শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন
ভয়েস প্রতিবেদক, উখিয়া :
উখিয়ায় সুপারি চুরির অপবাদ দিয়ে কলেজ ছাত্রকে মধ্যযুগীয় কায়দায় পাশবিক নির্যাতন করেছে স্থানীয় এক ইয়াবাকারবারি। নির্যাতনের শিকার কলেজ শিক্ষার্থী মো: রায়হান (১৯)। সে কক্সবাজার সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণীর ছাত্র। এঘটনায় রবিবার (২৬ মার্চ) রাত ১০ টার দিকে চিহ্নিত ইয়াবাকারি ফজল কাদেরকে প্রধান আসামী করে ৪ জনের নাম উল্লেখ সহ অজ্ঞাত ৫/৬ জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছে নির্যাতনের শিকার রায়হানের পিতা মোহাম্মদ আমিন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া এলাকায় গত শনিবার (২৫ মার্চ) সন্ধ্যায় ফজল কাদেরের নেতৃত্বে চাঁর/পাচ জনের একটিদল রায়হানকে তুলে নিয়ে বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে হাত-পা বেঁধে প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বিভিন্ন কায়দায় শারিরীক নির্যাতন চালায়।পরে খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় ফজল কাদেরের বাড়ির আঙ্গিনা থেকে স্থানীয়রা রায়হানকে উদ্ধার করে স্বজনরা চিকিৎসার জন্য তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, রায়হানের পিঠ,মুখ ও পেট সহ শরীরের বিভিন্ন অংশে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন আছে।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রায়হান বলেন, ” চুরি করেছি বলে ফজল কাদের ও তার ভাগিনা সহ ৪/৫ জন আমাকে তুলে নিয়ে তাদের বাড়িতে একটি কুঠির সঙ্গে বেধে মারধর করে। ইলেকট্রিক তার, লোহার রড দিয়ে তারা আমাকে উপুর্যুরি আঘাত করলে আমি অজ্ঞান হয়ে পড়ি।”
এঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেছেন রায়হানের মা হুরাইতুল জান্নাত (৩৮)। তিনি বলেন, ” আমার ছেলে নির্দোষ, বিনা কারণে তাকে ফজল কাদের ও তার পরিবারের লোকজন অমানবিকভাবে মেরেছে। আমি তাদের বিচার চাই।”
এলাকাবাসির অভিযোগ, ফজল কাদের উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের সাবেক যুবলীগ নেতা ছিলেন। ইয়াবার অভিযোগে তাকে বহিস্কার করা হয়। পরে সে আরও বেপরোয়া হয়ে মাদক ব্যবসা সহ সে বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ে।
২০১৮ সালের ১০ অক্টোবর ইয়াবা ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগ উঠলে ফজল কাদের কে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিস্কার সহ জালিয়াপালং ইউনিয়নের কমিটি বাতিল করে কক্সবাজার জেলা যুবলীগ।একই বছরের সেপ্টেম্বরে র্যাবের হাতে ইয়াবা আটকের ঘটনায় রামু থানায় দায়ের করা মামলা’র (নং- ০২/৩২১) চার্জশিট থেকে ইয়াবা কারবারি ফজল কাদেরের নাম কৌশলে বাদ দেওয়ার খবর গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়।
কলেজ ছাত্রকে মারধরের প্রসঙ্গে ফজল কাদেরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে সে ফোন রিসিভ করেনি। ফোন রিসিভ করেন তার বড়ভাই পরিচয়ে আজিজুল হক আজিজ নামে এক ব্যক্তি। অবশ্য, সে নির্যাতনের ঘটনা অস্বীকার করেন।
আজিজুল হক আজিজ বলেন, “আমার ভাইকে মামলায় জড়ানোর জন্য ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে, সে এঘটনায় জড়িত না।”
রায়হানকে হাতে নাতে চুরির সময় আটক করার কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, তাকে কোন প্রকার মারধর করা হয়নি।
এপ্রসঙ্গে উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী জানান, ” এঘটনায় অভিযোগ পাওয়ার সাথে সাথে মামলা গ্রহণ করা হয়েছে। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
ভয়েস/আআ