রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

সুন্দরবন পুড়বে কেন?

পাভেল পার্থ:
আবারও অমীমাংসিত আগুনে পুড়ছে সুন্দরবন। ৪ মে আগুন লাগার একদিন পর ৫ মে সকাল থেকে আগুন নেভাতে কাজ শুরু করে ফায়ার সার্ভিস। ততক্ষণে ঝলসে গেছে বিস্তর বন, অঙ্গার বনতল। যদিও স্থানীয় গ্রামবাসী বলছেন আগুন লেগেছে আরও দুদিন আগেই। বিমানবাহিনীর একটি দল হেলিকপ্টার দিয়ে পানি ছিটানো শুরু করে। স্থানীয় গ্রামবাসী, স্বেচ্ছাসেবীদের সঙ্গে বন বিভাগ, কোস্টগার্ড এবং নৌবাহিনীও আগুন নেভাতে কাজ করছে। সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের জিউধারা স্টেশনের আমোরবুনিয়া টহল ফাঁড়ির লতিফের ছিলা এলাকার প্রায় কয়েক কিলোমিটারে ছড়িয়েছে আগুন। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষককে প্রধান করে জিউধারা ও ধানসাগর স্টেশন কর্মকর্তাদের নিয়ে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগ। কমিটিকে এক সপ্তাহের ভেতর তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। সুন্দরী, বাইন, গেওয়া, বলা, সিংড়াসহ বহু গাছ, চারা, বীজ ও বনতল পুড়ে গেছে।

পুড়েছে প্রায় ৭২ একর বন : সুন্দরবনের এই সাম্প্রতিক আগুন লাগার ঘটনাটিই নতুন নয়। বনজীবী, সুন্দরবন অঞ্চলের আশপাশের স্থানীয় মানুষ, বন বিভাগ ও গণমাধ্যম সূত্র মিলিয়ে দেখা যায়, গত ২৪ বছরে প্রায় ২৫ বার আগুন লেগেছে সুন্দরবনে। ২২ মার্চ যখন বিশ্বব্যাপী পানি দিবসের আয়োজন চলছে ২০০২ সালের ওইদিন শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্যে আগুন লাগে। নিশ্চিহ্ন হয়ে যায় প্রায় এক একর বন। ২০০৪ সালের ২৫ মার্চ সুন্দরবনের জন্য আরেক কালরাত্রি, আগুনে পুড়ে যায় চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলী ক্যাম্পের মাদ্রাসারছিলা অঞ্চলের ৩ একর বন। ২০০৪ সালের ২৭ ডিসেম্বর আড়ুয়ারবেড় অঞ্চলে পুড়ে যায় ৯ শতক বন। ২০০৫ সালের ৮ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের কলমতেজি অঞ্চলে পুড়ে যায় আড়াই একর বন। একই সালের ১৩ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের তুলাতলায় পুড়ে চার একর বন। এরপর ২০০৬ সাল থেকে লাগাতার বন পুড়তেই থাকে। প্রথমত ১৯ মার্চ শরণখোলা রেঞ্জের তেরাবেকায় পুড়ে এক একর বন। একই সালের ১১ এপ্রিল চাঁদপাই রেঞ্জের আমোরবুনিয়া টহলফাঁড়ি অঞ্চলে পুড়ে ৫০ শতক বন। আবারও ১২ এপ্রিল কলমতেজি টহলফাঁড়ির খুটাবাড়িয়া এলাকায় পুড়ে দেড় একর। কলমতেজিতে এর আগের বছরেই পুড়েছিল আড়াই একর বন। ২০০৬ সালের পহেলা মে একই রেঞ্জের নাংলী ফাঁড়ির পচাকুড়ালিয়া এলাকায় পুড়ে ৫০ শতক বন এবং ৪ মে ধানসাগর স্টেশন সংলগ্ন এলাকায় পুড়ে আড়াই একর বন। ২০০৭ সালেও তিনবার আগুন লাগার ঘটনা জানা যায়। এ সালের ১৫ জানুয়ারি শরণখোলার ডুমুরিয়া ক্যাম্প এলাকায় ৫ একর, ১৯ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের নাংলী এলাকায় ২ একর ও একই অঞ্চলে ২৮ মার্চ পুড়ে যায় ৮ একর বন। ২০১০ সালের ২০ মার্চ চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের গুলিশাখালী এলাকায় পুড়ে যায় ৫ একর বন। ২০১১ সালেও তিনবার আগুন লাগে। ১ মার্চ নাংলী অঞ্চলের ২৫নং কম্পার্টমেন্টে পুড়ে প্রায় ২ একর এবং একই সালের ৮ মার্চ আড়ুয়ারবেড় অঞ্চলে পুড়ে যায় ৩ একর বন। ২০১৪ সালে আবারও ২০০৪ সালের মতো কালরাত্রি নেমে আসে। ভোলা নদী থেকে প্রায় দুই কিমি ভেতরে চাঁদপাই রেঞ্জের গুলিশাখালীর পঁয়ষট্টিছিলা অঞ্চলে ২৫ মার্চ পুড়ে যায় ১০ একর বন। ২০১৬ সালের ২৭ মার্চ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত ধানসাগর স্টেশনের এই নাংলী ক্যাম্পেরই পচাকোড়ালিয়া, টেংরা ও তুলাতলী এলাকার ম্যানগ্রোভ বন আগুন দিয়ে ঝলসে দেয় দুর্বৃত্তরা। ২০১৭ সালের ২৬ মে চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর স্টেশনের নাংলী ক্যাম্পের আবদুল্লাহর ছিলা এলাকার প্রায় পাঁচ একর বনভূমি আগুনে পুড়ে যায়। ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি ধানসাগর এলাকায় এবং ৩ মে পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের দাসের ভাড়ানি এলাকাতেও আগুন লেগেছিল। গত ২৪ বছরে পূর্ব সুন্দরবনের ভোলা ও মরাভোলা নদী অববাহিকায় প্রায় ২৫টি বড় ধরনের আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ২০০২ থেকে ২০২৪ সালের ৪ মে পর্যন্ত আগুনে সুন্দরবনের ৭১ একর ৬৬ শতাংশ বনভূমি অঙ্গার হয়েছে।

বন বিভাগের কাঠ-মনস্তত্ত্ব : সুন্দরবনের আগুন লাগার ঘটনায় আমরা গণমাধ্যমে বন বিভাগের বক্তব্য দেখি। আগুনে বন পুড়ে গেলে খুব একপেশে কায়দায় এর ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করা হয়। মূলত কতটুকু জায়গা পুড়েছে এবং কত ঘনফুট কাঠ পুড়েছে। সুন্দরবনের মতো এক জটিল বাস্তুতন্ত্র যখন ঝলসে যায় তখন এর ক্ষতির হিসাব কী কেবল কাঠের ঘনফুট দিয়ে হবে? একটি বন নিশ্চয়ই কাঠের বাগান নয় বা কোনো শখের উদ্ভিদ উদ্যান কী চিড়িয়াখানা নয়। এর আগের অগ্নিকান্ডগুলোতে ক্ষতির প্রসঙ্গে বন বিভাগের বক্তব্য ছিল, আগুনে মূলত লতাগুল্ম পুড়ে, কোনো কাঠের গাছ পুড়ে না বলে বনের তেমন কোনো ক্ষতি হয় না। বন বিভাগকে কাঠকেন্দ্রিক মনস্তত্ত্ব থেকে বাইরে আসতে হবে। সুন্দরবনকে দেখতে হবে এর অগণতি অণুজীব, উদ্ভিদ, প্রাণী ও বননির্ভর বনজীবীদের ঐতিহাসিক সংসার ও জটিল বাস্তুসংস্থান হিসেবে। এখানে বলা বা সিংড়া হোক, বাইন বা সুন্দরী হোক, বাঘ কী শামুক হোক, শ্যাওলা কী ছত্রাক হোক যে কোনো প্রাণের ক্ষতি হলেই মুষড়ে পড়বে সুন্দরবন।

নিহত বলা গাছ ও ঝলসানো বনতল : একটি বনের স্তরবিন্যাসের ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সুন্দরবনে বারবার আগুন লেগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির ধকল সইতে হচ্ছে বনতলকে। এমনকি সুন্দরবনের নদী-খাল ও খাঁড়ি থেকে বনের ভেতরের দিকে প্রাণবৈচিত্র্যের যে বিন্যাস তা উল্টেপাল্টে যায়। বিপর্যস্ত হয় খাদ্যশৃঙ্খল এবং আঘাত লাগে সামগ্রিক খাদ্যজালে। কারণ আগুন লাগছে মূলত বনপ্রান্তে এবং সেখানে হারগোজা, ধানচি, বাঘ-ফার্ন, সিংড়া, বলা, কালিলতা, গোলপাতা, কেয়া, হেন্তাল, আঙ্গুরলতা, বাওয়ালিলতারই আধিক্য বেশি থাকে। এটিই সুন্দরবনের বৃক্ষসমাজের অবস্থান বৈশিষ্ট্য। সুন্দরবনের জন্য এই বনতল খুবই গুরুত্ববহ এবং এখানকার সব প্রাণসম্পদ পুরো বনের টিকে থাকা ও বিকাশের সঙ্গে সম্পর্কিত। বারবার আগুনে সবচেয়ে বেশি পুড়েছে বলা, সিংড়া ও লতাগুল্ম। বনের এই অংশটুকু নানা প্রাণীর আশ্রয়স্থল। বিশেষত কাঁকড়া, শামুক, গুইসাপ, ব্যাঙ, সাপ, পতঙ্গ ও নানা জলচর পাখিদের। সুন্দরবনের বনজীবী-বিজ্ঞানমতে, বলা গাছের ঝোপে বাটাং, ঘুঘু, বক ও কুকু পাখি বাসা বানায়। বলা গাছের ঝোপ এই পাখিদের আশ্রয়স্থল। মৌয়াল, বাওয়ালি ও জেলেরা বলা গাছের নানা ব্যবহার জানেন। এই গাছের ছাল সুন্দরবন অঞ্চলে দড়ি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। নানা কিছু বাঁধার কাজে এই দড়ি কাজে লাগে। সিংড়া গাছের কা- ঘরের খুঁটি হিসেবেও অনেকে ব্যবহার করেন। বনের আশপাশের অনেকের কাছেই শুকনো বলা ও সিংড়া গাছ জ্বালানির উৎস। বলা ও সিংড়ার ঝোপে মৌমাছি চাক বানায়। এসব চাক ঘন ঝোপের আড়ালে থাকে বলে অনেক সময় নানা আকৃতির হয় এবং এসব ঝোপের মধু মিশ্র স্বাদের হয়। বলা ম্যানগ্রোভ অরণ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ। মালভেসি পরিবারের এই গাছের উদ্ভিদতাত্ত্বিক নাম হিবিসকাস টিলিয়াসিস। এশিয়া অঞ্চলে বিশেষত তাইওয়ানে বনসাই তৈরিতে এর বহুল ব্যবহার আছে, ইন্দোনেশিয়াতে এটি জাগ দেওয়ার কাজে ব্যবহৃত হয়। অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ জে উদ্দিন, ডারেন গ্রেস ও এভেলিন টিরালংগো ২০০৮ সালে বাংলাদেশের ১২টি ঔষধি উদ্ভিদের সাইটোটক্সিক প্রভাব নিয়ে গবেষণা করেন। এতে দেখা যায়, বলা গাছের এই গুণ যথেষ্ট, যা ক্যানসার প্রতিরোধে ভূমিকা রাখতে পারে। বারবার চাঁদপাই রেঞ্জের ধানসাগর ও নাংলী অঞ্চলে আগুন লাগায় বনতল পুড়ে যাওয়ায় এর বৃক্ষবৈচিত্র্য ও বিন্যাসে এক পরিবর্তন তৈরি হচ্ছে। দশ বছরে এই অঞ্চলের ঝোপে মৌচাকের সংখ্যা নিদারুণভাবে কমে এসেছে। এটি সুন্দরবনের প্রাকৃতিক পরাগায়ন ও নতুন বন জন্ম এবং বিকাশের জন্য এক বিপদবার্তা।

বর্ণবাদী অপবাদ বন্ধ হোক : সুন্দরবনে সবসময় আগুন লাগে শুষ্ক মৌসুমে। প্রতিবারই আগুন নেভানোর কাজ শুরু হতে হতেই বহু বন পুড়ে যায়। বনজীবী, গ্রামবাসী ও স্বেচ্ছাসেবীদের ছাড়া আগুন নেভানো সম্ভব হয় না। প্রতিবার একটি তদন্ত কমিটি এবং একটি কার্বন-কপি মার্কা তদন্ত প্রতিবেদন হয়। কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ও নথি ছাড়াই বর্ণবাদী কায়দায় সুন্দরবনের বনজীবীদের ওপর দোষ চাপানো হয়। গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২৪টি তদন্ত প্রতিবেদনের প্রায় ১৫টিতেই বলা হয়েছে অসাবধানতাবশত জেলে-মৌয়ালদের ফেলে দেওয়া আগুন থেকে আগুন লাগে সুন্দরবনে। এ ছাড়া পাঁচবার মাছ মারার জন্য দুষ্কৃতকারীদের দেওয়া আগুনের কথা উল্লেখ হয়েছে। এ ছাড়া প্রচন্ড তাপপ্রবাহ এবং আক্রোশবশত ইচ্ছাকৃত অগ্নিসংযোগের সম্ভাবনার কথা উল্লেখ হয়েছে ৪ বার করে। কিন্তু সুন্দরবনের বাস্তুতন্ত্র ও প্রতিবেশগত-সংস্কৃতি বিষয়ে বিন্দুমাত্র ধারণা থাকলে আগুন লাগানোর মতো এত নিদারুণ নির্মম অপবাদ কেউ বনজীবীদের দিতে পারে না। সুন্দরবনের জেলে, মৌয়াল, বাওয়ালি, বাগদী বনজীবী জনগণের কাছে বাদাবন মায়ের মতো। বহু নিয়ম মেনে বনজীবীরা মাছ, কাঁকড়া, গোলপাতা, মধু, মোম সুন্দরবন থেকে সংগ্রহ করেন। আর এসব লোকায়ত জ্ঞান এবং অনুশীলন ঐতিহাসিক। সুন্দরবনের সঙ্গে বনজীবীদের কেবল প্রতিবেশ বা সাংস্কৃতিক নয়, জটিল আধ্যাত্মিক সম্পর্কও রয়েছে। আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান এবং অগ্নিকান্ড বন্ধ করতে ব্যর্থ বন বিভাগ বনজীবীদের ওপর একতরফাভাবে বর্ণবাদী অপবাদ চাপিয়ে দিতে পারে না। মধু-মোম সংগ্রহের সময় মৌমাছি তাড়াতে কারোর ব্যবহার কিংবা বনে থাকাকালীন খালের ধারে নৌকায় যখন রান্না হয় তখন বনজীবীরা কেবল সাবধানতার সঙ্গেই সেই আগুন ব্যবহার করে না, বরং তাদের প্রতি পদে পদে এক পবিত্র এলাকার প্রতি নতজানু থাকতে হয়। আর সেই বনজীবীরা পঁচিশ বছর ধরে সুন্দরবনকে পুড়িয়ে মারছে এটি কী কোনোভাবেই হতে পারে? বন বিভাগের সূত্র বলছে, পূর্ব সুন্দরবন বিভাগ থেকে পশ্চিম সুন্দরবনে মধু বেশি আহরিত হয়, বনজীবীদের সংখ্যাও বেশি। তাহলে সেখানে বনজীবীদের মাধ্যমে কেন আগুন লাগে না? পূর্ব সুন্দরবনে আগুন লাগার কারণ খতিয়ে দেখতে এবং অগ্নিকা- বন্ধ করতে প্রথমত সুন্দরবনকে অন্তর ও দায়িত্বে ধারণ করতে হবে। আগুন লাগার পর যেসব তদন্ত প্রতিবেদন হয় এবং সেসব প্রতিবেদনে কার্বন-কপিমার্কা হলেও বেশ কিছু সুপারিশ থাকে। যেমন পুকুর খনন, ৪০ কিলোমিটার খাল খনন, বন বিভাগের জনবল বাড়ানো, বনরক্ষীদের টহল কার্যক্রম জোরদার করা, পর্যবেক্ষণ টাওয়ার তৈরি করা, চাঁদপাই রেঞ্জের ৩৫ কিলোমিটার নাইলনের দড়ি দিয়ে বেড়া নির্মাণ, রিভার ফায়ার স্টেশন তৈরি কিংবা বনসংলগ্ন ভরাট হওয়া ভোলা নদী খনন ইত্যাদি। এসব সুপারিশ কেন কার্যকর হয় না এই প্রশ্ন তুলতে হবে। আইন অনুযায়ী সুন্দরবনের প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন দশ কিলোমিটার এলাকার ভেতর কোনো বৃহৎ স্থাপনা ও শিল্পকারাখানা নির্মাণ করা যায় না। পরিবেশ অধিদপ্তর সুন্দরবন এলাকায় মারাত্মক পরিবেশ দূষণকারী হিসেবে ১৯০টি ব্যবসা ও শিল্পপ্রতিষ্ঠানকে ‘লাল’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছে। সুন্দরবনের চারধারে শিল্পায়ন, রাসায়নিক দূষণ কিংবা বাণিজ্যিক নৌচলাচলকে প্রশ্ন করতে হবে। বনজীবীদের ওপর অহেতুক দোষ না চাপিয়ে আমরা আশা করব বন বিভাগ নিরপেক্ষ তদন্ত করবে এবং রাষ্ট্র সেসব সুপারিশ বাস্তবায়নে তৎপর হবে। পঁচিশ বছর ধরে অমীমাংসিত অগ্নিকা-ের ক্ষত এবং নিশানা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা বিশ্বের বৃহত্তম বাদাবনের প্রতি সাংবিধানিক অঙ্গীকার পালনে রাষ্ট্র সোচ্চার হোক।

লেখক: প্রাণবৈচিত্র্য ও প্রতিবেশবিষয়ক গবেষক

animistbangla@gmail.com

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION