপর সাহায্য গ্রহণ করতে পার। এ মাসের রাতগুলোকে যথাযথভাবে কাজে লাগাতে করণীয় হলো
নামাজ আদায় : ইমানের পরেই মহান আল্লাহর কাছে প্রিয় আমল হলো- নামাজ। মানুষের নৈতিক এবং চারিত্রিক সংশোধনের জন্য নামাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এ মাসে ফরজ ইবাদতের পাশাপাশি নফল ইবাদত হিসেবে নামাজের গুরুত্ব বৃদ্ধি করা অপরিহার্য।
কোরআন তেলাওয়াত ও অধ্যয়ন : রমজান মাস কোরআন নাজিলের মাস, তাই এ মাসে কোরআন তেলাওয়াত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এর অর্থ-ব্যাখ্যা জানার চেষ্টা করা ইমানদার হিসেবে একান্ত কর্তব্য।
সার্বক্ষণিক দোয়া ও জিকির করা : ইবাদতের মাস হিসেবে মুমিনদের জন্য রমজানে নফল ইবাদতগুলো গুরুত্বসহকারে পালন করা প্রয়োজন। কেননা এ মাসের একটা নফল অন্য মাসের ফরজের সমান।
শেষ রাতের আমল : মহান আল্লাহর কাছে রাতের শেষ প্রহরে ধর্ণা দেওয়া, নিজের ভুলের জন্য অনুশোচনা ও রুনাজারি করা। যেহেতু রমজান মাস গোনাহ মাফের সুবর্ণ সুযোগ, তাই এ মাসে গোনাহ মাফের জন্য আল্লাহর কাছে রাতের শেষাংশে অনুশোচনা ও তওবা করা।
কাজের পর্যালোচনা এবং নিজেকে সংশোধন করা : মুমিন তো তারা, যারা নিজেকে সংশোধন করতে পারল। তাই সংশোধনের নিয়তে নিজের কর্মগুলো পর্যালোচনা করে নিজেকে সংশোধন করা আবশ্যক।
শবেকদর তালাশ করা : লাইলাতুল কদর হলো- হাজার মাসের চাইতে উত্তম। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, হজরত রাসুলুল্লাহ (সা.) রমজানের শেষ দশদিন ইতিকাফ করতে এবং বলতেন তোমরা রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর খোঁজ করো।
এ জন্য সবার উচিত রমজানের রাত্রিগুলো পরিপূর্ণভাবে ইবাদত-বন্দেগি, জিকির-আজকার, কোরআন তেলাওয়াত, আল্লাহর নিকট কান্নাকাটি ও মাগফিরাত কামনা করে অতিবাহিত করা।
ভয়েস/আআ