শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২২ পূর্বাহ্ন
মাওলানা আহসান আমিন:
আমরা আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন একমাত্র তার দাসত্ব করার জন্য। তাই আমরা প্রভু নির্দেশিত পন্থায় দৈনিক পাঁচবার নামাজ আদায়, রোজা পালন, জাকাত প্রদান, দান-সদকাসহ প্রভৃতি ইবাদতমূলক কাজ করে থাকি। কেননা দুনিয়াতে শান্তি ও আখিরাতের পাথেয় এসব ইবাদতেই নিহিত। কিন্তু ইবাদত কবুল হওয়ার পূর্বশর্ত হালাল রুজি উপার্জন। অবৈধ পন্থায় উপার্জন করে যত ইবাদতই করা হোক না কেন, তা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। অনেকেই বৈধ-অবৈধের মিশেলে উপার্জন করে বৃদ্ধাবস্থাতায় খুব আল্লাহ-বিল্লাহ করেন এবং মনে করেন আল্লাহতায়ালা ক্ষমাশীল। তাই তিনি ক্ষমা করে দেবেন। তাদের এমন ধারণা নিছক ভুল ছাড়া কিছু নয়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, একদা রাসুল (সা.) সবাইকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘হে মানবজাতি! আল্লাহ পবিত্র, তিনি পবিত্রতা ব্যতীত অন্য কিছু কবুল করেন না। নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনদের তাই আদেশ করেছেন, যা তিনি নবী-রাসুলদের আদেশ করেছেন। অতঃপর রাসুল (সা.) এমন এক ব্যক্তির কথা উল্লেখ করেন, যে দীর্ঘ সফর করে ধূলিমলিন চেহারা ও পোশাক নিয়ে আকাশের দিকে দুই হাত তুলে ইয়া রব, ইয়া রব বলে দোয়া করে। অথচ তার খাদ্য, পানীয়, পোশাক হারাম। তাহলে তার দোয়া কীভাবে কবুল হতে পারে?’
বৈধকে অবৈধের সঙ্গে গুলিয়ে না ফেলে সে বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রাখা প্রত্যেক মুসলমানের শরিয়ত কর্তব্য। আল্লাহর নিকট ইবাদত ও দোয়া কবুল হওয়ার জন্য হালাল উপার্জন আবশ্যক। তাই প্রত্যেকের উচিত উপার্জনের ক্ষেত্রে শরিয়তের বিধিনিষেধ মেনে চলা। আল্লাহতায়ালা যেমন বান্দাদের জান্নাতের সুসংবাদ দিয়েছেন, তেমন হারাম পন্থায় উপার্জনকারীদের কঠিন শাস্তির ভীতি প্রদর্শনও করেছেন। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, ‘হারাম খাদ্যে গঠিত শরীর জাহান্নামের ইন্ধন হবে।’ এজন্য হারাম ভক্ষণ থেকে বিরত থাকা। হারাম ভক্ষণকারীর অন্যান্য কাজও অহিতকর হয়। কেননা খাদ্যের প্রতিক্রিয়া মানুষের কর্মের ওপর পড়ে। বর্তমান সময়ে সুদ-ঘুষের ব্যাপকতায় হালাল উপার্জনেও হারাম মিশে যাচ্ছে ধর্মীয় শিক্ষায় পুরোপুরি জ্ঞাত না হওয়ার কারণে। এজন্য প্রয়োজন ধর্মীয় শিক্ষার বিস্তার। ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপকতার জন্য সবার উদ্যোগী হতে হবে। যেন এই নশ^র জগতে প্রভু নির্দেশিত পন্থায় ইবাদত করে পরকালের পাথেয় অর্জন করতে পারি।
ভয়েস/আআ