মঙ্গলবার, ০১ Jul ২০২৫, ০২:২২ পূর্বাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

পরিবহণ ভাড়া বৃদ্ধিতে বেড়েছে চালের দাম

ভয়েস নিউজ ডেস্ক:

আন্তর্জাতিক বাজারে চালের দাম নিম্নমুখী। সরকার চাল আমদানিতে শুল্ক কমানোর ফলে গত কয়েক মাসে প্রচুর পরিমাণ চাল আমদানি হয়েছে। একই সঙ্গে বাজারে আসতে শুরু করেছে নতুন চাল। গতবারের তুলনায় ছয় লাখ মেট্রিক টন আমন ধান বেশি উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ। সরকারি গুদামে এখন ১৪ লাখ টনের বেশি খাদ্যশস্য মজুত রয়েছে। তারপরও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় বেড়েছে ট্রাক ভাড়া। এ অজুহাতে দেশে কেজিতে চালের দাম প্রকারভেদে এক থেকে দুই টাকা বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে নতুন চাল আসতে শুরু করেছে। নতুন চাল আসলে বাজারে দাম একটু কমে। কিন্তু ডিজেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় চালের সরবরাহ খরচ বেড়েছে। ফলে এ সময়টাতে দাম যতটুকু কমার কথা ছিল ততটা কমছে না।

তাদের হিসাবে, ডিজেলের দাম বাড়ায় কেজিপ্রতি ২৬ পয়সার ওপরে সরবরাহ খরচ বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খোলা বাজারে চাল প্রতি কেজি দেড় থেকে দুই টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চাল আনতে ট্রাকপ্রতি ভাড়া বেড়েছে গড়ে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। এর প্রভাবেই বেড়েছে চিকন-মোটা সব চালের দাম। জ্বালানির প্রভাবে চাল পরিবহন খরচ বেড়েছে ২৮ শতাংশ। ডিজেলের দাম না বাড়লে আমনের এই মৌসুমে পাইকারি ও মিল পর্যায়ে কেজিতে চালের দাম ৫০ থেকে ৬০ পয়সা কমতো। কিন্তু এবার তা কমছে না।

ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য বলছে, এখন খুচরা বাজারে যে দামে চাল বিক্রি হচ্ছে তা আগের বছরের তুলনায় ৭ শতাংশ পর্যন্ত বেশি। অন্যান্য বছর নতুন চাল বাজারে আসার আগে পুরনো মজুদ চাল বিক্রি বাড়িয়ে গুদাম খালি করতে দেখা যেত ব্যবসায়ীদের। এতে দাম কমত। এ বছর তেমন কর্মকাণ্ড দেখা যাচ্ছে না।

শনিবার (২৭ নভেম্বর) রাজধানীর পাইকারি ও খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা বাজারে জাত ও মানভেদে প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬২ টাকায়, নাজিরশাইল প্রতিকেজি ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, পাইজাম ৪৬ থেকে ৪৮ ও লতা ৫৫-৫৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ২৮ নম্বর চাল ৫০ থেকে ৫২ টাকা, স্বর্ণা ৪১ থেকে ৪৩ টাকায়। এসব চাল একদিন আগেও এক টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। আর ১৫ আগে ৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছিলো।

পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি মিনিকেট মানভেদে ৫৩, ৫৬,৫৯ টাকা। যা একদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৫২,৫৫,৫৮ টাকা।

আর গত ১৫ দিন আগে ছিলো ৫ লাখ ৫৫ হাজার ৮৬১ টাকা। নাজিরশাইল ৫ লাখ ৭৬ হাজার ৬২ টাকা। এক দিন আগে এক টাকা কমে বিক্রি হয়েছে। আর ১৫ দিন আগে ছিলো ৬ লাখ ৬ হাজার ৩৬৫ টাকা। ২৮ চাল প্রতিকেজি ৪৬ থেকে ৪৮ টাকা, হাস্কী নাজির ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫০ টাকা। কাজল লতা ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। পাইজাম ৪৩ থেকে ৪৪ টাকা। এক দিন আগে বিক্রি হয়েছে এক কমে। ১৫ দিন আগে ছিলো এর থেকেও কেজিতে ৩ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছিলো।

বাবুবাজারের পাইকারি আড়তের রশিদ রাইস এজেন্সির সত্ত্বাধিকারী আব্দুল রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, এখন চালের ভরা মৌসুম, ঘরে ঘরে নবান্ন উৎসব চলছে। অপর দিকে সরকার ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণার পড় থেকে পরিবহণ ভাড়া বেড়ে গেছে অনেক। এরফলে গত ২০ দিনে প্রতি কেজিতে এক দুই টাকা বেড়েছে।

বাবুবাজারের পাইকারি বাজারের দয়াল ভাণ্ডারের ম্যানেজার আনিসুল হক বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে বাজারে নতুন চাল (আমন) উঠেছে৷ তারপরও চালের দাম চড়া। মূল কারণ ডিজেলের দাম বৃদ্ধি। কৃষি জমি চাষ ও সেচের জন্য ডিজেল প্রয়োজন। এই মুহূর্তে তার প্রভাব বাজারে না পড়লেও পরিবহণ ভাড়া বেড়েছে অনেক। আগে একটি ট্রাক আসতে ভাড়া পড়তো ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এখন সে ভাড়া দিতে হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। তার প্রভাবে চালের দাম এক দুই টাকা বেড়েছে। কারণ অতিরিক্ত ভাড়াতো আমরা পকেট থেকে দেবো না। সেটা ভোক্তাদেরই দিতে হবে।

রায়সাহেব বাজারে খুচরা চালের ব্যবসায়ী মুক্তার হোসেন বলেন, সরকার ডিজেলের দাম বৃদ্ধির কারণে পরিবহণ ব্যয় বেড়ে গেছে। এর ফলে চালের দাম কেজিতে ১ থেকে ২ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।

এ প্রসঙ্গে সূত্রাপুর বাজারের চাল বিক্রেতা মো. আনিস ও আবুবক্কর বাংলানিউজকে জানান,

আমরা পাইকারি বাজার থেকে বেশি দামে চাল কিনে বেশি দামে বিক্রি করি। আড়ৎদারদের কাছে দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে বলে ডিজেলের দাম বৃদ্ধির ফলে পরিবহণ ভাড়া বেড়েছে। যার প্রভাবে চালের দামও বেড়েছে।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, চলতি বছর এক কোটি ৫০ লাখ ৪৬ হাজার মেট্রিক টন আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে, যা বছরের মোট উৎপাদিত ধানের ৩৯ শতাংশ। গত বছর দেশে মোট ধান উৎপাদিত হয়েছিল তিন কোটি ৮৬ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে আমন ধান ছিল এক কোটি ৪৪ লাখ টন। সে হিসেবে এবার ছয় লাখ টন বাড়তি আমন ধান উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION