শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ০২:৫৪ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

পুলিশ সদস্য পারভেজ হত্যা মামলার কার্যক্রম ৭ বছরে হয়নি শেষ

ভয়েস প্রতিবেদক:

সাত বছর পেরিয়ে গেলেও সাক্ষ্যগ্রহণেই আটকে আছে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের সদস্য পারভেজ হত্যা মামলার বিচার কাজ। মামলার দীর্ঘসূত্রতা নিয়ে একে অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছে রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষ। রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, চলতি বছরেই শেষ হবে এ মামলার বিচারকাজ।

টুরিস্ট পুলিশের সদস্য পারভেজ হত্যা মামলায় ৭ বছর আগে সাক্ষ্যগ্রহণের কথা থাকলেও তদন্ত ঠিমের প্রতিবেদন ও সাক্ষীর অভাবে আটকে আছে বিচার কার্যক্রম। এখনো এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহন হয়নি।সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত বাদী কনস্টবল রাজিব চাকমা ছাড়া কারো সাক্ষ্য গ্রহন হয়নি। এ মামলার দীর্ঘসূত্রিতার জন্য রাষ্ট্রপক্ষের ব্যর্থতাকেই দায়ী করছেন আসামিপক্ষ।

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, চলতি বছরেই শেষ হবে এমামলার বিচারকাজ। নিহত টুরিস্ট পুলিশের কনস্টেবল পারবেজ হত্যা মামলা আমি নিজ উদ্যোগে লড়ছি। এবং সাক্ষীর অভাব ও তদন্ত কর্মকর্তাদের সময় নেওয়ার কারণে সময় লেগেছে বলে জানান রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী। এ বছরের মধ্যেই আমরা এ মামলার রায় দিতে পারবো। যতদ্রুত সম্ভব কক্সবাজার অতিরিক্ত দায়রাজজ আদলতে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ করা হবে।

২০১৫সালে ২৩জুলাই কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে লাবণী পয়েন্ট ঝাউবনে এক পর্যটকের কাছ থেকে মালামাল ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছিল ছিনতাইকারীরা।এইসময় সাদা পোশাকে দায়িত্বরত পুলিশ কনস্টেবল পারভেজ ছিনতাইকারীদের ধরতে এগিয়ে গেলে পেছন থেকে তাকে ছুরিকাঘাত করা হয়। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তাৎক্ষণিক কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ জোনের পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার জহিরুল ইসলাম অভিযান চালিয়ে ২জনকে আটক করে। আটকরা হল কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া এলাকার আবুল কালামের ছেলে আবু তাহের (২৮) ও শাহ আলমের ছেলে আবদুল মালেক (২৪)।

না প্রকাশা অনিচ্ছুক আদালতের এককর্মকর্তা জানান,এইরহত্যাকাণ্ডের সুনির্দিষ্ট কোনো প্রত্যক্ষদর্শী নেই । ইতিমধ্যে এই মামলার কয়েকজন আসামি জামিনে বেরিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে।

কনেস্টেবল পারভেজ হত্যা নিয়ে কি বলছে টুরিস্ট পুলিশ:

টুরিস্ট পুলিশ জানায়, পারভেজ হত্যা মামালার আসামীদের ধরতে তৎপরতা চালাচ্ছে । আসামীরা পলাতক থাকায় তাদের আটক করা সম্ভব হচ্ছে না।

এই বিষয়ে কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশ জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানান, ১২জুন পারভেজ হত্যা মামলার বাদী কনস্টবল রনজিদ চাকমা সাক্ষ্য দেন। বাকী সক্ষীদেরও খোঁজ করা হচ্ছে। আমরাও আসামীদের আটকের চেষ্টা চালাচ্ছি।

ঝাউবনে এখনো সক্রিয় ছিনতাইকারীরা:

পারবেজ হত্যার পর এখনো ছিনতাইকারীদের দখলে লাবনী পয়েন্টের ঝউবন এলাকা।শহরে ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে চলেছে। যার ফলে স্থানীয় ও পর্যটকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে কক্সবাজার শহরে বড় ধরনের চারটি ছিনতাইয়ের ঘটনায় ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন মহলকে। নানা কৌশলে প্রায় অর্ধশত স্পটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দাগি অপরাধীসহ ছিনতাইকারী চক্র।

অনুসন্ধান করে দেখা গেছে, পর্যটন শহর কক্সবাজার, হোটেল-মোটেল জোন ও সমুদ্র সৈকতে অন্তত শতাধিক পেশাদার ছিনতাইকারী ও ছিনতাই চক্রের টমটম পার্টি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে শহরের দুর্গম এলাকায় আস্তানা গড়ে শহরজুড়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে এই চক্রটি। বিশেষ করে কক্সবাজার শহরের ঘোনারপাড়া, মোহাজেরপাড়া, বাসটার্মিনাল এলাকা, বাদশাঘোনা, হালিমা পাড়া, সমিতি পাড়া, সার্কিট হাউস এলাকা, হোটেল মোটেল জোন, লাইটহাউস পাড়া, সাহিত্যিকা পল্লী, পাহাড়তলী, দক্ষিণ রুমালিয়ারছড়া, পেশকারপাড়া ও কলাতলী আদর্শ গ্রাম কেন্দ্রিক বেশ ক’টি ছিনতাইকারী চক্র বিভিন্ন আশ্রয়-প্রশ্রয়ে সক্রিয় রয়েছে। ছিনতাইকারী দলে দলে বিভক্ত হয়ে সমুদ্র সৈকতসহ শহরের বিভিন্ন এলাকার নির্জন স্থানে ছিনতাই করে থাকে। বিশেষ করে ভোরে ও রাতে এরা তৎপর থাকে সবচেয়ে বেশি। আবার পর্যটন মৌসুমে এরা শহরের সমুদ্র সৈকত, ডায়াবেটিকস পয়েন্ট ও ঝাউবাগানসহ বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ওৎ পেতে থাকে। অন্য সময় এরা বৃহত্তর পাহাড়তলী, হোটেল মোটেল জোন, রুমালিয়ারছড়া ও ঘোনারপাড়ায় পথচারীদের কাছ থেকে মোবাইল ফোনসহ সর্বস্ব ছিনিয়ে নিয়ে থাকে। কেউ বাধা দিলে তাকে ছুরিকাঘাত করে।

কি বলছে সচেতন মহল :

কক্সবাজার শহরবাসীরা বলছেন, যেখানে পুলিশ সদস্য পারভেজ হত্যার পরেও ছিনতাইকারী প্রতিরোধ হয়নি সেখানে আমাদের জানমালের নিরাপত্তা কোথায়।

কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের সদস্য সচিব এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, যেখানে ছিনতাইকারীদের হাতে একজন পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ৫ বছর ধরে বিচার কাজ ঝুলে আছে সেখানে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছে তাদের বিচার চাওয়া দুঃস্বপ্নের মতো।
অপরাধীদের নজরদারি করার পাশাপাশি বিচারের সঠিক প্রয়োগ না হলে অপরাধীরা নানা অপরাধে উৎসাহিত হবে।
পুলিশ সদস্য পারভেজ হত্যায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত সময়ে দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হলে পর্যটন শহরে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কিছুটা হলেও কমবে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কি বলছে :

জেলা পুলিশ দাবি করেন, শহরের দাগি ও চিহ্নিত অপরাধীদের বহুবার আটক করা হয়েছে। এসব অপরাধীরা সহসাই জামিনে বেরিয়ে আসার কারণে কিছু বিছিন্ন ঘটনা ঘটছে।

কনস্টেবল পারভেজ হত্যার বিষয়ে জানতে কক্সবাজার জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম বলেন, আসামীদের আটকের জন্য আমরা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি আসামিরা আত্মগোপনে থাকায় তাদের আটক করা সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION