শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৪:২৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে এক হিজড়াকে হেনস্তা ও লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আজ দুপুরে কক্সবাজার সদর থানায় হেনস্তার শিকার হিজড়া আরোহী ইসলাম বাদি হয়ে এ মামলা করেন। এতে পুলিশ হেফাজতে থাকা অভিযুক্ত ফারুকুল ইসলাম (২২) ও নয়ন রুদ্র নামের দুইজন ৫/৬ জন অজ্ঞাতনামা যুবককে আসামী করা হয়েছে। একারণে, পুলিশের হেফাজতে থাকা ফারুকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বাদি আরোহী ইসলাম জানিয়েছেন-গত ১১ সেপ্টেম্বর বুধবার রাত ১০টার দিকে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে ঘুরতে গেলে ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক দাবি করে ফারুকুল ইসলাম সহ একদল যুবক তার প্রতিরোধ করে। তারা জানতে চাই রাতে সমুদ্রসৈকতে সাধারণ মানুষকে কেন হয়রানি করি, গালাগাল করি। এক পর্যায়ে আমাকে ও আমার সহপাটি ৬ মাসের অন্তাসত্তা প্রিয়া মনিকে লাঠি দিয়ে উপর্যুপরি বেধড়ক মারধর করে। পরে তাদের টানা-হেজড়া করে কাপড়-চোপড় ছিঁড়ে ফেলে এবং শ্লীলতাহানি করে। পরে এই চিত্র প্রিয়ামনি ভিডিও ধারণ করতে গেলে ১২ হাজার টাকা মূল্যের একটি মোবাইল কেড়ে নিয়ে যায়। একই সাথে এই ঘটনায় কোন প্রকার মামলা করতে গেলে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।
এ বিষয়ে কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো: জসিম উদ্দিন চৌধুরী জানিয়েছেন, ‘কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে কয়েকজন যুবক কর্তৃক নারীকে প্রকাশ্যে হেনস্তা, অবমাননা ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনা গতকাল শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়। ঘটনাটির গুরুত্ব ও স্পর্শকাতর বিবেচনায় পুলিশ সুপারের দিক নির্দেশনায় জেলা গোয়েন্দা শাখার একটি চৌকস টীম তৎক্ষনাৎ মূল অভিযুক্ত যুবক ফারুকুল ইসলামকে সনাক্ত করে ওইদন রাতে আটক করে। পরে ভিকটিক আরোহী ইসলাম ২জন ফারুকুল ইসলাম ও নয়ন রুদ্র (এজাহার নামীয়) সহ ৫/৬ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে সদর থানায় একটি মামলা রুজু করা হয়। পরে আসামী ফারুকুল ইসলামকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত আসামী ফারুকুল ইসলাম চট্টগ্রাম জেলার লোহাগড়া উপজেলার চুনতি বড় হাতিয়া এলাকার মৌলনা মাজেদুল ইসলামের ছেলে।
এর আগে কক্সবাজারের নবাগত পুলিশ সুপার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ জানিয়েছেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এক হিজড়াকে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধরের ভিডিও ভাইরাল হয়। পরে বিষয়টি নজরে আসলে পুলিশ ওই যুবককে হেফাজতে নেয়। এখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। হিজড়াদের পক্ষ থেকে সকালে অভিযোগ করার কথা রয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে এটি লিখিত আবেদনের উপর নির্ভর করবে’।
এর আগে শুক্রবার সকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি ভিডিও ভাইরাল হতে শুরু করে। যেখানে দেখা যায়, সমুদ্রসৈকতে এক হিজড়াকে কান ধরে উঠবস করানো হচ্ছে। তাকে ঘিরে রেখেছে জনা বিশেক যুবক। বেশির ভাগের হাতে ভিডিও ধারণরত মোবাইল। ওই হিজড়াকে হাতের লাঠি দিয়ে প্রহার করে তাকে বিচ থেকে চলে যেতে বলা হচ্ছে।
ভয়েস/আআ