মঙ্গলবার, ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:২৬ পূর্বাহ্ন
এম এ সাত্তার
চার্জ গঠনের মাত্র তিন কার্যদিবসে বিচারকাজ শেষ করে (জিআর ৪৪০/২১ রামু) মামলার রায় দিয়ে দ্রুতবিচারের নজির সৃষ্টি করলেন কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহম্মদ খোন্দকারের আদালত।
জানা গেছে, বিগত ১৩ আগস্ট ২০২১ তারিখ আসামি রফিক উদ্দিন পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নিজ পিতা অলি আহমদ, নিজ মাতি আলিমুন্নেসা, নিজ সহোদর গিয়াস উদ্দিনের স্ত্রী শাহিনা আক্তার, আপন দুই ভাতিজা আরিয়ান ও হাসান কে হত্যার উদ্দেশ্য দা দিয়ে এলোপাতারি কুপিয়ে গুরুতর জখম করেন। এ ঘটনা মামলার চার্জ গঠনের ৩ কার্যদিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করে এক যুগান্তকারী নজির সৃষ্টি করেন কক্সবাজার জেলার বিজ্ঞ অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খোন্দকার।
১৩ ফেব্রুয়ারি (মঙ্গলবার) আসামি রামু জোয়ারিয়া নালা, ৩ নম্বর ওয়ার্ড, নন্দাখালি মুরাপাড়া গ্রামের অলি আহাম্মদের পুত্র রফিক উদ্দিনকে দোষী সাব্যস্ত করে ফেনাল কোড ৩২৪ ধারায় তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ড সহ পাঁচ হাজার টাকা অর্থদন্ড, অনাদায়ে একমাস বিনাশ্রম কারাদণ্ড। ফেনাল কোড ৩২৬ ধারায় সাত বছরের শশ্রম কারাদণ্ড সহ ১০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড। ফেনাল কোডের ৩০৭ ধারায় ৪ বছরের শশ্রম কারাদণ্ড সহ দশ হাজার টাকা জরিমানা, আদায়ের তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খন্দকার। সেইসঙ্গে তাকে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আসামি রফিক আহমেদের স্ত্রী শাহেনা আক্তারের বিরুদ্ধে ফেনাল কোড ১৮৬০ এর ১১৪ ধারায় অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করা হয়।
অভিযোগে বলা হয়েছিল, বিগত ১৩ আগস্ট ২০২১ আসামির রফিক উদ্দিন তার নিজ পিতা অলি আহাম্মদ, মাতা আলিমুন্নেছা, সহোদর গিয়াস উদ্দিন এর স্ত্রী শাহিনা আক্তার, ভাতিজা আরিয়ান ও হাসান কে হত্যার উদ্দেশ্য দা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম করেন।
এ ঘটনার পর ভিকটিম শাহিনা আক্তারের পিতা বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নম্বর ৪৪০/২১(রামু)। এসআই কামরুল ইসলাম তদন্ত করে আসামি রফিক উদ্দিন ও তার স্ত্রী শাহিনা আক্তারের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।
এরপর মামলাটি বিচারের জন্য বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমদ খোন্দকারের আদালতে বিজ্ঞ চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট প্রেরণ করেন। পরদিন মামলাটি আমলে নিয়ে বিগত ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ আসামি রফিক উদ্দিন ও তার স্ত্রীর শাহেনা আক্তারের উপস্থিতিতে চার্জ গঠন করা হয়। ঘটনা মর্মান্তিকতা বিবেচনায় মামলাটি বিজ্ঞ বিচারক দ্রুত নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। এরপর তিন কর্ম দিবসেই একটানা দিন ধার্য করে ১১/২/২০২৪ (রবি), ১২/২/২০২৪ (সোম) ও ১৩/২/২০২৪ (মঙ্গল) দিন ধার্য করে। অতঃপর দুই দিবস ১১/২/২০২৪ ও ১২/২/২০২৪ তারিখ সংবাদদাতা, ৫জন নিরপেক্ষ সাক্ষী, আইও সাক্ষী, ডাক্তার সাক্ষী সহ ৯ জন সাক্ষীর জবানবন্দী গ্রহণ করেন আদালত। ১২ ফেব্রুয়ারি আসামিকে ফৌজদারি কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় পরীক্ষাকালীন ডকে উপস্থিত আসামি রফিক উদ্দিন দোষ স্বীকার করে নিজেকে নিজের বিচার প্রার্থনা করে।
সমস্ত বিচারীক কার্যক্রম শেষে ১৩ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন
কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমেদ খোন্দকার। রায়ের সময় আসামি রফিক উদ্দিন ও তার স্ত্রীর শাহিনা আক্তার, মামলার সংবাদদাতা, ভিকটিম শাহিনা আক্তার আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলা বিচার কার্যের ৩ কার্যদিবসের মধ্যে বিচারকাজ শেষ করে এই রায় ঘোষণা করে এক নজির স্থাপন করলেন কক্সবাজার জেলা অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কৌশিক আহমদ খোন্দকার।
উল্লেখ্য, এই আদালত বিগত ২৮ ডিসেম্বর/২৩, জিআর ৩৪০/ ২২ (চকরিয়া) মামলাটি মাত্র ৪ কার্যদিবসে নিষ্পত্তি করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন।
ভয়েস/জেইউ।