সোমবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
ভোটকেন্দ্র দখল, গুলি, হত্যা, ভোটকেন্দ্রে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, ভোটারদের ভোট দিতে বাধা দেওয়া, কেন্দ্রে ব্যাপক বহিরাগতের অনুপ্রবেশ ইত্যাদি ভয়াবহ অভিযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হলো চতুর্থ দফার পৌরসভা নির্বাচন। চার দফা ভোটে এবারই সবচেয়ে বেশি সহিংসতা ও কেন্দ্র দখলের অভিযোগ এসেছে বিভিন্ন পৌরসভা থেকে। এরমধ্যে পটিয়ায় কাউন্সিলর প্রার্থীর ভাইকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে একজন গুলিবিদ্ধ ও একটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধের ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও, লালমনিরহাট ও ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় ভোটকেন্দ্রের বাইরে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। এসব পৌরসভায় ভোটকেন্দ্রে বহিরাগতরা ঢুকে ভোটারদের হাতের ছাপ নিয়ে তাদের ভোট দিতে না দিয়ে বের করে দিয়েছে। এরমধ্য দিয়েই আজ শেষ হলো ৫৫টি পৌরসভার ভোট। এরমধ্যে কিছু ভোটকেন্দ্রে ইভিএমে এবং বাকিগুলোতে ব্যালটে ভোট নেওয়া হয়। ভোটের পর এখন এসব পৌরসভায় শুরু হচ্ছে ভোট গণনা।
চট্টগ্রাম থেকে নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, নির্বাচনি সংঘাতে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে আবদুল মুবিদ আব্দুল্লাহ (৫০) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া পৌরসভার গোবিন্দারখীল এলাকায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। ওই সময় আব্দুল্লাহ ছুরিকাঘাতে আহত হন। পরে তাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল করিম এ তথ্য জানিয়েছেন।
পৌরসভার ৮ নম্বর কাউন্সিলর প্রার্থী রাজীব ও আবদুল মান্নানের সমর্থকদের মধ্যে এই গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। নিহত আব্দুল মুবিদ আব্দুল্লাহ কাউন্সিলর প্রার্থী আবদুল মান্নানের ছোট ভাই। এ ঘটনায় দুই প্রার্থীকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গোবিন্দারখীল ভোটকেন্দ্রের সামনে কাউন্সিলর প্রার্থী রাজীব ও আবদুল মান্নানের অনুসারীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে দুই পক্ষ গোলাগুলিতে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে ও একটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে পটিয়া থানার ওসি বলেন, গোবিন্দারখীল এলাকায় দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। এসময় প্রতিপক্ষের লোকজন আব্দুল্লাহকে ছুরিকাঘাত করে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
তিনি আরও বলেন, দুই প্রার্থীকে আট করে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। ভোট গ্রহণ স্বাভাবিক রাখতে ওই কেন্দ্রের অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সোনাইমুড়ীর একটি ভোটকেন্দ্র। সারাদেশেই সকালবেলা ছিল ভোটের এমন চেহারা। তবে প্রায় সব পৌরসভা থেকেই অভিযাগ আসে পরের চেহারা এমন থাকেনি।
নোয়াখালী প্রতিনিধি জানান, নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী পৌরসভা নির্বাচনে বোমা বিস্ফোরণ ও সহিংসতায় একজন গুলিবিদ্ধসহ ৩ জন আহত হয়েছেন। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের ভাতরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র সংলগ্ন আলোক পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ একজনসহ ৩ জনকে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহতরা হলো, মোহন (১৮), সালাউদ্দিন (২৭) ও মনির (২২)।
জানা যায়, ভোট কেন্দ্রের বাইরে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীদের সমর্থকরা সহিংসতার এই ঘটনা ঘটায়। তারা একটি ককটেল বিস্ফোরণ করে কিছু ভোটারদের ছত্রভঙ্গ করে দেয় এবং গুলিবর্ষণ করে। ওই সময় মোহন নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়।
নোয়াখালী পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন বলেন, কেন্দ্রের বাইরে বিচ্ছিন্নভাবে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে কয়েকজন আহত হয়ে নোয়াখালী সদর হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম বলেন, সোনাইমুড়ীতে পৌরসভা নির্বাচনে সহিংসতায় মোহন নামে এক যুবক বাম পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে বেলা ১১টার দিকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। এছাড়াও আরও দু’জন আশঙ্কামুক্ত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
এদিকে, জাল ভোট দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাঁঠালীয়া হাফেজিয়া মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করা হয়। জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলম এই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ বন্ধ ঘোষণা করেন।
জেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ রবিউল আলম বলেন, জাল ভোট দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে সোনাইমুড়ী পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাঁঠালিয়া হাফেজিয়া মোহাম্মদিয়া মাদ্রাসা কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ বন্ধ করে কেন্দ্রের নির্বাচনি সরঞ্জামাদিসহ সবাইকে নিয়ে আসা হয়েছে।
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি জানান, ভোটকেন্দ্রে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা, কেন্দ্রের ভেতরে ব্যাপক বহিরাগতের অনুপ্রবেশ, ভোটারদের হাতের ছাপ নিয়ে তাদের কেন্দ্রে থেকে বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের মধ্যে শেষ হয়েছে ঠাকুরগাঁও পৌরসভা নির্বাচন। রবিবার দুপুরের মধ্যে ভোটকেন্দ্রগুলোতে ক্ষমতাসীন দলের লোকজন ছাড়া বাকিদের বের করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ বিএনপি প্রার্থী শরীফ হোসেনের। তিনি অভিযোগ করেন, ৭ নং ওয়ার্ড নিশ্চিন্তপুর হাইস্কুল কেন্দ্রের বিএনপির এজেন্টদের হ্যান্ডকাফ লাগিয়ে পুলিশ আটক করে নিয়ে গেছে। ঐ কেন্দ্রে গিয়ে কোনও বুথেই বিএনপির কোনও পোলিং এজেন্টকেই পাওয়া যায়নি। এ ব্যাপারে জানার জন্য কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসারের খোঁজ করে তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। তার রুমের সামনে পাহারায় নিয়োজিত পুলিশ সদস্যরাও তিনি আছেন কিনা তা জানেন না বলে জানিয়েছেন।
আশ্রমপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা গেছে, প্রত্যেক বুথে বহিরাগতরা গোপন ব্যালটের পর্দার বাইরে দাঁড়িয়ে বলে দিচ্ছেন, এখানে এখানে টেপেন। শুধু মেয়র নয়, সরকার দলীয় কাউন্সিলরদেরও এভাবে জিতিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন, ওখানকার ঢেঁড়স মার্কার কাউন্সিলর প্রার্থী সফিউল এনাম পারভেজ । তিনি এখানে ৫ বারের নির্বাচিত কাউন্সিলর এবং ১৪ দলীয় জোটের অন্তর্ভুক্ত জাসদ (ইনু) গ্রুপের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
ঠাকুরগাঁও মহিলা কলেজ কেন্দ্রে ঘটেছে হাতবোমা বিস্ফোরণের ঘটনা। সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভিরুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আমি ঘটনা শুনেছি। সাথে সাথে পুলিশি তৎপরতা বাড়িয়েছি। এটা কোনও ভারি বিস্ফোরক ছিল না। বিচ্ছিন্ন একটি ঘটনা মাত্র।
বিএনপির অভিযোগ ভোটারদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের জন্য আওয়ামী লগের সন্ত্রাসীরা এসব ঘটনা ঘটিয়েছে।
নিশ্চিন্তপুর হাইস্কুলের ভোটার ফজলুল করিম (ডাবলু), যার ভোটার নং ৫৫৮, তিনি অভিযোগ করেন, ভোটকেন্দ্রে আমার নম্বরটা মেলানো হলো, আঙুলের ছাপ নিলো, তারপর ভেতর থেকে একজন এসে বললো, আপনি যান, আপনার ভোট হয়ে গেছে। এরকম আরেকজন ভোটবঞ্চিত চিৎকাররত নারী ভোটারের কাছে গেলে তাঁর রাগ গিয়ে পড়লো সাংবাদিকদের ওপর, তিনি বললেন,‘মিডিয়ার সাথে কথা বলে কী লাভ, সত্য কথা লেখেন নাকি আপনারা?’ এরকম আরও অনেক ভোটার মিডিয়ার সামনে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। তবে বেশিরভাগ ভোটকেন্দ্রের ভোটাররাই চারপাশের সন্দেহজনক লোকজনের ভয়ে মুখ খুলছিলেন না।
বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ, সবগুলো কেন্দ্রে এভাবেই হয়েছে ভোটের নামে আওয়ামী তাণ্ডব।
তবে, বিএনপির অভিযোগ অস্বীকার করে জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সাদেক কুরাঈশী বলেন, নৌকা মার্কার জয়জয়কার দেখে বিএনপির লোকজন প্রলাপ বকছেন।
মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে মুন্সীগঞ্জের মিরকাদিম পৌরসভা নির্বাচনের বিএনপি সমর্থিত ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী মিজানুর রহমান ভোট বর্জন করেছেন। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকাল পৌনে তিনটার দিকে রিকাবীবাজারের দুধপট্টি এলাকায় তাৎক্ষণিক এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি সাংবাদিকদের কাছে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।
এ সময় নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, সকাল ৮টায় ভোট শুরু হওয়ার পরে এক থেকে দেড় ঘন্টা সুষ্ঠুভাবে ভোট গ্রহণ হয়। কিন্তু তারপরই শুরু হয় নানা অনিয়ম। বিভিন্ন কেন্দ্রে বাইরের লোকেরা আওয়ামী লীগ সমর্থিত নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে ভোট দিতে বাধ্য করে। এমনকি আমার স্ত্রী হালিমা রহমান ও ছেলের বউ মিথিয়াও আমাকে ভোট দিতে পারেনি। নৈরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কেন্দ্রে তারা ভোট দিতে গেলে বাইরের লোকেরা বুথের গোপন কক্ষে ঢুকে নৌকা প্রতীকে ভোট দিতে বাধ্য করে।
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি জানান, লক্ষ্মীপুরের রামগতি পৌরসভায় নৌকায় ভোট দেওয়া বাধ্যতামূলক, এজেন্টদের মারধর ও কেন্দ্রে ঢুকতে না দেওয়ার অভিযোগে ধানের শীষের প্রার্থী সাহেদ আলী পটু ও লাঙলের প্রার্থী আলমগীর হোসেন ভোট বর্জন করেছেন।
রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টার দিকে তারা সাংবাদিকদের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লালমনিরহাট প্রতিনিধি জানান, লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে সাপটানা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে বিএনপির কমিশনার প্রার্থীর সঙ্গে আওয়ামী লীগের ক্যাডারদের হাতাহাতির ছবি তোলায় সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। শুধুমাত্র নারী ভোটারদের জন্য কেন্দ্রটি নির্ধারিত হলেও সকাল থেকেই ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা সেখানে দলে দলে উপস্থিত হয়ে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে। এসময় সেখানে বিভিন্ন অপবাদ দিয়ে বিএনপি ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক ও ক্যাডারদের মারধর ও কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়ার ঘটনা ঘটছে। এ ঘটনার ছবি তুলতে যাওয়ায় দ্য ইনক্যাপের সাংবাদিক সুফি মোহাম্মদকে মারধর করা হয়। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। কেন্দ্রে পুলিশ থাকলেও সরকারদলীয় নেতাদের বিরুদ্ধে তারা কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ রয়েছে।
এদিকে, লালমনিরহাট পৌরসভা নির্বাচনে ভোটকেন্দ্র দখলের অভিযোগ করেছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী রেজাউল করিম স্বপন। রবিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে তিনি ভোটকেন্দ্র পরিদর্শনে বেরিয়ে সাংবাদিকদের কছে অভিযোগ করেন, লালমনিরহাটবাসী পরিবর্তন চায় এটা বুঝতে পেরে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির একজন শীর্ষ নেতার নির্দেশে দলীয় ক্যাডাররা প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের বুথে বুথে ঢুকে ভোটারদের ভোটের বাটন নিজেরাই টিপে দিচ্ছে। প্রসঙ্গত: লালমনিরহাটে ইভিএমে ভোট অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোফাজ্জল হোসেন বলেন, তিনি প্রতিটি কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন। কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাননি।
নাটোর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, নাটোরের বড়াইগ্রাম পৌরসভায় ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন ধানের শীষ প্রতীক প্রার্থী ইছাহাক আলী। সোমবার দুপুরে নিজ বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এই ঘোষণা দেন।
এসময় ইসাহাক আলী জানান, ভোট শুরুর মাত্র ২ ঘণ্টা পর থেকেই বিভিন্ন কেন্দ্রে ধানের শীষের পোলিং এজেন্টদের গলা ধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া ছাড়াও নৌকায় প্রকাশ্যে সিল মারা হয়। এসময়
৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধামনপাড়া মাদ্রাসা কেন্দ্রে তার পোলিং এজেন্টকে মারপিট করে বের করে দেয় নৌকা প্রতীক প্রার্থীর অনুসারীরা। একের পর এক নানা অনিয়মের বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমন অবস্থায় তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়ে নতুন করে ভোট দেওয়ার দাবি জানান।
এর আগে ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী ইছাহাক আলী দাবি করেন, ভোট শুরুর পর পরই ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধামনপাড়া মাদ্রাসাকেন্দ্রে তার পোলিং এজেন্টকে মারপিট করে বের করে দেয় নৌকা প্রতীক প্রার্থীর অনুসারীরা। এভাড়া অন্যান্য অধিকাংশ কেন্দ্র থোকেই তার পোলিং এজেন্টদের গলাধাক্কা দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাউলে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী মাজেদুল বারী নয়ন ফোন রিসিভ করেননি।
রিটার্নিং কর্মকর্তা ও বড়াইগ্রাম ইউএনও জাহাঙ্গীর আলম জানান,তিনি সরেজমিনে কেন্দ্র পরিদর্শন করছেন। অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নেবেন।
টাঙ্গাইল প্রতিনিধি জানান, টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে পৌরসভা নির্বাচনে ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীর কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছে।
ররিবার (১৪ ফেব্রুয়ারি ) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌরসভার হরিপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পৌরসভার হরিপুর কেন্দ্রে ভোট দেয়াকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মোহাম্মদ নুরুন্নবী সরকার ও বিএনপি প্রার্থী আলী আকবর জব্বার
কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়েছেন জামাল হোসেন ও ইদ্রিস হোসেন নামের দুইজন।
কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সাওগাতুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
তবে সকালবেলা দেশের সবগুলো পৌরসভাতেই বিপুল সংখ্যক ভোটারের উপস্থিতিতে শুরু হয় ভোটগ্রহণ।
সবগুলো পৌরসভার প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ছিল ভোটারদের উপচে পড়া ভিড়। ভোট শুরুর আগেই অধিকাংশ ভোট কেন্দ্রে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। সূত্র:বাংলাট্রিবিউন।
ভয়েস/জেইউ।