শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৫৭ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

নামাজে মুমিন আল্লাহর সান্নিধ্য পায়

মুফতি হুমায়ুন কবির মুহিউদ্দিন:
মহান আল্লাহর সঙ্গে বান্দার ভালোবাসা, বিনয়, কাকুতি-মিনতি, নিভৃতে কথোপকথন, আস্থা ও নির্ভরতার যে সম্পর্ক তা সবচেয়ে সুন্দরভাবে ফুটে ওঠে নামাজের মাধ্যমে। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘বান্দা তার প্রতিপালকের সবচেয়ে কাছে থাকে তখন, যখন সে সেজদা করে। সুতরাং তোমরা (সেজদায়) বেশি করে দোয়া করো।’ (সহিহ মুসলিম ৪৮২)

এটি ইসলাম ধর্মের অনন্য বৈশিষ্ট্য। বান্দা তার রবের সঙ্গে কোনো ধরনের মধ্যস্থতা ছাড়াই সরাসরি কথা বলতে পারে। যখন খুশি তখনই যোগাযোগ করতে পারে। আল্লাহর সঙ্গে বান্দার নিভৃতে কথোপকথন ও যোগাযোগ সম্পর্কে আনাস ইবন মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত একটি হাদিস এসেছে, রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন নামাজে দাঁড়ায়, তখন সে তার রবের সঙ্গে একান্তে কথা বলে।’ (সহিহ বুখারি ৪০৫)

এই হাদিস থেকে পরিষ্কার বুঝা যায়, নামাজ হলো রবের সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যম। আবার এই নামাজের মধ্যে সেজদা হলো মহান আল্লাহর একেবারে কাছে চলে যাওয়ার মাধ্যম। নামাজ ও সেজদার এই বর্ণনাকে সামনে রেখে যদি আমরা কোরআনের একটি আয়াত নিয়ে ভাবি, তাহলে সত্যি আনন্দিত না হয়ে পারি না। মহান আল্লাহ তার মুমিন বান্দাদের কী চমৎকার পদ্ধতি বলে দিয়েছেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা ধৈর্য ও নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো। নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সঙ্গে আছেন।’ (সুরা বাকারা ১৫৩)

এই সাহায্য প্রার্থনার বিষয় সম্পূর্ণ উন্মুক্ত। যুদ্ধ থেকে শুরু করে ঘরের চুলা পর্যন্ত সবকিছুই এর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং বান্দা তার জীবনের সব প্রয়োজনে মহান আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইবে। সন্তানের পরীক্ষা, কন্যার বিয়ে, বাবার অসুস্থতা আর স্ত্রীর চাওয়া-পাওয়া, এমনকি ডাল-ভাতের প্রয়োজনেও সে সাহায্য চাইবে আল্লাহর কাছেই, সাহায্য চাইবে নামাজের মাধ্যমে। এই বিষয়টি আল্লাহতায়ালা আরও স্পষ্ট করে বলেছেন অন্য আয়াতে। রাসুল (সা.)-কে সম্বোধন করে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আপনি আপনার পরিবারবর্গকে নামাজের আদেশ দিন আর নিজেও তাতে অবিচল থাকুন। আমি আপনার কাছে রিজিক চাই না। আমিই আপনাকে রিজিক দিই। আর শুভ পরিণাম তো মুত্তাকিদের জন্যই।’ (সুরা তাহা ১৩২)

হাদিসে সম্বোধন রাসুল (সা.)-কে করা হলেও এই বিধান সব মুসলমানের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। আর আয়াতের মর্ম হলো, রিজিক সংগ্রহ, পরিবার-পরিজনের জীবিকার ব্যবস্থা করা বান্দার কর্তব্য নয়। তার কর্তব্য শুধু কোনো হালাল পন্থা অবলম্বন করা। অতঃপর অভাব, সংকট ও বিপদাপদে নামাজ পড়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা করা। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর আমল লক্ষ করুন রাসুলুল্লাহ (সা.) কখনো অভাবে পড়লে পরিবারের লোকদের ডেকে বলতেন, নামাজ পড়ো, নামাজ পড়ো। (শুয়াবুল ইমান ৩১৮৫)

এই কথাটি আরেকটু পরিষ্কার হয়ে উঠেছে অন্য একটি হাদিসে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে আদম সন্তান! তুমি আমার ইবাদতের জন্য অবসর হও, আমি তোমার অন্তরকে ধনী করে দেব এবং তোমার অভাব দূর করে দেব। আর যদি তা না করো আমি তোমার অন্তরকে নানা ব্যস্ততায় পূর্ণ করে দেব আর তোমার অভাব দূর করব না।’ (তিরমিজি ২৪৬৬)

ছোট-বড় যেকোনো সংকটে সালাতুল হাজত পড়া হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নত। দুনিয়ার যেকোনো সমস্যায় বান্দা নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে চাইলে আল্লাহ তার জন্য উত্তম ব্যবস্থা করে দেবেন। নামাজ হলো আল্লাহর কাছে প্রার্থনার বিশেষ মাধ্যম। মুমিন নামাজের মাধ্যমেই আল্লাহর সান্নিধ্য পায়। আল্লাহতায়ালা নামাজের মাধ্যমে আমাদের জীবনের সকল সমস্যা সমাধানের তাওফিক দান করুন। আমিন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION