বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০২:২৬ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বেড়েছে চোরের উপদ্রব, আতঙ্কে দিন কাটে মানুষের

এম এ সাত্তার:

চোরের উৎপাতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলার মানুষ। প্রতিরাতেই জেলা শহর থেকে উপজেলা শহর আর গ্রাম থেকে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কোথাও যেন স্বস্তি নেই চোরের আতঙ্কে। গৃহপালিত পশু, ঘর, দোকান, বাসার গ্রিল কেটে কিংবা দিনদুপুরে ফ্ল্যাট বাসার তালা কেটে চুরির ঘটনা ঘটছে অহরহ। লাগামহীন এসব চুরির ঘটনায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। থানায় অভিযোগ করেও মিলছে না কোনো প্রতিকার। যে ঘটনায় অতিষ্ঠ খোদ প্রশাসন।

এরআগে সদরস্থ পিএমখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড ছনখোলা গ্রামের অসংখ্য বাড়ি থেকে টিউবওয়েলের মাথা এবং কমিউনিটি ক্লিনিকের মালামাল, সিএনজি, গৃহপালিত পশু চুরি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত ভুক্তভোগীরা থানা-পুলিশকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি। এ ঘটনায় পুলিশের কোন তৎপরতা দেখা যায়নি।

স্থানীয় আবদুল্লাহ, আব্দুর রহমান, হাকিম, জয়নাল আবেদীন বলেন, এক দেড় মাসে তাদের গ্রাম থেকে অন্তত ৫০টি চুরির ঘটনা ঘটেছে। মানুষ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ চোর চিহ্নিত কিন্তু এসব চুরির কোনো বিচার হয় না। গত দুইদিন আগে একরাতে ছনখোলা সরকারি প্রাইমারি স্কুলসহ বিভিন্ন বাড়িঘরের ১৫টি টিউবওয়েলের মাথা খুলে নিয়ে গেছে চোরেরা। গত এক বছরে বেশ কয়েকটি চুরির ঘটনা ঘটলেও একটি ঘটনায়ও চোর শনাক্ত কিংবা মালপত্র উদ্ধার হয়নি।

ছনখোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামের বেলাল উদ্দিন বলেন, প্রতিদিনের মতো সিএনজি গাড়ি ঘরের ওঠানে রেখে রাতে বাড়িতে ঘুমিয়ে ছিলাম। এই সুযোগে গাড়িটি চুরি করে নিয়ে যায়। সদর থানায় অভিযোগ দায়ের করি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তিন মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে একজন চোরও পুলিশ আটক করতে পারেনি।

স্থানীয় কয়েক ব্যক্তি ক্ষোভ প্রকাশ করে জানিয়েছে, প্রতি রাতে কারো না কারো বাড়িতে চুরি বা ডাকাতি হচ্ছে। অজ্ঞাত চোরের দল কৌশলে বিভিন্ন বাসা বাড়ীতে প্রবেশ করে কৌশলে টমটম, সিএনজি, মোবাইল ফোন,গ্যাসের রাইজার,পানির মটর, অটো ইজিবাইকের ব্যাটারি, হাঁস মুরগি, গরু ছাগল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বিনা বাধায়। গত ১০-১৫ দিনের ব্যবধানে এই ছনখোলা গ্রামে অর্ধশতাধিক নলকূপ ও ২০/২৫টি পালিত গরু-ছাগল চুরি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় গ্রামবাসী। প্রতি রাত্রে কারো না কারো বাড়িতে হানা দিচ্ছে চোরের দল।

২০ জানুয়ারি ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকার সাবেক মেম্বার জাফর আলমের ছেলে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমদ এর ফার্ম থেকে পানির মোটর, বিদ্যুৎ লাইট, নগদ টাকা সহ মূল্যমানের জিনিসপত্র চুরি হয়েছে। চুরির ঘটনায় ভুক্তভোগী মোস্তাক আহমদ বাদী হয়ে চিহ্নিত এক চোরের নাম ঠিকানা উল্লেখ করত: অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জন আসামির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিতে কক্সবাজার সদর থানায় একটি এজাহার দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে পোল্ট্রি ব্যবসায়ী মোস্তাক আহমদ জানান, ফ্যামিলি না থাকায় বাড়িতে ঘুমাতে গেলে নগদ টাকাসহ ফার্মের সব কিছু চুরি করে নিয়েছে স্থানীয় একটি চোরের দল। প্রশাসনের নিকট এলাকার চিহ্নিত চোরদেরকে দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি করেন ক্ষতিগ্রস্ত মোস্তাক আহমদ।

ছনখোলা পশ্চিম পাড়া গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা বিজিবি সদস্য (অব:) মোহাম্মদ আলম বলেন, ১৮ জানুয়ারি তার বাড়ির সহ অন্য মানুষের ১৫ টি নলকূপ নিয়ে গেছে চোরের দল। প্রতি রাত্রে কারো না কারো বাড়ি থেকে নলকূপসহ গৃহপালিত পশু ও মূল্যবান জিনিসপত্র চুরি হয়। মাঝের পাড়া এলাকার মৃত অন্ধ হাফেজ আব্দুর রহমানের পুত্র মোঃ ইউসুফের ৬টি ছাগল, এম এ সাত্তারের ৩টি ছাগল চুরি হয়েছে। চোরের উপদ্রুপ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নিকট জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

এ ব্যাপারে সদর থানার পরিদর্শক পদমর্যাদার এক কর্মকর্তা বলেন, ভুক্তভোগীর এজাহার পেয়েছেন। অভিযুক্তদের কোন ছাড় নেই। তদন্তে ওঠেআসা অভিযুক্তদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।
ভয়েস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION