বৃহস্পতিবার, ০৯ মে ২০২৪, ০৭:৩৮ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

গাজায় হামাস নির্মূলে ছয়মাসে কতটা সফল ইসরায়েল?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
গত বছরের ৭ অক্টোবর এক অন্যরকম দিন ছিল ইসরায়েল ও গাজাবাসীর জন্য। এইদিনই ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ মানুষকে হত্যা এবং আড়াইশ’র বেশি নাগরিককে জিম্মি করে হামাস।

এর জবাবে হামাসকে নিঃশেষ করার প্রতিজ্ঞা করে ইসরায়েল, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো ধরনের হুমকি তৈরি করতে না পারে। আর সেদিন থেকেই ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ ভূখণ্ড গাজাতে শুরু হয় ইসরায়েলের নারকীয় তাণ্ডব। ছয় মাস ধরে গাজায় প্রতি মূহুর্তে হামলা ও গণহত্যা চালাচ্ছে দখলদার দেশটি।

ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) দাবি করছে যে, গত ছয় মাসে হাজারো হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে তারা। এছাড়া গাজার তলদেশে হামাসের সুড়ঙ্গের বিশাল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা হয়েছে, যা হামলা চালাতে ব্যবহার করতো সংগঠনটি।

কতজন হামাস নেতা নিহত হয়েছে?
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) কমান্ডারদের বরাতে বিবিসি জানিয়েছে যে ধারণা করা হচ্ছে ৭ অক্টোবর যুদ্ধের আগে গাজা উপত্যকায় হামাসের প্রায় ৩০ হাজার যোদ্ধা ছিল।

সম্প্রতি এক বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ১৩ হাজার হামাস যোদ্ধাকে হত্যা করেছে। তবে এই সংখ্যাটি কীভাবে গণনা করেছে তা জানায়নি আইডিএফ। যদিও ইসরায়েল প্রতিটা হামাস নেতাকে হত্যার পর তাদের পরিচয় প্রকাশ করে।

গত অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত হামাসের মোট ১১৩ জন নিহত নেতার পরিচয় প্রকাশ করা হয়। তাদের অধিকাংশেই যুদ্ধের প্রথম তিন মাসে নিহত হয়েছে। এ বছরের ২৬ মার্চ হামাসের সামরিক শাখার ডেপুটি কমান্ডার মারওয়ান ইসাকে হত্যার কথা জানায় আইডিএফ। তিনি মোস্ট ওয়ান্টেডদের মধ্যে একজন ছিলেন। তবে হামাস এ তথ্য নিশ্চিত করেনি।

তবে আইডিএফ এমন কিছু ব্যক্তিদেরও নাম প্রকাশ করেছে যারা আদৌ হামাসের সিনিয়র নেতা কিনা তা যাচাই করা সম্ভব নয়। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন মুস্তাফা থুরায়া, যিনি জানুয়ারিতে গাড়িতে ইসরায়েলি হামলায় মারা যান। কিন্তু তখন জানা যায় যে তিনি দক্ষিণ গাজায় একজন ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক হিসেবে কাজ করছিলেন।

গাজার বাইরে, হামাসের রাজনৈতিক নেতা সালেহ আল-আরৌরি জানুয়ারিতে বৈরুতের দক্ষিণ উপশহর দাহিয়েহতে একটি বিস্ফোরণে মারা যান । ওই হামলার জন্য ইসরায়েলকে ব্যাপকভাবে দায়ী করা হয়।

তবে অনেকের মতে ইসরায়েলের পক্ষে হামাস নির্মূল সম্ভব নয়।

ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের ইসরায়েল-ফিলিস্তিন বিষয়ক সিনিয়র বিশ্লেষক মাইরাভ জোনজেইন বলেছেন, “আইডিএফ হামাসের নেতৃত্বের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিদের কাছেও যেতে পারেনি।”

হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক কতটা ধ্বংস হয়েছে?
হামাসকে নির্মূল করার অঙ্গীকারের অংশ হিসাবে, ইসরায়েল গাজার নীচে সংগঠনটির বিস্তৃত টানেল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এই টানেল হামাস পণ্য এবং মানুষ সরানোর জন্য ব্যবহার করে থাকে।

হামাসের দাবি গাজা জুড়ে তাদের টানেল নেটওয়ার্ক ৫০০ কিলোমিটার (৩১১ মাইল) প্রসারিত।

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছে বিবিসি জানতে চেয়েছিল যে, তারা হামাসের কয়টি টানেল এবং মোট টানেল নেটওয়ার্কের কতটুকু ধ্বংস করেছে। তারা জানিয়েছে যে, তাদের বাহিনী “গাজায় সন্ত্রাসী অবকাঠামোর একটি বড় অংশ ধ্বংস করেছে”।

তবে এসবের বিস্তারিত বিবরণ বা নির্দিষ্ট অবস্থান সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট তথ্য দেয়নি আইডিএফ। তাই ইসরায়েল কি পরিমাণ হামাসের টানেল নেটওয়ার্ক আবিষ্কার করেছে বা ধ্বংস করেছে তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয় বলছে বিবিসি।

গাজায় কতজন জিম্মি আছে?
ইসরায়েলের সরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েল থেকে ২৫৩ জনকে জিম্মি করেছিল হামাস। এদের মধ্যে ১০৯ জনকে গত বছরের যুদ্ধবিরতিতে বন্দী বিনিময়ের অংশ হিসাবে বা পৃথক চুক্তিতে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সামরিক অভিযানে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সরাসরি উদ্ধার করেছে ৩ জনকে। ১২ জিম্মির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে তিনজন জিম্মি ইসরায়েলের হামলাতেই নিহত হয়েছে বলে স্বীকার করেছে আইডিএফ। বাকি ১২৯ জিম্মির মধ্যে অন্তত ৩৪ জন মারা গেছে বলছে ইসরায়েল।

তবে হামাস বলছে, মৃত জিম্মির সংখ্যা আরও বেশি। আর হামলার ফলে নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ছাড়া আর কোনো কিছু অর্জন করেনি ইসরায়েল।

হামাসের হামলায় সবচেয়ে কনিষ্ঠ দুই জিম্মি হলেন এরিয়েল এবং কেফির। অপহরণের সময় যাদের বয়স যথাক্রমে ৪ বছর এবং ৯ মাস ছিল। তাদের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION