শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৬ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

চিকেন পক্সের চিকিৎসা

গরমে নানা রোগের মধ্যে চিকেন পক্স বা জল বসন্তের প্রকোপ বাড়ে। যদিও চিকেন পক্স নিয়ে অনেকের মধ্যেই ভ্রান্ত সব ধারণা আছে। চিকেন পক্স ‘ভ্যারিসেলা ভাইরাস’ জনিত একটি ছোঁয়াচে রোগ। সাধারণত চিকেন পক্সে আক্রান্ত হওয়ার ১০ থেকে ২১ দিনের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। শরীরে ছোট ছোট লালচে ফোসকার মতো দেখা যায়। এর সঙ্গেই থাকে মাথাব্যথা আর জ্বর। রোগীর শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। চিকেন পক্সের সব চেয়ে খারাপ দিক হলো এর লালচে ফোসকার সঙ্গে মারাত্মক চুলকানি। ত্বকে অস্বস্তির জেরে চুলকাতে গিয়ে এই লালচে ফোসকা ফেটে গেলে তা থেকে আরও বেশি মাত্রায় ফুসকুড়ির মতো উঠতে শুরু করে। তবে সতর্ক থাকলে তেমন কোনো চিকিৎসা ছাড়াই চিকেন পক্সে সেরে ওঠা সম্ভব।

কীভাবে ছড়ায় : বাতাসের মাধ্যমে একজনের কাছ থেকে অন্যজন আক্রান্ত হয়। তা ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি, কাশি, কাপড়চোপড় বা আক্রান্ত ব্যক্তির ফোসকা ফেটে গিয়ে যে পদার্থ নির্গত হয়, তা অন্যের সংস্পর্শে এলে তারা এই রোগ সংক্রমিত হতে পারে। সব কটি গুটি শুকিয়ে না যাওয়া পর্যন্ত ভাইরাসটি ছড়াতে পারে।

করণীয় : আক্রান্ত রোগীর শরীর ঠান্ডা রাখা উচিত। তাই গোসল করা জরুরি। তবে অতিরিক্ত ঠান্ডা পানিতে গোসল করা যাবে না। নিমপাতা ফুটিয়ে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে বেশি উপকার মিলবে। নিমের অ্যান্টিসেপ্টিক উপাদান পক্স নির্মূল করতে সাহায্য করে। এ সময় বারবার জ্বর হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাই প্রাপ্তবয়স্করা প্যারাসিটামল খেতে পারেন। তবে ছোটদের ক্ষেত্রে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। ব্যথার হাত থেকে নিস্তার পেতে রোগীর শরীর ঠান্ডা পানিতে মুছিয়ে দিন, এতে ত্বকে খানিকটা হলেও আরাম মিলবে। একই সঙ্গে প্রতিদিন দুবেলা করে জামাকাপড় বদলানো উচিত। তাহলে সংক্রমণের ঝুঁকি কমবে। এ সময় সুতি ছাড়া অন্য কাপড়ের পোশাক পরবেন না, তাতে চুলকানি বা অস্বস্তি বেড়ে যেতে পারে। পক্সে চুলকানি হলে কখনো নখ লাগাবেন না। এতে ত্বকে স্থায়ীভাবে পক্সের দাগ থেকে যেতে পারে। আবার তা থেকে সংক্রমণও ছড়াতে পারে। তাই শিশুদের শরীরে পক্স হলে তাদের নখ ছোট করে কেটে দিন।

কোন খাবারগুলো খাবেন না : চর্বিজাতীয় খাবার যেমন মাখন, তেল, বাদাম, পনির, নারকেল বা চকলেটজাতীয় খাবারে অতিরিক্ত ফ্যাট থাকে, যা পক্সের প্রদাহ বাড়িয়ে দিতে পারে। অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার খাবেন না। আর বসন্ত হলে মুখের ভেতরেও ক্ষত সৃষ্টি হয়, এতে ঝাল লাগলেই প্রদাহ বেড়ে যাবে। আখরোট, চীনাবাদাম, কিশমিশের মতো খাবারে অর্গিনিন নামে এক প্রকার অ্যামাইনো অ্যাসিড থাকে, যা চিকেন পক্সের জীবাণুর বংশবিস্তার করে। এমনিতে এই অ্যাসিড শরীরের পক্ষে ভালো হলেও আক্রান্ত থাকার সময় তা একেবারেই খাবেন না।

কী খাবেন : এ সময় রোগীকে বেশি ক্যালরি, ভিটামিন ও মিনারেলসমৃদ্ধ খাবার খাওয়াতে হবে। তবে মুখে স্বাদ আনতে পাতলা স্যুপও খাওয়াতে পারেন। ইলিশ-চিংড়িজাতীয় মাছ ছাড়া যেকোনো মাছের পাতলা ঝোল আর ভাতও খেতে পারবে রোগী। এ সময় ডাল খাওয়া খুবই উপকারী। বিশেষ করে ডালের পানি যদি চুমুক দিয়ে খাওয়ানো যায়, তাহলে শরীর ঠান্ডা থাকে। রোগীকে ফলের রসও খাওয়াতে পারেন। তবে লেবুর রস খাওয়া যাবে না। কারণ এতে থাকে উচ্চমাত্রায় সাইট্রিক অ্যাসিড, যা মুখের ভেতরে ক্ষতস্থানে জ্বালা-যন্ত্রণার কারণ হতে পারে। চুলকানি কমাতে অলিভ অয়েল বা ক্যালামাইন লোশন ব্যবহার করলে উপকার পাবেন। ত্বকে ছত্রাক বা যেকোনো সংক্রমণ হলে চিকিৎসকের পরামর্শে মলম ও ওষুধ ব্যবহার করা যাবে। মনে রাখতে হবে, ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ব্যবহার না করলে চর্মরোগের ওষুধ বিপদের কারণ হতে পারে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION