শনিবার, ২৮ Jun ২০২৫, ০৩:৪৪ অপরাহ্ন
ভয়েস নিউজ ডেস্ক:
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে নাফ নদের বাঁধ মেরামত ও পুনর্নির্মাণ কাজের জন্য অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ারের নেতৃত্বে একটি দল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে গেছে। এ দলে সচিবের স্ত্রী ও ছেলেও রয়েছেন। সরকারি অফিস আদেশে এ তথ্য রয়েছে।ওই আদেশ অনুযায়ী, সচিবের নেতৃত্বাধীন দলটি ৫-১৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ওই দুটি দেশ সফর করবে।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বেশ কয়েক বছর আগে নাফ নদে পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি বাঁধ নির্মাণ করেছিল। এর মধ্যে বাঁধের অনেক স্থানে ভেঙে গেছে। বাঁধটি মেরামত ও পুনর্নির্মাণের জন্য নেওয়া ‘রিহ্যাবিলিটেশন অব পোল্ডার’ (নদী বা সমুদ্র থেকে জেগে ওঠা নিচু জমি) প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। সচিবের নেতৃত্বাধীন দলটির বিদেশ ভ্রমণসংক্রান্ত অফিস আদেশে বলা হয়, অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে বাঁধ সংস্কারের কাজ দেখবেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব কবির বিন আনোয়ার, কবির বিন আনোয়ারের একান্ত সচিব (পিএস) স ম আজাহারুল ইসলাম, পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজার জেলার সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী (বর্তমানে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী, সিলেট) প্রবীর কুমার গোস্বামী। এ ছাড়া সরকারি এ সফরে সচিবের স্ত্রী তৌফিকা আহমেদ ও ছেলে সামাদ বিন কবিরও থাকবেন। তবে সচিবের স্ত্রী-সন্তানের ভ্রমণকালীন খরচ পরিবারের লোকজন বহন করার কথা উল্লেখ রয়েছে অফিস আদেশে।
ভ্রমণের শর্তানুযায়ী, অভিজ্ঞতা অর্জনের এই ভ্রমণের খরচ ‘রিহ্যাবিলিটেশন অব পোল্ডার’ প্রকল্প থেকে বহন করা হবে। ভ্রমণে অর্জিত অভিজ্ঞতা দেশে আসার ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন আকারে মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে।
৯ দিনের এ ভ্রমণে সচিবের সঙ্গে থাকা কক্সবাজারের সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী প্রবীর কুমার গোস্বামীও মাস দেড়েক আগে পদোন্নতি নিয়ে সিলেটে বদলি হয়েছেন। এ ছাড়া বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের ৩৪তম ব্যাচেরের কর্মকর্তা সচিবের পিএস স ম আজহারুল ইসলামও এ প্রকল্পের কাজে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নন। এ ধরনের একটি ব্যয়বহুল ভ্রমণ থেকে অভিজ্ঞতা অর্জন করে সংশ্লিষ্টরা কী কাজ করবেন তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
গত ২ ফেব্রুয়ারি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের আরেকটি অফিস আদেশে বলা হয়, ‘পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আগামী ৫-১৪ ফেব্রুয়ারি-২০২২, সময়ে সরকারি কাজে যুক্তরাজ্য সফর করবেন। বিদেশে অবস্থানকালে মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মিজানুর রহমান পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন।’ আদেশটিতে স্বাক্ষর করেছেন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব হাসানুজ্জামান।
সচিবের দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমান (অতিরিক্ত সচিব) গতকাল রবিবার বলেন, ‘উনি আমাকে রুটিন ওয়ার্ক করার দায়িত্ব দিয়ে গেছেন। আগামীকাল সোমবার (আজ) আসার কথা রয়েছে। কোন প্রকল্পে বিদেশ গেছেন আমি কিছু বলতে পারছি না। আমি এই মন্ত্রণালয়ে নতুন এসেছি।’
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কক্সবাজার জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী তানজির সাইফ বলেন, ‘বাঁধ মেরামত বা সংস্কার নামের এ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ অনেক টাকা। সেখানে বেশ কিছু কম্পোনেন্ট (অংশ) আছে। এই প্রকল্প থেকে কে বা কারা বিদেশ গেছেন আমি ঠিক বলতে পারছি না।’
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ বাঁধের মেরামত বা সংস্কারের প্রয়োজন হওয়ায় ৪১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। চলমান এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে ২০২৩ সালের জুন মাসে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের এ প্রকল্পে ৬১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার বাঁধ পুনর্নির্মাণ, ৩৩টি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো নির্মাণ ও ৪৮টি অপসারণ, ৬টি আরসিসি বক্স আউটলেট নির্মাণ, ২৫ কিলোমিটার খাল পুনঃখনন, ৫১ দশিমক ৭৩ কিলোমিটার বিটুমিন রোড কার্পেটিং, ২টি সেতু ও একটি কালভার্ট নির্মাণ, ২০টি ‘বে’ নির্মাণ ও ১৮ দশমিক ৫৪ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীমের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।সূত্র: দেশ রূপান্তর।
ভয়েস/আআ