শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৭ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বিএনপির শফি হত্যা:সাবেক এমপি আলমগীর ফরিদসহ ২৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

মহেশখালীতে বিএনপি নেতা শফিউল আলম শফিকে হত্যার অভিযোগে বিএনপি থেকে দু’বারের সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদকে প্রধান আসামি করে ২৫ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা হয়েছে৷ ১৭ আগস্ট রাতে মহেশখালী থানায় মামলাটি রেকর্ড হয়।

মহেশখালী থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) সুকান্ত চক্রবর্তী জানান- নিহত শফিউল আলম শফির বাবা কামাল পাশা বাদি হয়ে মামলাটি করেন। মহেশখালী থানায় নিয়মিত মামলার ৬ নম্বর ক্রমিকে মামলাটি রেকর্ড করা হয়। মামলায় ১ নম্বর আসামি করা হয়েছে কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে বিএনপি থেকে দুইবারের এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদকে। দুই নম্বর আসামি করা হয়েছে মহেশখালী উপজেলা যুবদল নেতা জাহেদুল হক নাহিদকে। মামলায় মোট ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।

ওসি জানান- মামলায় সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদের বিরুদ্ধে ঘটনায় হুকুম দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়। মামলার বিবরণে বলা হয়- গত ৫ জুন মোটরসাইকেল যোগে উপজেলা সদরের থেকে বড় মহেশখালীর দিকে আসার সময় বানিয়ার দোকান এলাকায় শফিউল আলম শফিকে গতিরোধ করে উপর্যোপোরি পিটিয়ে আহত করা হয় এবং পরে হাসপাতালে চিকিৎসা অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

সূত্র জানায়- গত ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর বিজয় মিছিল শেষে রাতে বাড়ি ফেরার পথে শফিউল আলম শফি (৩৫) এর উপর হামলা হয়। আহত অবস্থায় তাকে প্রথমে মহেশখালী হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। পরবর্তীতে তার অবস্থার অবনতি হলে তাকে কক্সবাজার সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। ওখানো চিকিৎসা অবস্থায় ১৩ আগস্ট বেলা সাড়ে ৩ টায় তার মৃত্যু হয়।

এদিকে এ হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে ওইদিন উপজেলা বিএনপি তাৎক্ষণিক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সমাবেশ শেষে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আবু বক্কর ছিদ্দিক সংবাদ সম্মেলন করে- ৫ আগস্ট বিজয় মিছিল শেষে রাত আনুমানিক ১২টার সময় তার নিজ বাড়িতে পথে সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ ও যুবদল নেতা নাহিদের নির্দেশে তাকে মারধোর করা হয় বলে দাবি করে। একই সাথে তিনি এ হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করেন। তিনি হামলাকারীরা বিএনপির বৈধ কমিটির কেউ নয়, তারা স্বঘোষিত বলেও দাবি করেন। এ সময় বিএনপির অনেক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।

অপরদিকে এ সংবাদ সম্মেলনের পরপরই আলদা এক সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে সাবেক এমপি আলমগীর মোহাম্মদ মাহফুজ উল্লাহ ফরিদ জানান- “৫ আগস্ট সরকার পতনের পর আমরা সবাই মিলে বিজয় মিছিল করি। রাতে শফিউল আলম শফিকে দুর্বৃত্তরা মারধোর করে বলে শুনেছি। আজ তার মৃত্যুতে আমাকে অভিযুক্ত করাটা একটি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন ছাড়া কিছু নয়। আবু বক্করের ভাই পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মেয়র মকছুদ মিয়ার অবৈধ সম্রাজ্য কায়েম করার জন্য আমাকে ও আমার দলের নেতাকর্মীকে জড়ানো হচ্ছে। শফিউল আলম শফি আমার হাতে গড়া বিএনপি কর্মী। তাকে শ্রমিক দলের নেতা বানিয়েছি।” আমার দলের নেতাকে আমরা কেন মারধোর করবো? বলে তিনি প্রশ্ন ছুড়েন। এই মৃত্যুকে ঘিরে আবু বক্কর ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করছে বলেও দাবি করেন তিনি।

প্রসঙ্গতঃ মহেশখালীতে বিএনপির রাজনীতিতে দুইটি প্রতিদ্বন্দ্বি শক্ত গ্রুপ রয়েছে রয়েছে বলে সূত্রে প্রকাশ। অনুমোদিত ভাবে কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন বলে দাবি আবু বক্কর গ্রুপ এর। অপরদিকে আরও একটি আলাদা কমিটির মাধ্যমে দলীয় কার্যক্রম চালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা আলমগীর ফরিদ সমর্থিত গ্রুপটি। বিগত সময়ে দুইটি কমিটির মাধ্যমে আলাদা দলীয় কার্যক্রম পরিচালিত হতে দেখা যায়। উপজেলায় বিএনপির গ্রুপ ভিত্তিক এই রেষারেষিতে শাফি আলম শফির উপর হামলা ও পরবর্তীতে তার মৃত্যু হয় বলে স্থানীয় বিএনপির সাধারণ কর্মীরা জানান। তবে এমন মৃত্যুর ঘটনা সকল নেতাকর্মীর মনে কঠোর আঘাত হয়েছে উল্লেখ করে মামলায় নিরীহ ব্যক্তি আসামি ও হয়রানি হলে সেটাও দলের জন্য শুভ বার্তা নয় বলেও মনে করেন তারা।

উল্লেখ্য- নিহত শফিউল আলম শফি উপজেলার বড় মহেশখালী ইউনিয়নের আওতাধীন কুলাল পাড়া এলাকার বাসিন্দা। দীর্ঘদিন থেকে তিনি বিএনপির রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত। তিনি ওই এলাকার জনৈক কামাল পাশার সন্তান। শফি -আবু বক্কর গ্রুপ এর উপজেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্বে ছিলেন, একই সাথে তিনি উপজেলা শ্রমিক দলের সভাপতির দায়িত্বে ছিলেন বলেও জানা যায়। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি অবিবাহিত ছিলেন। শফি অত্যান্ত সজ্জন, শান্ত ও মিশুক প্রকৃতির লোক ছিলেন বলে দলের নেতাকর্মীরা জানান।

রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় মহেশখালী থানার ওসি সুকান্ত চক্রবর্তী জানান- মামলার দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন হয়ে আদালতে উপস্থাপনের পর তারা পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম শুরু করবেন।

এদিকে সর্বশেষ প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে- মামলাটি তদন্ত করছেন মহেশখালী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী। সূত্র: মহেশখালীর সবখবর

ভযেস/জেইউ।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION