শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

ওষুধের দাম ছয় মাসে বেড়েছে ৭৫ শতাংশ

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের যখন নাভিশ্বাস, এমন সংকটময় মুহূর্তে জীবন রক্ষাকারী ওষুধের মূল্য চার গুণ পর্যন্ত বাড়ানো অযৌক্তিক ও অন্যায়। তাই অবিলম্বে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)।

গতকাল বুধবার ‘ওষুধের অযৌক্তিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতে অনেক অব্যবস্থাপনা রয়েছে। দেশে ওষুধের মূল্যবৃদ্ধির যে প্রক্রিয়া, সেটি যুক্তি ও ন্যায়সংগত কি না সন্দেহ।’
তিনি বলেন, ‘একসময় দুই শতাধিক ওষুধের মূল্য নির্ধারণের দায়িত্ব ছিল ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের। পরবর্তী সময়ে তা কমিয়ে ১১৭টি ওষুধের মূল্য নির্ধারণ করছে তারা। এর বাইরে যে ওষুধগুলো রয়েছে, সেগুলোর মূল্য নির্ধারণ করে ওষুধ কম্পানিগুলো নিজেরাই। এতে ওষুধের মূল্য নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়েছে বলে আমাদের ধারণা। ’

ক্যাবের সিনিয়র সহসভাপতি অধ্যাপক এম শামসুল আলম বলেন, ‘ভোক্তাদের অধিকার সুরক্ষা দিতে ঔষধ প্রশাসনের ব্যর্থতা তাদের সীমাবদ্ধতা কি না বা ওষুধ কম্পানিগুলোর স্বার্থ সংরক্ষণে তাদের নিরপেক্ষ দায়িত্ব পালন তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কি না, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ভোক্তা ও সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। ’

মূল প্রবন্ধে ক্যাবের কোষাধ্যক্ষ মো. মুঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার বলেন, ২০ জুলাই ৫৩টি ওষুধের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য সরকার পুনর্নির্ধারণ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর মধ্যে বহুল ব্যবহৃত প্যারাসিটামল, মেট্রোনিডাজল, এমোক্সিলিন, ডায়াজিপাম, ফেনোবারবিটাল, এসপিরিন, ফেনোক্সিমিথাইল পেনিসিলিনসহ অন্যান্য গ্রুপের ওষুধ উল্লেখযোগ্য।

সরেজমিনে বিভিন্ন দোকান থেকে পাওয়া খুচরা ওষুধের তথ্য বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, এসব ওষুধের দাম গত ছয় মাসের ব্যবধানে ১৩ থেকে ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। গত ছয় মাসের ব্যবধানে শুধু প্যারাসিটামল সিরাপের দাম বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। এ ছাড়া গ্যাস্ট্রিক, অ্যান্টিবায়োটিক, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগের ওষুধের দাম বেড়েছে ১৩ থেকে ৩৩ শতাংশ পর্যন্ত।

মুঞ্জুর-ই-খোদা তরফদার বলেন, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে প্যারাসিটামল সিরাপের। গত তিন-চার মাসের ব্যবধানে এই সিরাপের দাম বেড়েছে ৭৫ শতাংশ। এই ট্যাবলেটের দাম বেড়েছে ২০-৩৩ শতাংশ। ২০ টাকার প্যারাসিটামল সিরাপের দাম বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়েছে। ৮০ পয়সার ৫০০ মিলিগ্রামের প্যারাসিটামল ট্যাবলেট বাড়িয়ে করা হয়েছে এক টাকা ২০ পয়সা। এক টাকা ৫০ পয়সার প্যারাসিটামল বাড়িয়ে দুই টাকা করা হয়েছে।

ক্যাবের সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ওষুধের ক্ষেত্রে অনৈতিকভাবে মূল্যবৃদ্ধি দীর্ঘদিন থেকে চলমান। করোনা-পরবর্তী সময়ে ১০ টাকার প্যারাসিটামল ১০০ টাকা দিয়েও পাওয়া যায়নি। ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানেও ওষুধ ব্যবসার বিভিন্ন অপরাধ-অনিয়ম ধরা পড়ে।

ক্যাবের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ূন কবির ভূঁইয়া বলেন, ঔষধ প্রশাসনের কোনো কর্মকর্তাকে মাঠে দেখা যায় না। ওষুধের দোকানে ডিম, আইসক্রিম, কলা, বগুড়ার দইও বিক্রি করা হয়। এমন চিত্র অনেক এলাকায়ই রয়েছে। তারা শুধু অফিসে বসে থেকে বেতন নেন এবং কম্পানিগুলোর ওষুধের দাম কিভাবে বাড়ালে তাঁরা বেনিফিট পাবেন, এই চেষ্টা করেন।

ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ মিজানুর রহমান (রাজু) বলেন, চিকিৎসকরা রোগীদের যথেষ্ট সময় দিচ্ছেন না। কারণ একজন ডাক্তারের পক্ষে হয়তো ২০ জন রোগী দেখা সম্ভব। কিন্তু তিনি দেখছেন ২০০ জন। যথেষ্ট সময় না দেওয়ায় বহুসংখ্যক টেস্টের কাগজ দিয়ে দিচ্ছেন। ১০টা টেস্ট করলে একটা রোগ ধরা পড়ছে। একই সঙ্গে যা দরকার, রোগীকে তার চেয়ে বেশি ওষুধ দিয়ে দিচ্ছেন। কারণ সে জায়গায় ওষুধ কম্পানির লোকদের দ্বারা চিকিৎসকরা মোটিভেটেট।

অনলাইন পোর্টাল ভোক্তাকণ্ঠের সম্পাদক কাজী আব্দুল হান্নান বলেন, ‘ওষুধ কম্পানিগুলো হিডেন কস্টের নামে ফার্মেসি পর্যায়ে কমিশন ও চিকিৎসকদের নানাভাবে গিফট দিয়ে থাকে। এ ছাড়া বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের বিনোদন ও বিদেশ সফরের জন্য অঢেল টাকা খরচ করে। এসব খরচ ওষুধের দাম বাড়িয়ে উসুল করে নেয়। এসব ব্যয় যদি হ্রাস করা হয়, তাহলে মূল্যবৃদ্ধি থেকে কিছুটা মুক্তি পেতে পারি। ’

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন ক্যাবের ঢাকা জেলা কমিটির সভাপতি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামস খান, নাটোর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক রইস সরকার এবং সিলেট জেলা কমিটির সভাপতি জামিল চৌধুরী।

ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION