শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০৭:১২ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

কক্সবাজারে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের ডামাডোল

এম এ সাত্তার:

দেশে চলমান ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে কক্সবাজার জেলার ৭১ ইউনিয়নের মধ্যে ২১ ইউনিয়নের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। এতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার। নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের কাছে মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ছিল ১৭ অক্টোবর।

রিটার্নিং অফিসারের মনোনয়নপত্র বাছাই ২০ অক্টোবর, বাছাইয়ের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল দায়ের ২১ থেকে ২৩ অক্টোবর, আপিল নিষ্পত্তি ২৪ ও ২৫ অক্টোবর, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ২৬ অক্টোবর, প্রতীক বরাদ্দ ২৭ অক্টোবর। ভোটগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১১ নভেম্বর। সুষ্ঠুভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করতে যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট দপ্তর।

ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে তফসিল ঘোষিত বিভিন্ন ইউনিয়নে বয়ে চলেছে ভোটের গরম হাওয়া। মার্কা নিয়ে প্রার্থীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে কুশল বিনিময় করছেন। হাটে-বাজারে রাস্তা-ঘাটে চায়ের দোকানে প্রার্থীদের নিয়ে চলছে আলোচনা-সমলোচলার ঝড়।

উপজেলার তফসিল ঘোষিত সব ইউনিয়নের প্রতিটি গ্রামে, পাড়ায়-মহল্লায় বিভিন্ন দলের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও মেন্বার প্রার্থীরা নানা রকমভাবে চালাচ্ছেন তাদের গণসংযোগ। বিএনপি, জামায়াত দলীয় প্রতীকে নির্বাচন না করলেও স্বতন্ত্রভাবে অনেকেই নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছেন। তারাও গণসংযোগে জোরালো ব্যস্ত সময় পার করছেন।

সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগেই নতুন নতুন চেয়ারম্যান প্রার্থীরা এলাকার রাস্তা-ঘাটের উন্নয়নসহ দিচ্ছেন নানা প্রতিশ্রুতি। কেহ আবার নির্বাচনের ভিতরে রাস্তার কাজ করবে বলে বেড়াচ্ছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের প্রতিটি ইউনিয়নে রয়েছে প্রায় ৫ থেকে ৭ জন করে চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী। এছাড়াও সদস্য পদ প্রার্থীরাও সাধারণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে দিচ্ছেন উন্নয়নমুখী নানা ধরণের আশ্বাস ও আশার বাণী। চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা তাদের ভোট ব্যাংক বাড়াতে প্রকাশ্যে ও অপ্রকাশ্যে এমনকি নীরবে কাজ করে চলেছেন।

ঘরোয়া বৈঠকসহ স্থানীয় বাজারের চায়ের দোকানে ভিড় জমাচ্ছেন। এলাকার সব চা-স্টলগুলোতে এখন জমজমাট বেচা-বিক্রি চলছে। বিয়ে-বাড়িসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে তাদের পদচারণা বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সেসব অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়ে নিজের পরিচিতি তুলে ধরে দোয়া ও ভোট প্রার্থনা করে নিজেদের অবস্থানের জানান দিচ্ছেন। মাঠ দখলের জন্য বর্তমান নতুন ও সাবেক চেয়ারম্যান ও সদস্য প্রার্থীরা তাদের জয় নিশ্চিত করতে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন নির্বাচনী যুদ্ধে। অনেকে ২/৩ বছর আগে থেকেই নিজেকে জাহির করতেও পিছপা হননি। বিভিন্ন মসজিদ, মন্দির, তাফসিরুল কুরআন মাহফিল, জলসা,ধর্মীয় সভা-সমাবেশ, বিভিন্ন খেলা-ধুলার অনুষ্ঠানগুলোতে পরিচিতি নানা কৌশলে তুলে ধরেছেন।

এদিকে সর্বত্র ভোটারদের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন নিয়ে চলছে চুলচেড়া বিশ্লেষণ। নির্বাচনের কথা শুনে সাধারণ ভোটাররা বিভিন্ন চায়ের দোকানে দিচ্ছেন নির্বাচনী আড্ডা। যেহেতু দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হলেও স্থানীয় নির্বাচনে সে প্রভাব পড়বে না বলে জানিয়েছেন বিভিন্ন ইউনিয়নের বেশিরভাগ ভোটারা।

ইউনিয়ন পর্যায়ে আওয়ামী লীগ ও জাপা (এরশাদ) ও চরমোনাই প্রার্থী চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা দলীয়ভাবে এলাকায় গণসংযোগ চালাচ্ছেন। ভোটারদেরকে দলীয় প্রার্থীকে ভোট দেয়ার আহ্বান কবে প্রত্যকের সাথে করমর্দন ও কোলাকোলি করছেন।

আসন্ন ১১ নভেম্বর ইউপি নির্বাচনে প্রার্থী ও ভোটারেরা চায় উৎসবমুখর ও ভয়-ভীতিহীন পরিবেশ। যাতে তারা নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে এটাই ভোটারদের দাবি।

এ বিষয়ে কথা হয় উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ভোটারদের সাথে। পিএমখালী ইউনিয়নের ভোটার বেদারুল আলম, মোঃ রুবেল আহমেদ, খুরুশকুল ইউনিয়নের ভোটার এনাম মিয়া, শাহ আলম, ঝিলাংজা ইউনিয়নের  ফয়সাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা মার্কা নয়, যোগ্য ও পছন্দের প্রার্থী দেখে নির্ভয়ে ভোট দিতে চাই। তবে এর জন্য চাই ভোটের উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু পরিবেশ।

উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও স্বতন্ত প্রার্থী রজনীগন্ধা প্রতীকের পিএমখালী ইউপির চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ছৈয়দ নূর বলেন, আমরা চাই ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ। যাতে ভয়ভীতিহীন পরিবেশে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন। আশা করছি প্রশাসন নিরপেক্ষ থেকে ভোটের পরিবেশ বজায় রাখতে সচেষ্ট থাকবেন।

জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সহ সভাপতি, বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকারি দলের নৌকা প্রতীকের মনোনীত প্রার্থী খুরুশকুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী শাহ আলম বলেন,  আমরাও চাই ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ। জনসাধারণ যাতে পছন্দের প্রার্থীকে নির্ভয়ে ভোট দিতে পারেন এ ব্যাপারে আমরা তাদেরকে উৎসাহ জোগাব এবং সার্বিকভাবে সহযোগিতা করে যাবো।

কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শিমুল শর্মা বলেন, তফসিল ঘোষণা অনুযায়ী এই উপজেলায় ৫টি ইউনিয়নে ১১ নভেম্বর ভোট গ্রহণ করা হবে। তাই সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। আমি দৃঢ়ভাবে আশা করছি ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভীতিহীন পরিবেশে ভোট দিতে পারবে।

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION