শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ০৩:৪৬ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজারে একজনের পরিবর্তে আরেকজনকে আসামি সাজিয়ে আত্মসমর্পণ করানোর ঘটনায় আইনজীবী নজিবুল আলম নজীবকে জামিন দেননি হাইকোর্ট। বুধবার (৩ মে) বিচারপতি কামরুল হোসেন মোল্লা ও খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আইনজীবীর আগাম জামিনের আবেদন কার্যতালিকা থেকে বাদ দেন। এসময় আদালত বলেন, যেহেতু তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে কাজেই এ অবস্থায় তাকে জামিন দেওয়ার সুযোগ নেই। অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায় আইনজীবী হলেও তাকে জামিন দেওয়া সমীচীন হবে না।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ৭ জুলাই রাতে রামু উপজেলার মরিচ্যা যৌথ চেকপোস্টে বিজিবির হাতে ১৯ হাজার ৬৫০ পিস ইয়াবাসহ গ্রেফতার হন চাকমারকুল ইউনিয়নের পশ্চিম ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মকতুল হোসেনের ছেলে সাইমন।
ওই রাতেই সাইমনকে আসামি করে মামলা করেন ৩০ বিজিবির হাবিলদার খলিলুর রহমান। মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান রামু থানার পুলিশ পরিদর্শক এসআই মোহাম্মদ আমির হোসেন। পরে আসামি সাইমনকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
সাইমনের ১৬৪ ধারায় দেওয়া জবানবন্দি অনুযায়ী সাইদুলকে মামলার ২ নম্বর আসামি করা হয়। এছাড়া সদরের খরুলিয়া ঝিলংজা ডেইঙ্গাপাড়ার রশিদ আহামদের ছেলে আমিনকে ৩ নম্বর আসামি করে ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
অভিযোগপত্র ও আসামির স্বীকারোক্তি মতে, সাইদুল সিএনজি অটোরিকশা কিনে অন্য কারও নামে এটির মালিকানার কাগজপত্র তৈরি করেন। পরে ওই সিএনজি অটোর মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ইয়াবা পাচার করেন। সাইদুলের কথামতো ওইদিন সাইমন কক্সবাজার সদরে ইয়াবার চালানটি পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। তবে তার আগেই সাইমন বিজিবির হাতে ধরা পড়েন।
১৬ মার্চ সাইদুল সেজে কক্সবাজারের একটি আদালতে আত্মসমর্পণ করেন শাহাজাহান। শাহাজাহান হলেন সাইমনের আপন ভাই। এর আগে সাইদুলের জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি পরিবর্তন করে নিজের ছবি জুড়ে দিয়েছিলেন তিনি। ওইদিন থেকেই শাহাজাহান কক্সবাজার জেলা কারাগারে। বর্তমানে তাকে যে কোনও মূল্যে জামিনে মুক্ত করতে চেষ্টা করছেন ইয়াবা ডিলার সাইদুল।
অভিযোগ রয়েছে, কোটি টাকার বিনিময়ে থানা পুলিশ ও আইনজীবীসহ সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করে তার বদলি আসামি হিসেবে শাহাজাহানকে আত্মসমর্পণ করিয়েছেন সাইদুল। অন্যদিকে টাকার বিনিময়ে এতে সহযোগিতা করেন কক্সবাজার জেলা জজকোর্টের ৩১৫ নম্বর সদস্য আইনজীবী নজিবুল আলম নজীব। তবে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, অন্য সব আসামির মতো শাহাজাহানও আদালতে আত্মসমর্পণ করেছেন। তার কাছে জাতীয় পরিচয়পত্র চাইলে তিনি তা দেখান। জাতীয় পরিচয়পত্রে ছবি পরিবর্তনের বিষয়টি জানতেন না বলে জানান তিনি।
জানা যায়, সাইদুলের অধীনে কক্সবাজারে শতাধিক ইয়াবা বহনকারী রয়েছে। তার ইয়াবার চালান নিয়ে গ্রেফতার হয়ে বর্তমানে কক্সবাজার কারাগারে আছেন ১৩ জন। এদের মধ্যে রয়েছেন-বাদশা মিয়া, তোফায়েল, নুরুল আলম, জসিম উদ্দিন ওরফে পেরাক জসিম, জসিম উদ্দিন এবং শাহাজাহান। এসব আসামিকে কারাগারে দেখভালের দায়িত্বে আছেন পেরাক জসিম। কারাগারের বাইরে থেকে অর্থের জোগান দিচ্ছেন সাইদুল।
মিয়ানমারের নাগরিক ইয়াবা কারবারি নবী হোসেন ও আরসারের আনাগোনা রয়েছে সাইদুলের বাড়িতে। স্থানীয়দের দাবি, রোহিঙ্গা ইয়াবা কারবারিদের ঘাঁটিতে পরিণত হয় তার বাড়ি।
ভয়েস/আআ