সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:১৫ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

বদলে গেছে জেলার ২১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়

আবদুল আজিজ:

বদলে গেছে কক্সবাজারের ৩টি উপজেলার ২১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। রঙ-বেরঙের বিদ্যালয়ের ভবন, পরিচ্ছন্ন বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা। শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন দুপুরে ভিটামিন যুক্ত বিস্কুটের পাশাপাশি স্বাস্থ্য, কৃষি ও পাঠাগার বিষয়ে হাতে কলমে দেয়া হচ্ছে শিক্ষা। ‘ইউএসডিএ’ এর অর্থায়নে ‘স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম’ এর আওতায় সুবিধা পাচ্ছে জেলার ৬০ হাজার কোমলমতি স্কুল শিক্ষার্থী।

কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফ ও কুতুবদিয়া জেলার অবহেলিত ২১১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬০ হাজার কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পাশে দাড়িয়েছে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি। ‘‘ইউএসডিএ’ এর অর্থায়নে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর যৌথভাবে বাস্তবায়ন করছে। এতে করে বদলে গেছে এসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলো। বিদ্যালয়ের প্রত্যেকটি ভবনকে সাজিয়েছে রঙ-বেরঙের কালি দিয়ে। বিদ্যালয় আঙ্গিনায় সোভা পাচ্ছে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন পরিবেশ। ‘স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম’র আওতায় বিদ্যালয়ের শ্রেণী কক্ষে পাঠাগার, স্কুল আঙ্গিনায় কৃষি ক্ষেত ও প্রতিদিন দেয়া হচ্ছে স্বাস্থ্য সেবা। বিদ্যালয়ে পড়া-লেখার পাশাপাশি পাঠাগার, স্বাস্থ্য ও কৃষি বিষয়ে হাতে কলমে শেখার পর বাড়িতে অভিভাবকদেরও সচেতন করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

কথা হয় কক্সবাজারের উখিয়ার কামরিয়ারবিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেনীর শিক্ষার্থী আফনান জান্নাত আফরিনের সঙ্গে। আফরিন জানান, ‘বিদ্যালয়ে পড়া-লেখার পাশাপাশি তিনি অন্যান্য সহপাটিদেও স্বাস্থ্য বার্তা দিয়ে যাচ্ছে। কৃমি নাশক ট্যাবলেট কিভাবে সেবন করবে, উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, সর্দি-কাশি হলে করণীয় কি এবং দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় করণীয় সম্পর্কে ধারণা দিচ্ছে।’

উখিয়ার জালিয়াপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যায়ের ৪র্থ শ্রেণীর শিক্ষার্থী রেজাউল করিম কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘ডাব্লিউএফপি’র প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় সবজি চাষ সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা পেয়েছেন। সবজি চাষ সম্পর্কে নিজে শিখে, বাসায় গিয়ে বাবা-মাকেও শিখাচ্ছেন। গড়ে তুলছেন সবজি ক্ষেত।’

উখিয়ার জালিয়াপালং উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো: আবু তাহের কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, কৃষি ও স্বাস্থ্যসেবার মান বাড়াতে উক্ত প্রকল্পে বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও পরিচালনা কমিটির কর্মকর্তাদের দেয়া হয়েছে বিশেষ প্রশিক্ষণ। বিদ্যালয়ে বিস্কৃট সরবরাহ সহ নানা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার কারণে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বেড়েছে। ’

একই বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মো: আবুল কাসেম বাবুল কক্সবাজার ভয়েসকে জানান, ‘বর্তমান সরকারের তদারকিতে ডাব্লিউএফপি’র সহযোগিতায় বিদ্যালয় এখন পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। বিদ্যালয়ের শিক্ষক থেকে শুরু করে শিক্ষার্থীদের মধ্যে লেখাপড়ার মান ও আগ্রহ বেড়েছে। তাই, পুরো কক্সবাজার জেলার অন্যান্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সমুহকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা উচতি।’

ডাব্লিউএফপি’র কক্সবাজার স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম এসোসিয়েট মোহাম্মদ আজাহারুল ইসলাম কক্সবাজার ভয়েসকে বলেন, ‘২০১০সাল থেকে কক্সবাজারের পেকুয়া ও মহেশখালীতে ‘স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম’ চালু হয়েছে। বর্তমানে উখিয়া, টেকনাফ ও কুতুবদিয়ার ২১০টি বিদ্যালয়ের প্রকল্প চালু রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর, শিক্ষা ও গণশিক্ষা মন্ত্রাণালয়ের অধিনে দুটি এনজিও এসব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছেন। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়িয়ে লেখাপড়ার মানোন্নয়ন করা।’

উল্লেখ্য, ডব্লিউএফপি-এর স্কুল ফিডিং প্রোগ্রামে সহায়তা দিয়েছে ইউনাইটেড স্টেটস্ অব আমেরিকা ডিপার্টমেন্ট অব এগ্রিকালচার (ইউএসডিএ)-এর ম্যাকগভার্ন-ডোল ইন্টারন্যাশনাল ফুড ফর এডুকেশন এন্ড চাইল্ড নিউট্রিশন প্রোগ্রাম।

ছোট বয়সে বিদ্যালয়ে লেখাপড়ার পাশাপাশি বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায় সবজি চাষ, পাঠাগার সংরক্ষণ ও স্বাস্থ্য বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION