শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

রোজায় ডায়াবেটিস রোগীর ঝুঁকি

স্বাস্থ্য ডেস্ক:
পবিত্র রমজান মাস সমাগত। প্রত্যেকটি প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের রমজানের রোজা পালন করা ফরজ। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানমাত্রই রোজা রাখেন। কিন্তু যারা ডায়াবেটিস রোগী, তারা দ্বিধাদ্বন্দ্বে থাকেন রোজা রাখতে পারবেন কি না? অথচ কিছু বিশেষ সতর্কতা, নিয়ম আর শৃঙ্খলা মেনে চললে বেশির ভাগ ডায়াবেটিস রোগীই রোজা রাখতে পারেন। ডায়াবেটিস রোগীদের সম্ভাব্য ঝুঁকি নিয়ে করা বৈজ্ঞানিক গবেষণাগুলো বিশ্লেষণ করে ডায়াবেটিস রোগীদের ঝুঁকির মাত্রার ওপর ভিত্তি করে চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। লো-রিস্ক, মোডারেট রিস্ক, হাই-রিস্ক এবং ভেরি হাই-রিস্ক গ্রুপ।

খাদ্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা, ওষুধ সেবন বা ইনসুলিন গ্রহণের মাধ্যমে যাদের ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে আছে, তারা লো-রিস্ক এবং মোডারেট রিস্ক গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত। বয়স্ক, কিডনির জটিলতায় আক্রান্ত, স্বল্পমেয়াদি অন্য অসুস্থতায় আক্রান্ত, বারবার রক্তে গ্লুকোজ কমে যাওয়ার প্রবণতা, হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের শিকার ডায়াবেটিস রোগীদের হাই ও ভেরি হাই-রিস্ক গ্রুপে ফেলা হয়েছে। লো-রিস্ক ও মোডারেট রিস্ক গ্রুপের ডায়াবেটিস রোগীরা রোজার শুরুতে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই রোজা রাখতে পারেন। অন্যদিকে হাই ও ভেরি হাই-রিস্ক গ্রুপের লোকদের রোজা রাখতে হলে ডাক্তারের নিবিড় পর্যবেক্ষণে থেকেই রাখতে হবে।

ঝুঁকিতে কারা

 বেশি বয়স্ক বা ভগ্ন স্বাস্থ্যের রোগী।

 গত তিন মাসের মধ্যে রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা অতিরিক্ত কমা (হাইপোগ্লাইসেমিয়া) বা অধিক বেড়ে গিয়ে কিটো এসিডোসিস বা হাইপার অসমোলার স্টেটের ইতিহাস থাকলে।

 ঘন ঘন রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা কমে গেলে।

 হাইপোগ্লাইসেমিয়া বুঝতে অক্ষম ব্যক্তি।

 অনিয়ন্ত্রিত টাইপ-১ ডায়াবেটিস বা দীর্ঘদিন অনিয়ন্ত্রিত টাইপ-২ ডায়াবেটিস।

 গর্ভবতী ডায়াবেটিস মা বা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হলে।

 দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা (স্টেজ ৪ ও ৫), ডায়ালাইসিসের রোগী।

 হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক হলে।

 দিনে একাধিকবার ইনসুলিন গ্রহণ করলে।

 মারাত্মক ইনফেকশন বা যক্ষ্মা, ক্যানসার থাকলে।

তা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি কিডনি জটিলতা (স্টেজ-৩), স্থিতিশীল হৃদরোগ বা স্ট্রোক, স্তন্যদাত্রী মা, অধিক কায়িক পরিশ্রমকারী ডায়াবেটিস রোগীদের রোজা রাখার ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। সাম্প্রতিককালে বিভিন্ন গবেষণায় পাওয়া পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, নিয়মতান্ত্রিক রোজা রাখলে ডায়াবেটিস রোগীরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তুলনায়

উপকৃতই হন বেশি।

চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিয়মতান্ত্রিক রোজা না রাখলে বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ১. রক্তে সুগারের স্বল্পতা বা হাইপোগ্লাইসেমিয়া। ২. রক্তে সুগারের আধিক্য বা হাইপারগ্লাইসেমিয়া। ৩. ডায়াবেটিস কিটো এসিডোসিস এবং ৪. পানিশূন্যতা বা ডি-হাইড্রেশনে ভুগতে পারেন।

যেসব ডায়াবেটিস রোগী ঝুঁকির কথা জেনেও ধর্মীয় কারণে রোজা রাখতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ, তারা রোজা শুরুর আগেই চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে নেবেন। এতে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা এড়িয়ে রোজা পালন বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সম্ভব। তাই ডায়াবেটিস রোগীরা আজই একজন ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। পরামর্শ মেনে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে এনে রমজানের রোজাগুলো নির্বিঘেœ পালন করুন। আর যেকোনো সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ডায়াবেটিস ছাড়া অন্য যেকোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগ হলেও চিকিৎসকরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে রোজা রাখা বা না রাখার ব্যাপারে অবশ্যই যথাযথ নির্দেশনা দেবেন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION