শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:৫২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

সৎ ব্যবসায়ীর মর্যাদা

আশফাক সালেহীন:
সৎ ব্যবসায়ীর মর্যাদা
মহান আল্লাহ সকলের রিজিকের ব্যবস্থা করেন। তিনি রিজিক সরাসরি কারও হাতে তুলে দেন না। বরং বান্দার শ্রম ও প্রচেষ্টার মাধ্যমে তা উপার্জন করতে হয়, এটাই আল্লাহর নিয়ম। মানুষ মাটির মাধ্যমে ফসল, বিবিধ গাছপালা এবং অসংখ্য ফলমূল, পানির মধ্যে সুস্বাদু মাছ, বিশেষ করে স্থলে, শূন্যে ও আকাশে বিবিধ পশুপাখিসহ অগণিত খাদ্যসামগ্রী আল্লাহপাকের নেয়ামত স্বরূপ আহরণ করে।

এছাড়া মানুষ নিজ নিজ বৈধ কর্মক্ষেত্রে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরিসহ বহুবিধ পেশা ও কর্মের মাধ্যমে রুজির জোগান দিয়ে থাকে। প্রসঙ্গত বলতে হয়, মানুষ যত দিক দিয়েই রুজি অর্জন করুক না কেন, তার ১০ ভাগের ৯ ভাগই প্রাপ্ত হয় ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে। এমনকি ইতিহাসে দেখা যায়, আল্লাহর অলি, দরবেশ, পীর-ফকির এবং মহান বুজুর্গানে দ্বীন বিবিধ ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করতেন। আল্লাহর রাসুল মুহাম্মদ (সা.) স্বয়ং ব্যবসা-বাণিজ্য করেছিলেন। হজরত খাদিজা (রা.)-এর পক্ষে তিনি বেশ কয়েকবার সিরিয়া গমন করেন ব্যবসা-বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে। এছাড়া তিনি মরুপ্রান্তরে মেষও চড়াতেন।

বৈধভাবে হালালপন্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য করা বড় ইবাদত। এটি জীবিকা নির্বাহের ক্ষেত্রে এক বড় মাধ্যম। একথা স্মরণ রাখতে হবে, সমাজে যারা অসৎ-অসাধু পথে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে অঢেল অর্থ উপার্জন করে, জোর-জুলুম, মিথ্যা, প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা করে অপরকে ঠকিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে নিপতিত করে, অঢেল টাকা আয় করার বদ নিয়তে হেন ধরনের কুপথ নেই যা তারা অবলম্বন করে না এবং পর্বতসম অর্থ-সম্পদ গড়ে তোলে, তা সম্পূর্ণ অবৈধ।

আমাদের সমাজে আরও লক্ষ করা গেছে, এসব অসৎ-অসাধু ব্যবসায়ী সমাজে সুনাম অর্জনের জন্য দেশের বিশেষ বিশেষ এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, রাস্তাঘাট, পুল, স্কুল ও কলেজসহ বিবিধ সামাজিক কর্মকাণ্ডে প্রচুর অর্থ দিয়ে এক ধরনের মাতব্বর সেজে বসে। তাদের প্রতি আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.)-এর ধিক্কার। লোক দেখানো দান বা সেবা করা অতীব জঘন্য অপরাধ।

সর্বোৎকৃষ্ট ও সর্বাধিক হালাল উপার্জনের ক্ষেত্র হলো ব্যবসা-বাণিজ্য। ব্যবসায় যারা সাধারণ মানুষকে অহেতুক বাটপারি থেকে বিরত থেকে সম্পূর্ণ সৎ ও সাধুতার সঙ্গে ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করে, সমাজের কল্যাণ সাধন করে, তারাই সমাজ, দেশ ও জাতির মহান সেবক। হজরত রাসুল (সা.) বলেছেন, সৎ ব্যবসায়ীরা পরকালে নবী, সত্যবাদী ও শহীদদের সঙ্গে থাকবে। অর্থাৎ সৎ ব্যবসায়ীরা কেয়ামতের মাঠেও সম্মানিত হবে।

আমাদের দেশ ও সমাজে এখনো এমন সৎ ও সাধু ব্যবসায়ী আছেন যারা ন্যায্যমূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রির মাধ্যমে সমাজ ও জাতির খেদমত করে মহৎ সেবাকার্যে নিয়োজিত রয়েছেন। এ সম্পর্কে পবিত্র হাদিসে বলা হয়েছে, ‘এসব সৎ ও সাধু ব্যবসায়ী মহান সেবকের প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের অশেষ রহমত, বরকত ও নেয়ামত বর্ষিত হবে।’ এরা একটি জাতির সম্মানিত গোষ্ঠী, যাদের দ্বারা দেশ, সমাজ ও জাতি মানবতাবোধের পরিচয় পায় এবং মহা কল্যাণ ও আশীর্বাদস্বরূপ যে কথা আমাদের রাসুল (সা.) বহু আগেই পৃথিবীবাসীকে জানিয়ে দিয়েছেন। আসুন, আমরা সৎ ও হক পথে হালাল উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের মাধ্যমে দেশ, সমাজ ও জাতির মহান সেবক হই।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION