মঙ্গলবার, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০১:১৬ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকায় নিখোঁজের ৪দিন পর আরমানের লাশ উদ্ধার চকরিয়ায় পুকুরে গোসলে নেমে দুই বোনের মৃত্যু জাতিসংঘের তথ্যানুসন্ধান দল আনুষ্ঠানিকভাবে তদন্তের কাজ শুরু করবে মঙ্গলবার, থাকবে এক মাস বাংলাদেশকে ২০০ একর জমি ফিরিয়ে দিচ্ছে ভারত আওয়ামী লীগ হাতে অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে ‍না পারলে , জনগণ নিশ্চিন্তে ঘুমাতে পারবে না।: রিজভী কিশোরগঞ্জে ঈদে মিলাদুন্নবীর মিছিল ঘিরে সংঘর্ষে নিহত ১ পেকুয়ায় লবণ ব্যবসায়ীকে মারধর করে টাকা ছিনতাই উখিয়া ক্যাম্পে দুর্বৃত্তের গুলিতে ২ যবক নিহত মহেশখালীতে মাংসের দাম অতিরিক্ত রাখায় ৪ ব্যবসায়ীকে জরিমানা নায়িকারা ছোট কাপড় পরলে চলে, ঘরের বউদের চলে না : গোবিন্দের স্ত্রী

দাতব্য কাজে উৎসাহিত করেছে ইসলাম

মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ:

প্রতি বছর ৫ সেপ্টেম্বর পালন করা হয় আন্তর্জাতিক দাতব্য দিবস। এই দিনটি পালন করার মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী দানমূলক কাজের গুরুত্ব তুলে ধরা। সমাজের দরিদ্র ও অভাবীদের সাহায্য করার মাধ্যমে তাদের জীবন এবং সমাজকে উন্নত করে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরে এই দিনটি। ছোট হোক বা বড়, প্রতিটি দানের নিজস্ব গুরুত্ব রয়েছে এবং সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই দিনটি পালন করার উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী দাতব্য, পরোপকার ও সেবার গুরুত্ব প্রচার করা এবং সমাজের অভাবীদের সাহায্য করার জন্য মানুষকে অনুপ্রাণিত করা।

ঘরভর্তি সম্পত্তি কিংবা বিলাসিতায় ডুবে থাকা মানুষও একটু আন্তরিক মায়ার জন্য হাহাকার করে। কঠিন প্রাণও যত্ন চায় দিনশেষে। এই যত্ন, সেবা কিংবা মানবতা শুধু যে মানুষের প্রয়োজন, তা নয়। বরং পশুপাখিও যত্ন বোঝে। সেবা, স্বেচ্ছাশ্রম, দান এগুলো বুঝতে কিংবা এতে প্রাণ লাগিয়ে কাজ করতে লাগে বিশাল হৃদয়। এ জন্যই হয়তো বিগত দিনে করোনা মহামারী কিংবা ১৩ জেলার বন্যা আমাদের দাতব্যের প্রায়োগিক শিক্ষা দিয়ে গেছে। দান করাকে ইসলাম একটি গুরুত্বপূর্ণ নেক আমল সাব্যস্ত করেছে। এর অনেক ফজিলতও বর্ণিত হয়েছে কোরআন-হাদিসে। তাই ইসলামের অপরাপর আমলের মতো এই গুরুত্বপূর্ণ আমলটির জন্যও রয়েছে অনন্য সাধারণ কিছু নির্দেশনা ও নীতিমালা। যদি দানের ক্ষেত্রে সেগুলো রক্ষা করা হয় তাহলে এর যথাযথ প্রতিদান পাওয়া যাবে। আমাদের দান বহু গুণে বৃদ্ধি পেয়ে পরকালে নিজের সামনে উপস্থিত হবে ইনশাআল্লাহ। কাজেই সে নির্দেশনাগুলো আমাদের জানা দরকার। আর ইসলামে ক্রমাগত দাতব্য বা চলমান দাতব্য (সাদাকায়ে জারিয়া) এমন কোনো কাজকে বোঝায়, যা সেটির সূচনাকারীর মৃত্যুর পরও মানবতার উপকার করতে থাকে। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যখন কোনো ব্যক্তি মারা যায়, তখন তিনটি ছাড়া তার সব আমল বন্ধ হয়ে যায়। এক. সাদাকায়ে জারিয়া। দুই. এমন জ্ঞান, যা দ্বারা উপকার লাভ করা হয়। তিন. এমন নেক সন্তান, যে তার জন্য দোয়া করে। (সহিহ বুখারি) সদকায়ে জারিয়ার কয়েকটি উদাহরণ তুলে ধরা হলো।

গাছ লাগানো : গাছ লাগানো সদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত। কারণ এটি তিনটি অপরিহার্য সুবিধা প্রদান করে। এর ফল খাওয়া, এর নিচে ছায়া খোঁজা এবং এর কাঠ ব্যবহার করা।

কূপ নির্মাণ : কূপ নির্মাণে করা সদকায়ে জারিয়ার অন্তর্ভুক্ত। কারণ এটি পানির সংগ্রহের বিষয়টিকে সহজতর করে। কূপ খননকারী ব্যক্তি মারা যাওয়ার পরও লোকরা এটি থেকে উপকৃত হতে থাকে।

মসজিদ, মাদ্রাসা ও হাসপাতাল নির্মাণ : মসজিদ নির্মাণ করা একটি উল্লেখযোগ্য সওয়াবের কাজ হিসেবে বিবেচিত হয়। যখনই সেই মসজিদে কেউ প্রার্থনা করে তখনই নির্মাণকারী সওয়াব অর্জন করতে থাকে। দাতব্য চিকিৎসালয় প্রতিষ্ঠা করে অসহায় রোগীদের মধ্যে ফ্রি চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যসেবা করা যেতে পারে। খুব স্বল্প ব্যয়ে দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন করা যায়। মাদ্রাসা নির্মাণ করেও সদকায়ে জারিয়ার সওয়াব অর্জন করা যায়। সেখান থেকে মানুষ যতদিন দ্বীনি শিক্ষা গ্রহণ করবে ততদিন পর্যন্ত নির্মাণকারী ব্যক্তি সওয়াব পেতে থাকবে।

এ ছাড়া দান-সদকা ও মানবসেবার মাধ্যমে দুনিয়াবি ফায়দাও রয়েছে। এর মাধ্যমে বিপদাপদ দূর হয়। দানকারীর জন্য দার দান বিপদের সামনে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। যার ফলে বিপদাপদ দানকারীকে স্পর্শ করতে পারে না। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা অতিসত্বর দানের দিকে ধাবিত হও, কেননা বিপদাপদ দানকে অতিক্রম করতে পারে না। (শুয়াবুল ইমান)

সর্বোপরি মানবসেবা একটি মহৎ ইবাদত। এ সেবার মাধ্যমে সমাজের হিংসা-বিদ্বেষের মতো অধঃপতিত কাজ থেকে বেঁচে থাকা যায়। তা ছাড়া এ সেবা কার্যক্রম প্রত্যেকেই চালিয়ে যেতে পারে। আইনজীবীরা আইন মারফত মজলুমের সাহায্য করে, তাদের মামলা-মোকদ্দমায় বিনা পারিশ্রমিকে সহায়তা করতে পারে। ডাক্তাররা প্রাথমিক ওষুধপথ্যের মাধ্যমে এবং ফ্রি চিকিৎসা ও অতিরিক্ত ফি না নিয়ে তাদের সহযোগিতায় এগিয়ে আসতে পারে। এ রকম প্রতিটি সেক্টর থেকেই নিজ নিজ পরিসরে এ মহান সেবা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। সুতরাং প্রতিটি মুমিনের উচিত পবিত্র কোরআন ও হাদিসের বাণীকে হৃদয়ে লালন করে ইহকালীন এবং পরকালীন কল্যাণের নিমিত্তে মানবকল্যাণে আত্মনিয়োগ করা। আল্লাহতায়ালা যেন আমাদের সব মুসলমান ভাইদের সমাজসেবা করার জন্য তওফিক দান করুন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION