শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১০:২৯ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কবুল হজের বিনিময়ে জান্নাত

মীযান মুহাম্মদ হাসান:
হজ আরবি শব্দ। এর অর্থ ইচ্ছা করা। নির্দিষ্ট সময়ে নির্ধারিত কিছু বিধান পালনের নাম হলো হজ। এর মধ্যে বাইতুল্লাহ তথা আল্লাহর ঘর জিয়ারত করা, মসজিদে নববি জিয়ারত করা, আরাফায় অবস্থান করা ইত্যাদি হলো এক একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ভিত্তির মধ্যে হজ হলো একটি।

হজ আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। এর জন্য প্রয়োজন হলো সক্ষমতা, বিশেষ করে আর্থিক সক্ষমতা থাকা জরুরি। মহাগ্রন্থ আল কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে, আল্লাহর উদ্দেশে ওই গৃহের হজ করা তার ওপর অবশ্য কর্তব্য। আর যে তা অস্বীকার করবে (সে জেনে রাখুক যে), আল্লাহতায়ালা বিশ্বজগতের প্রতি অমুখাপেক্ষী।’ (সুরা আলে ইমরান ৯৭)

আয়াতে ‘যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, আল্লাহর ঘরে আসা-যাওয়ার মতো যথেষ্ট অর্থ ও পাথেয় যার কাছে আছে। একইভাবে রাস্তা ও জান-মালের নিরাপত্তা এবং শারীরিক সুস্থতা ইত্যাদিও সামর্থ্যরে অন্তর্ভুক্ত। আর মহিলাদের জন্য মাহরাম (স্বামী অথবা যার সঙ্গে তার বিবাহ চিরতরে হারাম এমন কোনো পুরুষ) থাকা জরুরি। (ফাতহুল কাদির)

এই আয়াতটি প্রত্যেক সামর্থ্যবান ব্যক্তির ওপর হজের বিধান ফরজ হওয়ার দলিল। হাদিসের আলোকে এ কথা জানা যায় যে, হজ জীবনে একবারই ফরজ। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও হজ না করাকে কোরআনে কুফরি বলে আখ্যায়িত করেছে। এ থেকেও হজ ফরজ হওয়া এবং তা যে অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, এ বিষয়ে কোনো সন্দেহের অবকাশ থাকে না। বহু হাদিস ও সাহাবিদের উক্তিতে সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে হজ করে না, তার ব্যাপারে কঠোর ধমক এসেছে। (তাফসিরে ইবনে কাসির)

আল্লাহতায়ালা তার প্রিয় হাবিবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আর মানুষের মধ্যে হজের ঘোষণা দিন। তারা আপনার কাছে আসবে পায়ে হেঁটে এবং সর্বপ্রকার ক্ষীণকায় উটসমূহের পিঠে (আরোহণ করে) । তারা আসবে দূরের পথ অতিক্রম করে।’ (সুরা হজ ২৭)

তাফসিরে আহসানুল বয়ানে উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহতায়ালার কুদরতের এক অপার মহিমা যে, মক্কা নগরীর পাহাড়ের চূড়া থেকে উচ্চারিত সেই আহ্বান আজ পৃথিবীর কোনায় কোনায় পৌঁছে গেছে। প্রত্যেক হজ ও ওমরাহ সম্পাদনকারী হজ ও ওমরাহর সময় সেই আহ্বানে সাড়া দিয়েই মহান মালিক আল্লাহর কাছে ‘লাব্বাইক’ তথা আমি উপস্থিত বলে সাড়া দিয়ে থাকেন।

আলহামদুলিল্লাহ, যা বর্তমান সময়েও স্বাভাবিকভাবে পালিত হয়ে আসছে।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, সর্বোত্তম আমল কোনটি? তিনি বললেন, আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি ইমান আনা। জিজ্ঞাসা করা হলো, এরপর কোনটি? তিনি বললেন আল্লাহর পথে (শত্রুর মোকাবিলায়) জিহাদ করা। জিজ্ঞাসা করা হলো, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন মাবরুর হজ তথা কবুল হজ। (সহিহ বুখারি)

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, এক ওমরাহর পর আরেকটি ওমরাহ পালন করা, উভয়ের মধ্যবর্তী সময়ের (গুনাহের) জন্য কাফফারা স্বরূপ। আর একটি কবুল হজের প্রতিদান হলো জান্নাত। (সহিহ বুখারি)

শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজ এ তিনটি মাস হলো পবিত্র হজ পালনের মাস। ইতিমধ্যে সারাবিশ্ব থেকে আল্লাহর অনেক মেহমান হজের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে বাইতুল্লাহর সফর শুরু করেছেন। আল্লাহতায়ালা আমাদের বাইতুল্লাহ যাওয়ার তাওফিক দান করুন। যারা এ বছর হজে যাচ্ছেন এবং হজ পালন করবেন, আল্লাহ তাদের হজকে কবুল করুন। আমিন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION