মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০২:০০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় নিখোঁজের ৪দিন পর আরমানের লাশ উদ্ধার চকরিয়ায় পুকুরে গোসলে নেমে দুই বোনের মৃত্যু জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের কাজ শুরু করবে মঙ্গলবার, থাকবে এক মাস বাংলাদেশকে ২০০ একর জমি ফিরিয়ে দিচ্ছে ভারত আওয়ামী লীগ হাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে ‍না পারলে , জনগণ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে না।: রিজভী কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ১ পেকুয়ায় লবণ ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাই উখিয়া ক্যাম্পে দুর্বৃত্তের গুলিতে ২ যবক নিহত মহেশখালীতে মাংসের দাম অতিরিক্ত রাখায় ৪ ব্যবসায়ীকে জরিমানা নায়িকারা ছোট কাপড় পরলে চলে, ঘরের বউদের চলে না : গোবিন্দের স্ত্রী

লাশের ওপর দিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে চাননি: মোহাম্মদ এ আরাফাত

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

লাশের ওপর দিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে চাননি বলেই তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত। কোটা সংস্কার আন্দোলনে সব মৃত্যুর দায় ঢালাওভাবে শেখ হাসিনার সরকারের ওপর দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। পাশাপাশি ৫ আগস্টের পর যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে, সেই গণহত্যার দায় কার প্রশ্ন রেখেছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) শেখ হাসিনা সরকারের সাবেক এই প্রতিমন্ত্রী এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে এসব কথা বলেন। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর তার মন্ত্রিপরিষদের প্রথম কোনও সদস্য মুখ খুললেন।

জুলাই থেকে আগস্ট মাসে এসেও মৃত্যুর মিছিল থামছে না কেন প্রশ্ন রেখে আরাফাত লিখেছেন, ‘এত লাশের ওপর দিয়ে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতে চাননি বলেই তিনি ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু এত লাশের ওপর দিয়ে যারা ক্ষমতায় আসতে চেয়েছিল, তারা তো এখন ক্ষমতার অংশীদার, তাহলে তারা কেন আরও লাশ ফেলছে?’ শোকাবহ আগস্ট মাসে জাতির জীবনে যেন আরও শোক নেমে এসেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তিনি আরও লেখেন, ‘ওরা ভেবেছিল, আমাদের শেষ করে দিবে। তথাকথিত অভ্যুত্থানের আড়ালে, (১) পুলিশ বাহিনীর সদস্যদের হত্যা করে, (২) দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটিয়ে এবং (৩) চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি করে, আমাদের একে একে হত্যা করতে চেয়েছিল ওরা।’

কৌশলগত কারণে অন্তরালে থাকতে হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘পরিবেশ চরম ঘোলাটে করে, কোনও বাছ-বিচার ছাড়াই আমাদের হত্যা করার ষড়যন্ত্র চলছিল। এমন অস্থির সময়ে কৌশলগত কারণেই আমাদের অন্তরালে থাকতে হয়েছে। কিন্তু, আমরা মরিনি, আমরা আছি।’

তিনি আরও লিখেন, ‘আগস্টের ৫ তারিখে আমরা ক্ষমতা ছেড়ে দিয়েছি। সেই দিনই ঘাতকের দল ৪৫০টি থানায় আক্রমণ চালায় এবং নির্মমভাবে হত্যা করে ১৫ জন পুলিশ সদস্যকে। আহত করে আরো অগণিত পুলিশ সদস্যদের। আনসার ও বিজিবি সদস্যদের ওপরও হামলা চালানো হয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে জেনেছি (যদিও সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি) সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় অন্তঃসত্ত্বা একজন নারী পুলিশ সদস্যকেও হত্যা করা হয়।’

৫ আগস্ট ১১৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে দাবি করে তিনি লিখেছেন, ‘শুধু ৫ আগস্টের দিনই ছাত্র, শিক্ষক, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক কর্মী, কর্মজীবী মানুষ, পথচারী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী, পুলিশ সদস্য এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের কমপক্ষে ১১৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে। অনেক মৃত্যুর খবর পাওয়া যায়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতা ছাড়ার পর প্রথম ৪৮ ঘণ্টায় নিহতের সংখ্যা ৪০০ ছাড়িয়েছে বলে অনুমান সাংবাদিক ও পুলিশ কর্মকর্তাদের। শিল্পী, সাহিত্যিক এবং শিক্ষাবিদদের আক্রমণ করা হয়েছে।’

ফেনীর এক ছাত্রলীগ নেত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে তিনি লেখেন, ‘ছাত্রলীগ নেত্রী ইসরাত চৌধুরী দোলাকে ফেনীর বাসা থেকে তিনদিন আগে একদল দুর্বৃত্ত অপহরণ করে ধর্ষণের পর হত্যা করেছে– সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দোলার মতো দেখতে এমন একটি ছবিসহ তথ্য প্রচার হলে জেলাজুড়ে চাঞ্চল্য তৈরি হয়। ধর্ষণের পর হত্যাকাণ্ডের শিকার এমন মেয়েদের লাশ আজকাল পানিতে ভেসে আসতে দেখা যাচ্ছে। শত শত মানুষের ঘরবাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।’

কোটা আন্দোলনে সরকারের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি লেখেন, ‘কোটা আন্দোলনের সময় ১৬ জুলাই নিহত আবু সাইদসহ অন্যান্য হত্যাকাণ্ডকে আমরা নিন্দা জানিয়েছিলাম, দুঃখ প্রকাশ করেছিলাম, বিচার বিভাগীয় তদন্তের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। আবু সাইদসহ অন্যান্য যারা হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখা করেছিলেন, তাদের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। প্রতিটি হতাহতের ঘটনার তদন্তের জন্য বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশনকে সহযোগিতা করার জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনার ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছিল। আন্দোলনের সময় নিহত মীর মুগ্ধের বাসায় শিক্ষামন্ত্রী গিয়েছিল এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে দেখা করেছিল।’

‘কোটা আন্দোলনের সময় যতগুলো দুঃখজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে তার মধ্যে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী এবং পুলিশ সদস্যরাও ছিল। কিন্তু ঢালাওভাবে সব মৃত্যুর দায় আমাদের সরকারের ওপর দেওয়া হয়েছে’, যোগ করেন মোহাম্মদ এ আরাফাত।

৩০ লাখ শহীদের ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতা জনগণই রক্ষা করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এই আগস্ট মাসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্যগুলো কারা ভেঙে ফেললো? ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে কারা আগুন দিলো? শুধু বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নয়, শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন ভাস্কর্যও ভাঙা হয়েছে। নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে নোংরা ভাষা ব্যবহার করে কালো রঙের দাগ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। দেশ এখন আইন-শৃঙ্খলা বিহীন অবস্থায় আছে, সবকিছু চলে গেছে দুর্বৃত্তদের দখলে, যেখানে কেউই নিরাপদে নেই। ইনশাল্লাহ আমরা ছিলাম, আমরা আছি, আমরা থাকবো। ৩০ লক্ষ শহীদের ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই স্বাধীনতা এ দেশের জনগণই রক্ষা করবে।’

এসময় জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত সকল মৃত্যুর বিচার দাবি করে তিনি বলেন, ‘জুলাই থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত যত মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটি মৃত্যুর বিচার করতে হবে। প্রতিটি হত্যাকারীকে স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে। আমি এই সব হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই এবং সব দায়ী ব্যক্তির সাজা চাই।’

কোটা আন্দোলনে সকল শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবু সাঈদ এবং মীর মুগ্ধসহ সব শহীদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। এবং এই কোটা আন্দোলনে যে সকল প্রাণহানি হয়েছে সকলের রুহের মাগফিরাত কামনা করি।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৫ আগস্টের সব শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবসে পঁচাত্তরের সেই কালো রাতে ঘাতকের নির্মম গুলিতে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতাসহ পরিবারের সব সদস্য এবং অন্যান্য যারা সেই রাতে শহীদ হয়েছিলেন, সবার স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা ও তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। জয় বাংলা। জয় বঙ্গবন্ধু।’

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION