বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:২০ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
খালেদা জিয়াকে চৌদ্দগ্রামে নাশকতা মামলা থেকে অব্যাহতি ১৮ হাজার অবৈধ অভিবাসীকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফিরিয়ে নিচ্ছে ভারত বাংলাদেশ ও ইউএনএইচসিআর রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে একসাথে কাজ করবে ফলাফল জালিয়াতি:চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের সাবেক সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা টেকনাফে পাচারকারীর ফেলে যাওয়া বস্তায় পাওয়া গেল সাড়ে ৪ লাখ পিস ইয়াবা পেকুয়ায় হরিণাফাঁড়ী এলাকায় টপসয়েল কাটা বন্ধে অভিযানে হামলাচেষ্টা ফারিনের ‘ঠিকানা’ ১০ মিলিয়নে বিশ্বকাপের দৌড়ে উইন্ডিজকে হারিয়ে টিকে থাকল বাংলাদেশ বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সাথে মিলাচ্ছি না:খাদ্য উপদেষ্টা বেড়েছে চোরের উপদ্রব, আতঙ্কে দিন কাটে মানুষের

আধুনিক বিজ্ঞান ও কোরআনে মহাবিশ্ব

সাইফুল ইসলাম:
বর্তমান পৃথিবীতে চলছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগ। বিজ্ঞান মানুষকে দিয়েছে অভাবনীয় গতি, সভ্যতার অগ্রযাত্রাকে করেছে দ্রুততর ও বহুমাত্রিক। বিজ্ঞানের নব নব আবিষ্কারের জাদুকরী স্পর্শে মানবজীবনের সর্বত্রই এসেছে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। বিজ্ঞানের দৌলতে বিশ্ব আজ আমাদের ঘরের কোনায়, হাতের মুঠোয় বন্দি। অন্যদিকে ইসলাম গোটা মানব জাতির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। তাই বিজ্ঞানও ইসলামের অন্তর্ভুক্ত। আর কোরআন হলো শ্রেষ্ঠতম মহাবিজ্ঞান। এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ বলেন, ‘শপথ বিজ্ঞানময় কোরআনের।’(সুরা ইয়াসিন ২) এখন প্রশ্ন হলো, পবিত্র কোরআন আর আধুনিক বিজ্ঞান কি পরস্পরবিরোধী, নাকি সামঞ্জস্যপূর্ণ? এ বিষয়ে বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন বলেছেন, ‘ধর্ম ছাড়া যে বিজ্ঞান, সেটা হলো পঙ্গু। আর বিজ্ঞান ছাড়া যে ধর্ম, তা হলো অন্ধ।’

মহানবী (সা.)-এর ওপর ৬১০ খ্রিস্টাব্দে মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কোরআন অবতীর্ণ শুরু হয়। ওই সময় সামাজিক অবস্থা থেকে শুরু করে বৈজ্ঞানিক সবকিছুই ছিল নাজুক অবস্থায়। তথ্য-প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে মানুষ তখন কুসংস্কার ও প্রাচীন রূপকথায় বিশ্বাসী ছিল। আর এ সময়ই অবতীর্ণ হয় মহাগ্রন্থ আল কোরআন। যাতে রয়েছে ছয় হাজারেরও বেশি নিদর্শন বা আয়াত। যেগুলোর মধ্যে এক হাজারেরও বেশি আয়াতে বিজ্ঞানের কথা বলা হয়েছে।

কোরআনের অনেক বৈজ্ঞানিক তথ্য আছে যেগুলো বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত সত্য। বিশ্বজগৎ সৃষ্টি সম্পর্কে আধুনিক বিজ্ঞান যে তথ্য দেয় তা হলো, ‘কোটি কোটি বছর পূর্বে প্রথমে এই বিশ্বজগতের সব উপাদান ছিল একটি বিন্দুতে। তারপর সেখানে একটি বিস্ফোরণ হলো। এর থেকেই তৈরি হলো ছায়াপথ। যেটা আবারও খণ্ড-বিখণ্ড হয়ে তৈরি হলো বিভিন্ন সৌরজগৎ। সেখানে তৈরি হলো বিভিন্ন গ্রহ ও সূর্য। আর আমরা যে গ্রহে বাস করি সেটা পৃথিবী।’ অথচ কোরআন বহু আগেই আমাদের এ তথ্য প্রদান করে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘অবিশ্বাসীরা কি দেখে না যে, আকাশমণ্ডলী ও পৃথিবী ওতপ্রোতভাবে মিশে ছিল। অতঃপর আমিই এদের উভয়কে পৃথক করে দিয়েছি। আর আমি প্রাণবন্ত সবকিছুই সৃষ্টি করেছি পানি থেকে। তবুও কি তারা বিশ্বাস স্থাপন করবে না।’ (সুরা আম্বিয়া ৩০) পবিত্র কোরআনের এই আয়াতে বিগ ব্যাং-এর থিওরির কথা বলা হয়েছে খুব সংক্ষেপে। সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হলো, যা আজ আমরা জেনেছি মাত্র কিছুদিন আগে, অথচ সেই তথ্য কোরআন আমাদের দিয়েছে প্রায় ১৫০০ বছর আগে।

এ ছাড়াও পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘অতঃপর তিনি আকাশের দিকে মনোনিবেশ করেন, যা ছিল ধূম্রবিশেষ। অনন্তর তিনি আকাশ ও পৃথিবীকে বললেন, তোমরা উভয়ে এসো ইচ্ছায় অথবা অনিচ্ছায়। তারা বলল, আমরা এলাম অনুগত হয়ে।’ (সুরা হামিম সাজদাহ ১১) এখানে আয়াতের আরবি ‘দুখান’ শব্দের অর্থ হলো ধোঁয়া বা বায়বীয়। বিখ্যাত পদার্থ বিজ্ঞানী স্টিফেন উইলিয়াম হকিং বলেছেন, ‘বিশ্বজগৎ তৈরির আগে মহাবিশ্বের বিভিন্ন উপাদান ছিল বায়বীয় অবস্থায়। আর মহাশূন্যের যে বিভিন্ন পদার্থের উপাদান, যা আবিষ্কার করা গেছে সেটাই হলো গত শতাব্দীর সবচেয়ে বড় আবিষ্কার।’ আর এগুলোর ওপর ভিত্তি করে নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত হয় যে, বিগ ব্যাং থিওরির সত্যতা আর বিশ্বজগৎ সৃষ্টি হওয়ার রহস্য।

আগের দিনে মানুষ মনে করত, আমরা যে পৃথিবীতে বাস করি সেটা সমতল। আর নিচে পড়ে যাওয়ার ভয়ে মানুষ খুব বেশি দূরে যেতে ভয় পেত। এরপর ১৫৫৭ খ্রিস্টাব্দে ফ্রান্সিস ড্রেক জাহাজে করে পুরো পৃথিবী ঘুরে এলেন, আর প্রমাণ করলেন পৃথিবী আসলে বর্তুল আকার। মহান আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহতায়ালা রাত্রির ভেতর দিবসকে অন্তর্ভুক্ত করেন এবং রাত্রিকে দিবসের ভেতরে অন্তর্ভুক্ত করেন।’ (সুরা লোকমান ২৯) মূলত অন্তর্ভুক্ত করা একটি ধীরগতির চলমান প্রক্রিয়া। রাত ধীরে ধীরে চলমান প্রক্রিয়ায় দিনে পরিণত হয়, আর দিন ধীরে ধীরে চলমান প্রক্রিয়ায় রাতে পরিণত হয়। এটা শুধুমাত্র তখনই সম্ভব হবে, যখন পৃথিবী বর্তুল আকার হয়। অর্থাৎ সমতল হলে এটি সম্ভব হবে না। কারণ পৃথিবী সমতল হলে দিন-রাত হঠাৎ করে বদলে যেত। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘এরপর তিনি (আল্লাহ) পৃথিবীকে করেছেন ডিম্বাকৃতির।’ (সুরা নাজিয়াত ৩০) লিসানুল আরব অভিধান অনুযায়ী এখানে আয়াতের আরবি শব্দ ‘দাহাহা’ এর অর্থ হলো গোলাকৃতি বা ডিম্বাকৃতি। সুতরাং এ আয়াত থেকে পৃথিবী গোলাকার হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। পবিত্র কোরআনে পৃথিবীর আকৃতি উল্লেখ করা হয়েছে প্রায় ১৫০০ বছর আগে। যেখানে বিজ্ঞান এগুলোর তথ্য দিচ্ছে এখন। আগে মানুষ মনে করত, চাঁদের আলোটা তার নিজস্ব আলো। কিছুদিন আগে আধুনিক বিজ্ঞান জানিয়েছে যে, চাঁদের আলো আসলে সূর্যের আলোর প্রতিফলিত আলো। ঠিক একই কথা পবিত্র কোরআন বলেছে আধুনিক বিজ্ঞানের হাজার বছর আগে। মহান আল্লাহ বলেন, ‘কত মহান তিনি, যিনি নভোমণ্ডলে সৃষ্টি করেছেন নক্ষত্ররাজি। আর তাতে প্রদীপ ও আলো বিকিরণকারী চাঁদ সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা ফুরকান ৬১) ১৬০০ সাল পর্যন্ত মনে করা হতো, পৃথিবী বিশ্বজগতের এ কেন্দ্রে একেবারে স্থির হয়ে বসে আছে। আর সূর্যসহ অন্যসব নক্ষত্র পৃথিবীর চারপাশে প্রদক্ষিণ করছে। অথচ মহান আল্লাহ বলেন, ‘আর আল্লাহই সৃষ্টি করেছেন রাত্রি ও দিবস। আর সূর্য ও চন্দ্র। প্রত্যেকেই নিজের কক্ষপথে বিচরণ করছে তাদের নিজস্ব গতিতে।’ (সুরা আম্বিয়া ৩৩) যা এখন আধুনিক বিজ্ঞান দ্বারা প্রমাণিত।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION